চাঁদের পৃষ্ঠে পানির অস্তিত্ব অনুসন্ধানে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এবার চাঁদে অবতরণকরা চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চাঁদের মেরু এলাকার বেশ কিছু স্থানে বরফ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর পাঠানো চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযান ২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণ করে। মহাকাশটিতে থাকা বিক্রম ল্যান্ডারের চেসট নামের প্রোবের মাধ্যমে চাঁদের পৃষ্ঠের ১০ সেন্টিমিটার গভীরের তাপমাত্রা সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী দুর্গা প্রসাদ করণম জানিয়েছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চাঁদের পৃষ্ঠে বরফ জমা হয়েছিল। গবেষণার তথ্য সেই বিষয় সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছে। চাঁদে বরফের অস্তিত্ব নিয়ে একটি গবেষণাপত্র কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, চন্দ্রযান-৩–এর বিক্রম ল্যান্ডার চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের প্রান্তে প্রায় ৬৯ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশে অবতরণ করে। এই অবতরণ স্থানের ছয় ডিগ্রি কোণে সূর্যের দিকে মুখ করা একটি ঢালু জায়গা রয়েছে। সেখানকার তাপমাত্রা দিনে প্রায় ৮২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতে মাইনাস ১৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বিক্রম ল্যান্ডারের অবতরণ স্থানের মাত্র এক মিটার দূরে থাকা একটি সমতল পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস; অর্থাৎ সামান্য একটি ঢালের কারণে আগের স্থানের তাপমাত্রার কিছুটা বেশি হয়ে থাকে।

চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের সংগ্রহ করা তথ্য কাজে লাগিয়ে একটি মডেল তৈরির পাশাপাশি চাঁদের ঢালু স্থান কীভাবে তাপমাত্রা প্রভাবিত করতে পারে, তা জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। সেই মডেলের তথ্যমতে, ১৪ ডিগ্রির বেশি কোণে ঝুঁকে থাকা ঢালু স্থানটির পৃষ্ঠের কাছাকাছি বরফ জমা হওয়ার জন্য যথেষ্ট ঠান্ডা তাপমাত্রা রয়েছে। আর তাই এই ঢালু স্থানটিতে বরফ থাকতে পারে।

প্রসঙ্গত, চাঁদে বরফ পাওয়া গেলে পৃথিবী থেকে চাঁদে পানি পরিবহনের খরচ ও সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। ফলে চাঁদে মানুষের ঘাঁটি স্থাপনের পাশাপাশি মঙ্গল গ্রহ বা মহাকাশ গবেষণার কাজও সহজ হবে।
সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে আবারও বিমান বিপর্যয়, পাইলটের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচলেন ২৫০ হজযাত্রী

ভারতের লখনৌতে অবতরণের সময় সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। ল্যান্ডিংয়ের পরই বিমানের বাঁ দিকের চাকা থেকে ধোঁয়া বের হতে শুরু করে, দেখা যায় স্ফুলিঙ্গও। পাইলটের তৎপরতায় নিরাপদভাবে ২৫০ জনকে নামানো হয় লখনৌয়ে।

রোববার ভোরে এ ঘটনা ঘটেছে। সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এসভি-৩১১২ শনিবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে জেদ্দা থেকে রওনা দেয়। রোববার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে বিমানটি লখনৌয়ের চৌধুরি চরণ সিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরনের কথা রয়েছে। 

বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানান, অবতরণের ঠিক পরপরই বিমানের বাঁ দিকের চাকায় ধোঁয়া এবং আগুনের স্ফুলিঙ্গ দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে পাইলট বিপদ সংকেত পাঠান কন্ট্রোল রুমে। কোনো ঝুঁকি না নিয়ে বিমানটিকে রানওয়ে থেকে সরিয়ে আনা হয় ট্যাক্সিওয়েতে।

তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় বিমানবন্দরের এমার্জেন্সি রেসপন্স টিম। ফোম ও জল ব্যবহার করে ২০ মিনিটের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে আনা হয় পরিস্থিতি। এরপর একে একে বিমান থেকে নামিয়ে আনা হয় সব যাত্রী ও কর্মীদের। সৌভাগ্যবশত, কারো কোনো চোট লাগেনি।

তদন্তে জানা যায়, বিমানের হুইল অ্যাসেম্বলিতে আচমকা হাইড্রলিক তরল লিক করায় অতিরিক্ত ঘর্ষণে বেশি তাপ তৈরি হয়েছিল। সেটাই ধোঁয়া ও স্ফুলিঙ্গের কারণ। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই সমস্যা যদি উড়া চলাকালীন বা টেক-অফের সময় ঘটত, তাহলে বড় বিপদ হতে পারত।

ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ালেও পাইলটের দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। ফ্লাইটটি হাজযাত্রীদের নিয়ে জেদ্দা থেকে এসেছিল এবং খালি অবস্থায় সৌদি আরবে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতে আবারও বিমান বিপর্যয়, পাইলটের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচলেন ২৫০ হজযাত্রী