ইসরায়েলের বাধায় টানা ছয় দিন ধরে কোনো ধরনের মানবিক সহায়তা ঢোকেনি গাজায়। এতে খাদ্য সংকটে হাহাকার পড়ে গেছে যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে। খাদ্য বিতরণ করা সংস্থাগুলোর নির্দিষ্ট জায়গাগুলোতে ভিড় করছে ক্ষুধার্ত শিশুসহ অন্যরাও। বিভিন্ন সহায়তা সংস্থা জানিয়েছে, গাজায় বরাদ্দকৃত শত শত মিলিয়ন ডলারের সহায়তা তহবিল স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর আলজাজিরার।

এ পরিস্থিতিতে গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে। হামাসের সামরিক শাখার মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের প্রতিরোধ বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে রয়েছে। তবে গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী ব্যবস্থাপনার জন্য মিসর ও আরব নেতাদের দেওয়া প্রস্তাবকে ‘অপর্যাপ্ত’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৪৮ হাজার ৪৪০ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১ লাখ ১১ হাজার ৮৪৫ জন আহত হয়েছেন। তবে, গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৬২ হাজার।

যুক্তরাষ্ট্র-হামাস গোপন বৈঠকে ক্ষুব্ধ ইসরায়েল

সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহায় বৈঠক করেছেন ট্রাম্পের দূত অ্যাডাম বোহলার ও হামাসের শীর্ষ নেতা খালিল আল-হাইয়া। তবে এ আলোচনা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে ইসরায়েল। আলজাজিরা জানায়, এ বৈঠকে মূলত ২১ বছর বয়সী আমেরিকান বন্দি ইডান আলেকজান্ডারের মুক্তি এবং চার মার্কিন নাগরিকের মরদেহ ফেরত আনার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। তবে, ইসরায়েলকে এ বিষয়ে জানানো হয়নি।

এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী পশ্চিম তীরের নুর শামস শরণার্থী শিবিরে ১৬টি ভবন ধ্বংস করেছে। এর আগে তুলকারেম ও জেনিন অঞ্চলেও বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়। এই ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে পশ্চিম তীরের শরণার্থী শিবিরগুলো স্থায়ীভাবে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ