বুলডোজার দিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আখিরুজ্জামান মাসুম।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এই হুমকি দেন। 

ফেসবুক পোস্টে আখিরুজ্জামান লেখেন, “ভাঙ্গুড়ায় আওয়ামী লীগের যেসব দালাল এখনো ফেসবুকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলছে, তাদের বাড়ি বুলডোজার কর্মসূচির আওতায় পড়বে এবং তাদের দেখামাত্রই প্রতিহত করা হবে।”

আরো পড়ুন:

আ.

লীগ নেতাদের সম্পত্তিতে হামলা না চালানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

যে কোনো মূল্যে স্বৈরাচারের বিচার করতে হবে: তারেক রহমান

এদিকে, উপজেলা কৃষক দল সভাপতির ফেসবুক পোস্ট ঘরে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর ভেতরেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। 

উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবদল নেতা আবু সায়েম সরকার নিজের ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জন মানুষের জন্য রাজনীতি করে। মানুষের ভোগান্তি হয় এমন কোনো কাজ বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠন করে না। যদি কেউ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করার উসকানিমূলক কথা বলেন, সেটা তার ব্যক্তি দায়।বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল (বিএনপি) এমন জনবিরোধী কাজ সমর্থন করে না।”

কখন শুরু হবে বুলডোজার কর্মসূচি এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আখিরুজ্জামান মাসুম জানান, তার ফেসবুক স্ট্যাটাস মূলত আওয়ামী লীগের সমর্থকদের জন্য একটি বার্তা। তিনি বলেন, “যদি তারা ফেসবুকে এমন কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকেন, তবে প্রতিহত করা হবে।”

আপনার এই স্ট্যাটাসের কারণে যদি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে তখন আশপাশের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করবেন জানতে চাইলে আখিরুজ্জামান মাসুম বলেন, “যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।”

এ বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আক্তার বলেন, “যে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে।” 

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ আওয় ম ল গ র ফ সব ক উপজ ল ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ