অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আজ শনিবার কাজ শুরু করবে। এর অংশ হিসেবে আজ বিকেলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ বৈঠক ডাকা হয়েছে। বেলা তিনটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে। তারা আরও জানিয়েছে, অধ্যাপক ইউনূস বৈঠকে বক্তব্য দেবেন।

এদিকে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ইতিমধ্যে বৈঠকের আমন্ত্রণ পেয়েছে। বৈঠকে তারা অংশ নেবে। বিএনপি সূত্র জানায়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেবে।

সরকারি একটি সূত্র জানিয়েছে, এর আগে নানা বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যেসব দলের বৈঠক হয়েছে, ওই সব দলই আজকের বৈঠকে আমন্ত্রণ পেয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই বৈঠক ধারাবাহিকভাবে চলবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বৈঠকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ পেয়েছেন এবং অংশ নেবেন।

এদিকে গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মতবিনিময়ে অংশ নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনের মতবিনিময়ে অংশ নিতে তাঁরা আমন্ত্রণ পেয়েছেন। তাঁদের প্রতিনিধিদল সভায় অংশ নেবে।

বিএনপি সূত্র জানায়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেবে।

এদিকে গতকাল শিল্প ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানও সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আজ থেকে আলোচনা শুরু হবে বলে জানান। তিনি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে রাজধানীর হাইকোর্ট গেটের সামনে শিক্ষাচত্বরে স্বৈরাচার পতন আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন।

অন্তর্বর্তী সরকার প্রথম পর্যায়ে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এই ছয় কমিশনের চেয়ারম্যানদের নিয়ে গত বুধবার ‘জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন’ গঠন করে সরকার। এর নেতৃত্বে রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বৈঠকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ পেয়েছেন এবং অংশ নেবেন।

কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রীয়াজ; যিনি সংবিধান সংস্কার কমিশনেরও প্রধান। বাকি পাঁচ সংস্কার কমিশন প্রধানেরা ঐকমত্য কমিশনের সদস্য।

এর আগে ১০ ফেব্রুয়ারি ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছিলেন, ইতিমধ্যে জমা দেওয়া ছয় কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন নিয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হবে।

কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলী রীয়াজ; যিনি সংবিধান সংস্কার কমিশনেরও প্রধান। বাকি পাঁচ সংস্কার কমিশন প্রধানেরা ঐকমত্য কমিশনের সদস্য।.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র প রথম ইউন স সদস য গতক ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।

আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।

এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।

নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।

জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা মঙ্গলবার আবার শুরু
  • বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য, ভালো উদ্যোগ নিলেও বিরোধিতা আসে
  • লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
  • ইউনূস-তারেকের বৈঠক দেশের মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, আশার আলো
  • ড. ইউনূস ও তারেকের বৈঠক জাতির জন্য স্বস্তির বার্তা: ১২ দলীয় জোট
  • ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার ও জুলাই সনদ