শ্রীনগরে আবার ২৭টি কবর খুঁড়ে ৬টি কঙ্কাল চুরি, এলাকাবাসীর উদ্বেগ
Published: 27th, February 2025 GMT
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় ২৭টি কবর খুঁড়ে ৬টি কঙ্কাল চুরি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার পশ্চিম সিংপাড়া সামাজিক কবরস্থান থেকে কঙ্কালগুলো চুরি হয়।
এর আগে ১৪ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় শ্রীনগরের বেজগাঁওয়ে করব খুঁড়ে ১১টি খুলি এবং ২০ ফেব্রুয়ারি চারিগাঁও জান্নাতুল ফেরদৌস কবরস্থান থেকে ৪টি কঙ্কাল চুরি হয়। দুই সপ্তাহের মধ্যে চতুর্থবারের মতো কবর থেকে কঙ্কাল চুরি হওয়ায় উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী।
পশ্চিম সিংপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যায় তিনি কবরস্থানের বাতি জ্বালান এবং ভোরে ফজরের নামাজের পর বাতি বন্ধ করে দেন। আজ ভোরে বাতি বন্ধ করে কবরস্থানের চারপাশে হাঁটাহাঁটি করছিলেন। তখন একটি কবর খোঁড়া দেখতে পান। সন্দেহ হলে পুরো কবরস্থান ঘুরে ২৬টি কবর খোঁড়া দেখা যায়। এরপর এলাকাবাসীকে বিষয়টি জানালে তাঁরা খোঁড়া কবরগুলো থেকে ছয়টি কঙ্কাল চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কবর থেকে কঙ্কাল চুরির ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে মৃতের স্বজনেরা সেখানে ভিড় করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, তিন মাস আগে তাঁর মাকে কবরস্থানে দাফন করা হয়। আজ সকালে জানতে পারেন, কবরস্থান থেকে অনেকগুলো কঙ্কাল চুরি হয়েছে। পরে ঘটনাস্থলে এসে মায়ের কবর খোঁড়া ও কঙ্কাল চুরির বিষয়টি দেখতে পান। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘আমরা স্বজনদের শেষবিদায় দিয়ে গোরস্তানে রাখি। যখন তাঁদের কথা মনে পড়ে, গোরস্তানে আসি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, চোখের পানি ফেলি। তাঁদের না দেখলেও কবর দেখে মনকে সান্ত্বনা দিই। সেই কবর থেকে যখন কঙ্কাল চুরি হয়, তখন সেই সান্ত্বনাটুকুও হারিয়ে যায়।’
শ্রীনগর উপজেলায় কবর খুঁড়ে কঙ্কাল চুরি হওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে জোরালো ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বেজগাঁও কবরস্থানের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বারবার চুরির ঘটনায় আমরা এখন আতঙ্কিত। আমরা চাই, এসব চুরির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের যেন প্রশাসন দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির ব্যবস্থা করে।’
যেসব কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরি হয়েছে, সেগুলোর একটিরও সুরক্ষা দেয়াল, পাহারাদার নেই বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) আনিসুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কবরস্থান থেকে প্রথম কঙ্কাল চুরি যাওয়ার পর তাঁরা প্রতিটি কবরস্থানের সভাপতিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সুরক্ষা দেয়াল, বাতি, সিসিটিভি ক্যামেরা ও পাহারাদার নিযুক্ত করতে বলেছিলেন। কিছু জায়গায় হয়েছে। তবে অধিকাংশ জায়গায় বাকি। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা গেলে চুরি রোধ করা যাবে। তিনি বলেন, চুরির ঘটনা কমাতে পুলিশ তৎপর আছে। যারা এসব ঘটনায় জড়িত, তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। চোর চক্রকে ধরতে আজ থেকে জোর অভিযান চালানো হবে। দ্রুত তারা গ্রেপ্তার হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কবরস থ ন থ ক কবরস থ ন র এল ক ব স শ র নগর র ঘটন কবর খ
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত নেতার অনুসারীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর রেলগেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
সেখানে বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রতিবাদ মিছিলও করেন। এ ছাড়া সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষীপুর এলাকাতেও সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।
বিক্ষোভকারী নেতা-কর্মীদের দাবি, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সোহরাব উদ্দিনকে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
এর আগে সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার।
এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।
জানতে চাইলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হাসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণ করেছি।’
কুষ্টিয়ার অন্য তিনটি সংসদীয় আসনে বিএনপির প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।