ডিএমএফ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক চার দফা দাবির বিরুদ্ধাচারণ ও ডিপ্লোমা মেডিকেল কোর্সকে ছয় মাসের কোর্স আখ্যা দিয়ে এমবিবিএস শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল এসোসিয়েশন ও সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থীরা।

বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন সাধারণ ম্যাটস ঐক্য পরিষদ ও প্রাইভেট প্রাকটিশনার ফেনীর যৌথ আয়োজনে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ২৫০ শয্যা ফেনী জেনারেল হাসপাতাল থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন  ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন ম্যাটস শিক্ষার্থীরা। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডিপ্লোমা মেডিকেল (ডিএমএফ) শিক্ষার্থীরা চার বছর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে ৬ মাস সরকারি হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ সমাপ্ত করে দেশের স্বাস্থ্য খাতে ভূমিকা রেখে আসছে। কতিপয় কিছু এমবিবিএস শিক্ষার্থীরা ডিএমএফ শিক্ষার্থীদের কটাক্ষ করে তাদের চার দফা দাবির বিরুদ্ধাচারণ করছেন। তার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফেনীতে বিক্ষোভ মিছিল করেন ডিএমএফ শিক্ষার্থীরা।

ডিএমএফ শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হলো: অনতিবিলম্বে শূন্য পদে নিয়োগ ও নতুন পদ সৃজন। প্রতিষ্ঠানের নাম ও কোর্স কারিকুলামের সংশোধন। ডিএমএফ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি। এলাইড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড বাতিল করে মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ নামে স্বতন্ত্র শিক্ষা বোর্ড গঠন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী জিল্লুর রহমান বলেন, “চার বছর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে ছয় মাস সরকারি হাসপাতালে ইন্টার্নি শেষে উপ-সহকারী কমিউনিটি  মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করার কথা থাকলেও গত এক যুগের বেশি সময় এ পদে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ফলে হাজার হাজার ডিএমএফ শিক্ষার্থী তাদের ভবিষ্যতে নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। আমরা দশম গ্রেড বাস্তবায়নসহ চার দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসলেও এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তারা এর সমাধানে কোন ভূমিকা নেননি। এর মাঝে নতুন করে কতিপয় চিকিৎসক ও এমবিবিএস শিক্ষার্থীরা আমাদের কটাক্ষ করে বক্তব্য দিচ্ছে যা অত্যন্ত হীনমন্যতার বহিঃপ্রকাশ। আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

ফারজানা আক্তার প্রমা নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “এলাইড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড কার্যত ডিপ্লোমা মেডিকেল শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছেলেখেলায় মত্ত হয়েছেন। অনতিবিলম্ব এ বোর্ড বাতিল করে মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ নামে স্বতন্ত্র শিক্ষা বোর্ড গঠন করতে হবে।”

আহমেদ ইয়ামিন নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “যদি পড়াশোনা শেষ করে কর্মজীবনের সুযোগই না থাকে তাহলে ডিপ্লোমা মেডিকেল শিক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হোক। আমাদের জীবন নিয়ে খেলার অধিকার কারো নেই। এক যুগ ধরে বন্ধ হয়ে থাকা শূন্য পদে নিয়োগ ও নতুন পদ সৃজন করতে হবে। ডিএমএফ শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ শিক্ষার সুযোগ করে সৃষ্টি করতে হবে।”

মিমি আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের অধিকার আদায়ে ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের নেতারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরাও ঘরে ফিরবো না।”

ফেনী/সাহাব/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম য টস শ ক ষ র থ আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য

প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।

ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী

২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।

আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছে

প্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।

স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।

তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ