চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী শোয়েব আখতারের
Published: 7th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু হতে বাকি আর ১২ দিন। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, টুর্নামেন্ট নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ ততই বাড়ছে। দলগুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করাও শুরু হয়ে গেছে। সেমিফাইনাল ও ফাইনালে উঠবে কারা, কোন দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কোন দল চমক দেখাতে পারে—এমন ভবিষ্যদ্বাণীও করছেন কেউ কেউ।
শোয়েব আখতার তাঁদেরই একজন। ক্রিকেট ইতিহাসের দ্রুততম এই বোলারের মতে, ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত–পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ ছাড়া আফগানিস্তান চমক দেখিয়ে সেমিফাইনালে উঠতে পারে বলে মনে করছেন শোয়েব। তবে চতুর্থ সেমিফাইনালিস্ট কারা হতে পারে, তা জানাননি।
অনেক জল ঘোলার পর ‘হাইব্রিড মডেলে’র চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু হচ্ছে ১৯ ফেব্রুয়ারি। মূল আয়োজক শোয়েব আখতারের দেশ পাকিস্তান হলেও ভারতের ম্যাচগুলো হবে দুবাইয়ে।
‘এ’ গ্রুপে স্বাগতিক পাকিস্তানের সঙ্গে আছে বাংলাদেশ, ভারত ও নিউজিল্যান্ড। তার মানে, গ্রুপ পর্বেই একবার ভারত–পাকিস্তান লড়াই দেখা যাবে। দুবাইয়ে ম্যাচটি হবে ২৩ ফেব্রুয়ারি। তবে শোয়েব ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ফাইনালেও খেলতে পারে রোহিত শর্মা ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল।
পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে ৪৯ বছর বয়সী শোয়েব বলেছেন, ‘আমার বিশ্বাস, ২৩ ফেব্রুয়ারি ভারতকে হারিয়ে দেবে পাকিস্তান। এই দুই দলের ফাইনালেও দেখা হওয়া উচিত। (গ্রুপ পর্বে) ভারত ও নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারলে পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অর্ধেক কাজ হয়ে যাবে।’
শোয়েবের এই কথার অর্থ, গ্রুপের আরেক দল বাংলাদেশকে তিনি পাকিস্তানের জন্য চ্যালেঞ্জ মনে করছেন না এবং শেষ চারেও দেখছেন না।
‘বি’ গ্রুপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়া–ইংল্যান্ডের সঙ্গী দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তান। এবারই প্রথম চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলতে চলা আফগানরা কাগজে–কলমে গ্রুপের অন্য তিন দলের চেয়ে পিছিয়ে থাকার কথা। কিন্তু শোয়েব আখতার রশিদ–নবীদের সেমিফাইনালে ওঠার দারুণ সম্ভাবনা দেখছেন, ‘আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরা যদি পরিপক্বতা ধরে রাখতে পারে, তাহলে তারা অপ্রত্যাশিত কিছু (অঘটন) করে ফেলতে পারে।’
ভারতে অনুষ্ঠিত ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও দারুণ খেলেছে আফগানিস্তান। পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কাকে তারা হারিয়ে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিততে জিততে হেরে গেছে। নয়তো সেবারই সেমিফাইনালে উঠতে পারত।
অল্পের জন্য ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্নপূরণ না হলেও বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি আফগানদের। গত বছর ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়ে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় তারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ য় ব আখত র আফগ ন স ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে মাদকের একটি মামলায় আসামি সেজে আদালতে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যাওয়া এক যুবককে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত। তাঁর নাম মো. রাকিব। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামি মো. সুমনের হয়ে আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন রাকিব। আদালতের আদেশে ১ জুলাই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে আটক রাকিবকে জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আসামিকে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট নগরের আকবর শাহ থানার কৈবল্যধাম এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে অভিযান চালিয়ে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে র্যাব, যার মূল্য ৪ লাখ টাকা। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় গাড়িচালক রাহাত ইসলামকে। পালিয়ে যান চালকের সহকারী (হেলপার) মো. সুমন। এ ঘটনায় র্যাব কর্মকর্তা বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এতে রাহাত ইসলাম ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়।
আদালত পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পলাতক আসামি সুমনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরই মধ্যে সুমনের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে সুমন নিজেকে কারামুক্ত রাখতে তাঁর পরিবর্তে নোয়াখালীর রাকিবকে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় ১ জুলাই। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা শুনানি শেষে আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। সুমনের হয়ে রাকিব আত্মসমর্পণের সময় তাঁর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ওয়াহিদ মুরাদ।
আদালতে একজনের পরিবর্তে আরেকজন আত্মসমর্পণের বিষয়টি ধরা না পড়লেও কারাগারে গিয়ে ধরা পড়ে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে (তথ্যভান্ডার) ভোটারদের আঙুলের ছাপ সংরক্ষিত আছে। এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে আঙুলের ছাপে ধরা পড়েছে অনেক বন্দীর আসল পরিচয়। এসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের জুলাই পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আসা ১৬ জনের আঙুলের ছাপে শনাক্ত করা হয়।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত থেকে কারাগারে আসা প্রত্যেক নতুন আসামির আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। সেখানে আসামির জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা আসল পরিচয় উঠে আসে। ইকবাল হোসেন আরও বলেন, ‘সুমনের হয়ে কারাগারে আসা রাকিব স্বীকার করেছেন তিনি মাদক মামলার প্রকৃত আসামি নন। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি সুমন সেজেছেন। তাঁকে বলা হয়েছে, দ্রুত কারাগার থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হবে। তাই তিনি রাজি হয়েছেন। বিষয়টি চিঠি দিয়ে আদালতকে জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে ‘আয়নাবাজি’, ধরা পড়েছে আঙুলের ছাপে০৮ নভেম্বর ২০২৩কারাগার থেকে চিঠি পাওয়ার পর মামলা করার নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে আসামিকে আত্মসমর্পণকারী আইনজীবী ওয়াহিদ মুরাদের কাছে কারণ ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। আদালতের প্রসিকিউশন শাখার আকবর শাহ থানার জিআরও সাইদুর রহমান বাদী হয়ে গত রোববার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় মো. রাকিব ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়। সুমন এখনো পলাতক।