ফেব্রুয়ারি ৭ তারিখ থেকে ১৪ তারিখ পর্যন্ত ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহ। ভালোবাসা মানের প্রিয় মানুষের হৃদয়ের চাওয়া-পাওয়াকে প্রাধান্য দেওয়া। কিন্তু নিজের হৃদয়ের যত্ন নিচ্ছেন তো? হৃদয় বা হার্ট ভালো রাখতে কি কি করণীয় সে বিষয়ে রাইজিংবিডিকে বিস্তারিত জানিয়েছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মরত ডা. মাসুদা পারভীন মিনু।

তিনি বলেন, ‘‘হার্ট বা হৃদযন্ত্র আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ভ্রূণাবস্থা থেকে শুরু করে আমৃত্যু এটি শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ করে। হার্টের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া আমাদের সুস্থ জীবনযাপনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। আধুনিক জীবনে খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রা, মানসিক চাপ এবং শরীরচর্চার অভাবের কারণে হৃদরোগের সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই হার্ট সুস্থ রাখার জন্য কিছু নিয়মিত অভ্যাস মেনে চলা খুবই প্রয়োজন।’’

মাসুদা পারভীন মিনুর পরামর্শ—
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা: খাদ্যাভ্যাসের সাথে হার্টের সম্পর্ক গভীর। প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত লবণ, চর্বি, ফাস্ট ফুড এবং চিনি খাওয়ার ফলে কোলেস্টেরল বাড়তে পারে, যা হৃদরোগের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত।  এর জন্য ফল, সবজি, শস্যজাতীয় খাবার, মাছ, বাদাম এবং কম চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ ও সয়া, হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

আরো পড়ুন:

ভারতীয় হাসপাতালে বাংলাদেশি পোস্টার, তুমুল বিতর্ক

প্রেমের জন্য ভালো চকলেট, স্বাস্থ্যের জন্য ভালো তো?

শারীরিক কার্যক্রম ও ব্যায়াম: নিয়মিত শারীরিক কসরত হার্টকে শক্তিশালী ও সুস্থ রাখে। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম বা হাঁটাচলা করা উচিত। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং হার্ট অ্যাটাক এর ঝুঁকি কমায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত ওজন বা মোটা হওয়া হৃদরোগের অন্যতম কারণ। তাই খাবার ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এটি কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

তামাক এবং মদ্যপান পরিহার করা: তামাক/সিগারেট হার্টের ধমনীর মধ্যে চর্বি জমিয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। মদ্যপানও রক্তচাপ বাড়ায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

মানসিক চাপ কমানো: মানসিক চাপের কারণে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে, যা হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। নিয়মিত যোগব্যায়াম বা শখের কাজ করা মানসিক চাপ কমানোর জন্য উপকারী হতে পারে।

পর্যাপ্ত ঘুম: হার্ট সুস্থ রাখতে ঘুমের গুরুত্বও অপরিসীম। দিনে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ভালোভাবে ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের পূর্ণ বিশ্রাম প্রদান করে এবং হৃদযন্ত্রকে পুনরায় শক্তি ফিরে পেতে সাহায্য করে।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: হৃদরোগের ঝুঁকি চিহ্নিত করার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি। রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা হার্টের সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। হৃদরোগকে নীরব ঘাতক বলা হয়, ত্রিশোর্ধ সকল কেই নিয়মিত চেক আপের মধ্যে থাকা উচিত। এ ব্যপারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরনাপন্ন হয়ে নিজের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা জরুরি।

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ দর গ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি

গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের 

এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ। 

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।” 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, ‍“কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ