চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু হতে বাকি আর ১২ দিন। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, টুর্নামেন্ট নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ ততই বাড়ছে। দলগুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করাও শুরু হয়ে গেছে। সেমিফাইনাল ও ফাইনালে উঠবে কারা, কোন দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কোন দল চমক দেখাতে পারে—এমন ভবিষ্যদ্বাণীও করছেন কেউ কেউ।

শোয়েব আখতার তাঁদেরই একজন। ক্রিকেট ইতিহাসের দ্রুততম এই বোলারের মতে, ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত–পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ ছাড়া আফগানিস্তান চমক দেখিয়ে সেমিফাইনালে উঠতে পারে বলে মনে করছেন শোয়েব। তবে চতুর্থ সেমিফাইনালিস্ট কারা হতে পারে, তা জানাননি।

অনেক জল ঘোলার পর ‘হাইব্রিড মডেলে’র চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু হচ্ছে ১৯ ফেব্রুয়ারি। মূল আয়োজক শোয়েব আখতারের দেশ পাকিস্তান হলেও ভারতের ম্যাচগুলো হবে দুবাইয়ে।

‘এ’ গ্রুপে স্বাগতিক পাকিস্তানের সঙ্গে আছে বাংলাদেশ, ভারত ও নিউজিল্যান্ড। তার মানে, গ্রুপ পর্বেই একবার ভারত–পাকিস্তান লড়াই দেখা যাবে। দুবাইয়ে ম্যাচটি হবে ২৩ ফেব্রুয়ারি। তবে শোয়েব ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ফাইনালেও খেলতে পারে রোহিত শর্মা ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল।

পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে ৪৯ বছর বয়সী শোয়েব বলেছেন, ‘আমার বিশ্বাস, ২৩ ফেব্রুয়ারি ভারতকে হারিয়ে দেবে পাকিস্তান। এই দুই দলের ফাইনালেও দেখা হওয়া উচিত। (গ্রুপ পর্বে) ভারত ও নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারলে পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অর্ধেক কাজ হয়ে যাবে।’

শোয়েবের এই কথার অর্থ, গ্রুপের আরেক দল বাংলাদেশকে তিনি পাকিস্তানের জন্য চ্যালেঞ্জ মনে করছেন না এবং শেষ চারেও দেখছেন না।

‘বি’ গ্রুপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়া–ইংল্যান্ডের সঙ্গী দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তান। এবারই প্রথম চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে চলা আফগানরা কাগজে–কলমে গ্রুপের অন্য তিন দলের চেয়ে পিছিয়ে থাকার কথা। কিন্তু শোয়েব আখতার রশিদ–নবীদের সেমিফাইনালে ওঠার দারুণ সম্ভাবনা দেখছেন, ‘আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরা যদি পরিপক্বতা ধরে রাখতে পারে, তাহলে তারা অপ্রত্যাশিত কিছু (অঘটন) করে ফেলতে পারে।’

ভারতে অনুষ্ঠিত ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও দারুণ খেলেছে আফগানিস্তান। পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কাকে তারা হারিয়ে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিততে জিততে হেরে গেছে। নয়তো সেবারই সেমিফাইনালে উঠতে পারত।

অল্পের জন্য ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্নপূরণ না হলেও বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি আফগানদের। গত বছর ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়ে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় তারা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ য় ব আখত র আফগ ন স ত ন

এছাড়াও পড়ুন:

মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।

মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।

জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।

এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।

ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।

আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগে

ফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ