রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে দেশের পাঁচটি বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পরীক্ষার্থীরা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেও অনেকেই পেয়েছেন প্রত্যাশার চেয়ে ভিন্ন কেন্দ্র।

কেন্দ্র চয়েজ করেও অনেক শিক্ষার্থীর সিট পড়েছে অন্য বিভাগে। ফলে চরম ভোগান্তিতে তারা। দূরবর্তী কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গিয়ে বাড়তি খরচ ও যাত্রার বিড়ম্বনায় হতাশ তারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেন্দ্র সংকট ও মেরিট অনুযায়ী সিট নির্ধারণের কারণেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

আরো পড়ুন:

রাবিতে অ্যাডহকে নিয়োগ পাওয়া সমন্বকের অপসারণ দাবি

বসন্তের ছোঁয়ায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে রাবি

তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, অন্য বিভাগে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হলে বিকেন্দ্রীকরণের কোন প্রয়োজনীয়তা ছিল না। এটা তো আরো বেশি ভোগান্তি।

আইসিটি সেন্টারের তথ্য মতে, এ বছর ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ‘এ’ ইউনিটে ৯৬ হাজার ১৬২ জন, ‘বি’ ইউনিটে ৪২ হাজার ৪৩৩ জন এবং ‘সি’ ইউনিটে ৯৮ হাজার ৮২০ জন চূড়ান্ত আবেদন করেছেন। তবে অভিন্ন পরীক্ষার্থী সংখ্যা ২ লাখ ৩০ হাজার ৯৪ জন।

পাঁচ বিভাগীয় শহরে পরীক্ষার কেন্দ্র রয়েছে আটটি। এদের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ হাজার ৭০০টি, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্রণী স্কুলে শুধু ‘সি’ ইউনিটের জন্য অতিরিক্ত আসন ১ হাজার ৮০৮টি, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ হাজার ২৬৩টি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হাজার ৫০টি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩ হাজার ৮০টি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭ হাজার ২০০টি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ হাজার ৪১৯টি ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ হাজার ৩০০টি পরীক্ষা নেওয়ার আসন রয়েছে।

মনোরঞ্জন সাহা নামে এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী বলেন, “আমার বাসা দিনাজপুরে। প্রথম চয়েস ছিল রংপুর, তারপর রাজশাহী। কিন্তু আমার আসছে চট্টগ্রামে। এখন আমরা অতদূরে কিভাবে যাব? আসলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সঙ্গে ফাজলামি শুরু করেছে।”

এবি মোমেন নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আমি থাকছি ঠাকুরগাঁও, পরীক্ষা কেন্দ্রের চয়েস লিস্টে রাবিতে রাখলেও সিট পড়েছে চবিতে। এতদূর যাওয়া আমার জন্য কঠিন। কিভাবে যাব বা কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না। এটি সম্পূর্ণ বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত। যাওয়া-আসার খরচ চিন্তা করলেই পরীক্ষা দেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি।”

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক ড.

সাইফুল ইসলাম বলেন, “ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিভাগীয় শহরের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে আসনসংখ্যা ও আবেদনকারীর অসমতার কারণে মেরিট অনুযায়ী সিট নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে কিছু পরীক্ষার্থী দূরের কেন্দ্রে পড়েছে। এক শিফটে পরীক্ষা নেওয়ার কারণে বিকল্প ব্যবস্থা কঠিন। তবে ভবিষ্যতে বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হবে।”

সার্বিক ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহা. মাঈন উদ্দীন বলেন, “বিষয়টি জেনেছি। আইসিটি সেন্টারের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে কিভাবে সমস্যাটা সমাধান করা যায়, সেটা নিয়ে কাজ করছি।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ র ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত নেতার অনুসারীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর রেলগেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

সেখানে বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রতিবাদ মিছিলও করেন। এ ছাড়া সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষীপুর এলাকাতেও সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।

বিক্ষোভকারী নেতা-কর্মীদের দাবি, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সোহরাব উদ্দিনকে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।

এর আগে সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার।

এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।

জানতে চাইলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হাসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণ করেছি।’

কুষ্টিয়ার অন্য তিনটি সংসদীয় আসনে বিএনপির প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ