বলিউড ও দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু সবকিছুর মধ্যেও নিজেকে খানিক আলাদা করে রাখার চেষ্টা। অভিনেত্রীকে নিয়ে চর্চাও চলে প্রচুর। জীবনের এক কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন সামান্থা। জীবনের একাধিক ঘাত-প্রতিঘাত। সম্পর্কের ওঠা-পড়া। সবকিছুর মাঝেও অভিনেত্রী সামান্থা রথ প্রভু মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার পক্ষে।

তিনি নিজের সঙ্গে সময় কাটাতেই সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। ফোন ছাড়াই নীরবে সময় কাটাতে পারেন সামান্থা। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে, তিনি ‘নীরবতার সাধনা’ লেখা একটি কার্ডের ছবিও পোস্ট করেছেন। সঙ্গে লিখেছেন, ‘তিন দিনের নীরবতা। না কোনো ফোন। না কারও সঙ্গে যোগাযোগ। কেবল নিজের সঙ্গে সময় কাটানো।’

অনেক নেটিজেনের মধ্যেই এই প্রশ্ন জেগেছে, যদি তিনি নীরবই থাকবেন বলে স্থির করেন, তবে কেন তা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানালেন?

সামান্থা একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘নিজের সঙ্গে একা থাকাটা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জিনিসগুলোর মধ্যে একটি। আমি কি এটা করতে পারব? মনে হয় লাখ লাখ বার করব।’ তিনি তাঁর ভক্তদের জন্য একটি ভোটিং পোলও তৈরি করেছিলেন। যেখানে প্রায় ৮৮ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তারাও এ চেষ্টা করতে চান।

সম্প্রতি তিনি জানিয়েছিলেন, ধ্যান তাঁর দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। অভিনেত্রী তাঁর ইনস্টাগ্রামে ধ্যানের একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন।

ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘ধ্যান। যদি কোনো একটা জিনিস আমি মন থেকে চাই, সেটা হলো ধ্যান। আমি চাই তোমরাও এ চেষ্টা কর। প্রতিদিন মাত্র ১৫ মিনিট ধ্যান। যেভাবেই হোক না কেন নীরবে বসে থাক। তোমার শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপর মনোযোগ দাও। অথবা ইউটিউব দেখে ধ্যান কর। এর কোনো ঠিক বা ভুল নেই। শুধু মন দিয়ে ধ্যান করাটা খুব দরকার।’

সামান্থার কাছে ধ্যান জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। তিনি আরও লিখেছেন, ‘পৃথিবীতে যতই বিশৃঙ্খলা তৈরি হোক না কেন, আমি জানি আমার ভেতরে একটা শান্ত জায়গা রয়েছে এবং সেটি একই রয়েছে। যখন নিজের বাড়ির পথ খুঁজে বের করতে শিখে যাবেন, তখন বাইরের শব্দ তার নিয়ন্ত্রণ হারাবে। সেটাই চেষ্টা করে দেখুন।’

কিছুদিন আগে বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন সামান্থা। কিন্তু অন্যান্য দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রীর তুলনায় বলিউড সিনেমায় নিজেকে তুলে ধরার সুযোগ কমই পেয়েছেন। মায়োসাইটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে কিছু বড় প্রজেক্টের কাজ হাতছাড়া হয়েছে তাঁর। অসুস্থতায় বারবার অভিনয়ে বিরতি নেওয়ায় দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমায়ও আগের মতো দেখা মিলছে না তাঁর। সর্বশেষ আলোচিত দক্ষিণী সিনেমা ‘মুকুথি আম্মান’-এর সিকুয়েলে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সামান্থা তাঁর গ্ল্যামার ইমেজ নিয়ে আগের চেয়ে অনেক চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। কারণ, মায়োসাইটিস রোগের কারণে অভিনেত্রীর ত্বকে এক ধরনের পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। গ্ল্যামার তারকাদের জন্য এটি বড় রকমের দুশ্চিন্তার বিষয়। সে কারণেই ‘মুকুথি আম্মান-২’ সিনেমার দেবী চরিত্রে অভিনয় নিয়ে খুব একটা আগ্রহী নন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ বন র

এছাড়াও পড়ুন:

মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।

মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।

জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।

এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।

ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।

আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগে

ফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ