যতদিন ‘ডেভিল’ থাকবে ততদিন অপারেশন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 12th, February 2025 GMT
যতদিন ডেভিল থাকবে ততদিন ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ চলবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ বুধবার দুপুরে গাজীপুরের সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪৫তম জাতীয় সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এর সফলতা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, জনগণই এ সম্পর্কে ভালো বলতে পারবেন।
অভিযানের সময় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র জব্দের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগ্নেয়াস্ত্র জব্দের পরিমাণ প্রত্যাশা অনুযায়ী নয়, তবে সামনের দিনগুলোতে তা বাড়বে। তিনি বলেন, আপনারা যতটা আশা করেছিলেন, ততটা নয়। তবে, জব্দের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়বে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দেশ গড়ায় আনসার বাহিনীর ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তারা গ্রামগঞ্জে সব জায়গায় কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সারাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে তারা অংশগ্রহণ করছে। ৫ আগস্টের পর অনেকেই নিজ দায়িত্ব থেকে পিছপা হলেও আনসার বাহিনী তাদের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়নি। সেজন্য আমাদের সবার আনসার বাহিনীকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আনসার বাহিনীর যৌক্তিক দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে অযৌক্তিক দাবিগুলো বিবেচনা করা হবে না।
এর আগে সকালে, উপদেষ্টা গাজীপুরের সফিপুরে অবস্থিত আনসার-ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির ৪৫তম জাতীয় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে তিনি আনসার ও ভিডিপি’র ১৮ জন কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং অন্যান্য পদমর্যাদার সদস্যদের তাদের প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পদক প্রদান করেন। বাহিনীর কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ মোট ১৫৬ জনকে সেবা ও সাহসিকতা বিভাগে পদক প্রদান করা হয়েছে।
পরে, উপদেষ্টা আনসার একাডেমি প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করেন, একটি ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন এবং কুটির শিল্প প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
সূত্র: বাসস
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আনস র ব হ ন স বর ষ ট র আনস র ও উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।