বুলডোজার দিয়ে আ.লীগে নেতাদের বাড়ি ভাঙার হুমকি
Published: 7th, February 2025 GMT
বুলডোজার দিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আখিরুজ্জামান মাসুম।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এই হুমকি দেন।
ফেসবুক পোস্টে আখিরুজ্জামান লেখেন, “ভাঙ্গুড়ায় আওয়ামী লীগের যেসব দালাল এখনো ফেসবুকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলছে, তাদের বাড়ি বুলডোজার কর্মসূচির আওতায় পড়বে এবং তাদের দেখামাত্রই প্রতিহত করা হবে।”
আরো পড়ুন:
আ.
যে কোনো মূল্যে স্বৈরাচারের বিচার করতে হবে: তারেক রহমান
এদিকে, উপজেলা কৃষক দল সভাপতির ফেসবুক পোস্ট ঘরে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর ভেতরেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবদল নেতা আবু সায়েম সরকার নিজের ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জন মানুষের জন্য রাজনীতি করে। মানুষের ভোগান্তি হয় এমন কোনো কাজ বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠন করে না। যদি কেউ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করার উসকানিমূলক কথা বলেন, সেটা তার ব্যক্তি দায়।বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল (বিএনপি) এমন জনবিরোধী কাজ সমর্থন করে না।”
কখন শুরু হবে বুলডোজার কর্মসূচি এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আখিরুজ্জামান মাসুম জানান, তার ফেসবুক স্ট্যাটাস মূলত আওয়ামী লীগের সমর্থকদের জন্য একটি বার্তা। তিনি বলেন, “যদি তারা ফেসবুকে এমন কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকেন, তবে প্রতিহত করা হবে।”
আপনার এই স্ট্যাটাসের কারণে যদি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে তখন আশপাশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করবেন জানতে চাইলে আখিরুজ্জামান মাসুম বলেন, “যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।”
এ বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আক্তার বলেন, “যে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ আওয় ম ল গ র ফ সব ক উপজ ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
বছরে ৬ লাখ অপরিণত শিশুর জন্ম
দেশে বছরে গড়ে জন্ম নিচ্ছে প্রায় ৬ লাখ অপরিণত (প্রিম্যাচিওর) শিশু। জন্মের সময় গর্ভকাল পূর্ণ না হওয়ায় এসব নবজাতকের ঝুঁকি থাকে নানা জটিলতায় পড়ার, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কাও থাকে বেশি। তাই নবজাতকদের মৃত্যু হ্রাসে অপরিণত নবজাতক জন্ম প্রতিরোধে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার শহীদ ডা. মিল্টন হলে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিওন্যাটোলজি বিভাগ ও সেভ দ্যা চিলড্রেন আয়োজিত সভায় এই তথ্য জানানো হয়।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাদেকা চৌধুরী মনি। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইসমত জাহান। তিনি বলেন, মা ও অপরিণত নবজাতকদের জীবন রক্ষাকারী প্রকল্প সেভিং উইমেন এন্ড প্রিমেচিউর বেবিজ বা সোয়াপের মাধ্যমে দেশের পাচঁটি হাসপাতাল মা ও নবজাতক সেবা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৬৫ হাজার গর্ভবতী মা ও ৮৭ হাজার নবজাতককে সেবা পেয়েছে। দেড় হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো ভায়ু বাবল সিপ্যাপ, ফ্যামিলি সেন্টার কেয়ার, ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার, নিওনেটালি লাইভ ইত্যাদিকে সফলভাবে প্রয়োগ করে নবজাতকদের জীবন রক্ষায় ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে।
বিএমইউর নিওনাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশে বছরে ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। সেই হিসেবে বছরে অপরিণত ৬ লাখ শিশু জন্মায়। নবজাতকের মৃত্যুহার হ্রাস পেলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি হাজার জীবিত জন্মে বর্তমানে নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জন থেকে ১২ জনে কমিয়ে আনা। যদিও এই প্রকল্পের কার্যক্রমসহ সামগ্রিক প্রচেষ্টায় নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জনে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
বিএমইউর ফিটোম্যাটার্নাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তাবাসসুম বলেন, নবজাতকের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো অপরিণত নবজাতকের জন্ম দান। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। গত ১০ বছর ধরে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। এটি প্রতিরোধে আমাদের উদ্যোগ নেই। কেনো কমানো যাচ্ছে না এবিষয়েও কোনো গবেষণা হয় না। তবে সচেতনতা, প্রসূতি সেবা এবং মাতৃস্বাস্থ্য কার্যক্রম জোরদার করলে এ সমস্যা অনেকাংশে কমানো সম্ভব। অপরিণত শিশুর জন্মের পেছনে রয়েছে মাতৃস্বাস্থ্যের অবনতি, অপুষ্টি, সময়মতো প্রসবপরিচর্যার অভাব, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও প্রসবকালীন জটিলতা। এ ছাড়া ধূমপান, অনিয়ন্ত্রিত ওষুধ সেবন এবং অল্প বয়সে গর্ভধারণও অন্যতম কারণ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, সোয়াপের মাধ্যমে নবজাতকদের পরিবার কেন্দ্রিক চিকিৎসা (ফ্যামিলি সেন্টারড কেয়ার-এফসিসি) মা ও শিশুর জীবন রক্ষায় বিরাট অবদান রাখছে। এই পদ্ধতিকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বৃহৎ আকারে কাজে লাগাতে পারলে সমগ্র স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর গবেষণা ও উন্নয়ন অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান।