যত্রতত্র মোরাল পুলিশিং সমর্থনযোগ্য না: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
Published: 4th, March 2025 GMT
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুস আহমেদ বলেছেন, যত্রতত্র মোরাল পুলিশিং সমর্থনযোগ্য না। এতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেছেন, ‘ধূমপান ইস্যু নিয়ে চলমান বিতর্ক একটি অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক। আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতিতে নারীদের ধূমপানের নজির নেই। প্রকাশ্যে ধূমপান দেশে আইনত নিষিদ্ধ। একই সঙ্গে যত্রতত্র মোরাল পুলিশিং করাও সমর্থনযোগ্য না। এতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।’
দেশ এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে উল্লেখ করে ইউনুস আহমেদ আরও বলেন, এখন সময় দেশ সংস্কারের, দেশ গড়ার। বহুমত, বহুপথ ও ভিন্ন চিন্তার সবাই মিলে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের এই সময়ে অহেতুক বিতর্ক যারা তৈরি করছে, তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, আশরাফুল আলম, শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, সহকারী মহাসচিব আহমদ আবদুল কাইয়ূম, লোকমান হোসাইন জাফরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন‘পাবলিক প্লেসে’ ধূমপান নারী–পুরুষ সবার জন্য অপরাধ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা০২ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।