পতৌদির ‘স্বপ্নের রানি’ থেকে বিরাট-আনুশকার ‘ওয়াদা’
Published: 14th, February 2025 GMT
ক্রিকেটাররা আগে নায়িকাদের প্রেমে পড়েন, নাকি নায়িকারা আগে ক্রিকেটারদের, এটা নিয়ে গবেষণা হতে পারে। গবেষণার ফল যা-ই হোক, এই দুইয়ের মধ্যে যে একটা অমোঘ আকর্ষণ কাজ করে, তাতে সন্দেহ নেই। যুগ যুগ ধরে ক্রিকেটার আর নায়িকাদের অজস্র সফল-ব্যর্থ প্রেম এর সাক্ষী। ২২ গজের সঙ্গে রুপালি পর্দার প্রেমের গল্প নিয়ে ভালোবাসা দিবসের এ আয়োজন—পতৌদির নবাবের ‘স্বপ্ন কি রানি’
অক্সফোর্ডফেরত মনসুর আলী খান পতৌদির প্রেমে না পড়ার কোনো কারণ ছিল না নারীদের কাছে। সুপুরুষ, ভোপালের নবাব পরিবারের ছেলে, হিন্দি-ইংরেজি-আরবি-ফ্রেঞ্চ ভাষায় পারদর্শী এবং মাত্র ২১ বছর বয়সে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক!
কিন্তু সেই পতৌদি কিনা নিজেই প্রেমে পড়ে গেলেন বলিউড অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরের!
শুরুটা সম্ভবত ১৯৬৫ সালের দিকে। দিল্লিতে সিনেমার শুটিংয়ে গিয়েছিলেন শর্মিলা। এক বন্ধুর সূত্রে সেখানেই পরিচয় পতৌদির সঙ্গে। বিকিনি পরা প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী হিসেবে দর্শক তাঁকে ‘অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস’ ছবিতে দেখেছেন আরও দুই বছর পর। তত দিনে সত্যজিতের ‘অপুর সংসার’ আর শক্তি সামন্তের ‘কাশ্মীর কি কলি’ করে বিখ্যাত হয়ে গেছেন শর্মিলা।
তবে ভারতের অধিনায়ক হয়েও শর্মিলার মন পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে পতৌদির। চার বছর অপেক্ষার পর বিয়ের জন্য রাজি করাতে পারেন শর্মিলাকে। ১৯৬৯ সালের নভেম্বরে রাজেশ খান্নার সঙ্গে ‘আরাধনা’ ছবিতে অভিনয় করে ‘রূপ তেরা মাস্তানা’ দিয়ে ভারত কাঁপিয়ে দিলেন শর্মিলা, পরের মাসেই ‘স্বপ্ন কি রানি’কে ঘরে তুললেন পতৌদি।
সহজ ছিল না সেই বিয়েও।
পিতা ও মাতা—দুই সূত্রেই শর্মিলা জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির মেয়ে। শর্মিলার দাদি ললিতা ছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড়দা দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতনি। আবার বিশ্বকবির দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথের ভাই গিরীন্দ্রনাথের ছেলে ছিলেন গুণেন্দ্রনাথ। তাঁর ছেলে গগনেন্দ্রনাথের পুত্র কণকেন্দ্রনাথের দৌহিত্রী হলেন শর্মিলা ঠাকুর।
শর্মিলার সনাতন বাঙালি হিন্দু পরিবার প্রথমে রাজি হয়নি অবাঙালি মুসলমান ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে। ওদিকে নবাব পরিবার আবার রাজি ছিল না বলিউডের অভিনেত্রীকে নিজেদের পুত্রবধূ করতে। কিন্তু পতৌদি আর শর্মিলা এসব পাত্তা দেননি একেবারেই। আয়েশা সুলতানা নাম নিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন শর্মিলা, বিয়ে করেন পতৌদিকে।
মনসুর আলী খান পাতৌদি ও শর্মিলা ঠাকুর.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।
এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”
তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস