পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) সম্প্রতি এক আলোচিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ক্রিকেটারদের ম্যাচ কমিয়ে দিয়েছে। নতুন এই পরিবর্তনের ফলে এবারের ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে অংশ নেওয়া ক্রিকেটাররা প্রতি ম্যাচে মাত্র ১০ হাজার পাকিস্তানি রুপি পাবেন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ হাজার ৩৪০ টাকা। যেখানে আগের আসরে তারা প্রতি ম্যাচে ৪০ হাজার রুপি (প্রায় ১৭ হাজার ৩৬০ টাকা) করে পেত। অর্থা গেল বছরের চেয়ে এবার ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি কমানো হয়েছে ৭৫ শতাংশ।

নতুন কাঠামো অনুযায়ী, বেঞ্চে থাকা রিজার্ভ খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি আরও কমিয়ে ৫ হাজার রুপি নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার ১৭০ টাকা। তবে পিসিবির এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, এই সিদ্ধান্তের পেছনে কোনো আর্থিক সংকট নয়, বরং ঘরোয়া ক্রিকেটের ক্যালেন্ডারে টুর্নামেন্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রিকেটারদের আয়ের সুযোগ বেড়েছে।

পিসিবির বর্তমান চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির নেতৃত্বে বোর্ডের ব্যয় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, বোর্ডের তহবিল সংকটে নেই এবং এটি পাকিস্তান ক্রিকেটের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, স্টেডিয়াম সংস্কার, বিদেশি কোচ নিয়োগ ও বরখাস্ত, এবং পরামর্শকদের উচ্চ সম্মানী বাবদ বিপুল অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। বোর্ডের পাঁচজন পরামর্শকের জন্য প্রতিমাসে ব্যয় হচ্ছে ৫০ লাখ পাকিস্তানি রুপি, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানে সেই ট্রেন থেকে ১০৪ জিম্মি উদ্ধার, নিহত ১৬

পাকিস্তানে তালেবানের হামলায় ৪ সেনা নিহত

প্রসঙ্গত, ২০২২-২৩ মৌসুমে পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে ম্যাচ ফি অনেক বেশি ছিল। দুই বছর আগে ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে অংশগ্রহণকারী ক্রিকেটাররা প্রতি ম্যাচে ৬০ হাজার রুপি (প্রায় ২৬ হাজার ৪০ টাকা) পেতেন। কায়েদ-ই-আজম ট্রফির ক্ষেত্রে সেই ফি ছিল আরও বেশি, প্রতি ম্যাচে ১ লাখ রুপি। অথচ এবার সেই ফি অনেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা ক্রিকেটারদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে ২০২৪-২৫ মৌসুমের ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপ, যেখানে ১৮টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। টুর্নামেন্টের ৪০টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ফয়সালাবাদ, লাহোর ও মুলতানের তিনটি স্টেডিয়ামে। ২৭ মার্চ ফয়সালাবাদের ইকবাল স্টেডিয়ামে জমকালো ফাইনালের মধ্য দিয়ে পর্দা নামবে এই প্রতিযোগিতার।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে

সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বহন করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেটে সরকারের সুদ পরিশোধ সংক্রান্ত পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে সুদ ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে।

পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ১৫ ভাগ অর্থই সুদ খাতে খরচ করতে হচ্ছে এখন। এ পরিস্থিতিতে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতেই ব্যয় করতে হবে চার লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে সুদ ব্যয় বাড়ছে ৩৩ শতাংশ। এর মধ্যে শতাংশের হিসাবে বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যয় সবচেয়ে বেশি বাড়বে।

অর্থ বিভাগের করা ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি-২০২৫-২০২৬ থেকে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ  ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় ছিল ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় গেছে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে (যা চলতি জুনের ৩০ তারিখে শেষ হয়ে যাবে) মূল বাজেটে সুদ খাতে ব্যয় বরাদ্দ ছিল এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে এই সীমায় সুদ ব্যয় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক লাখ ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এ হিসাবের মধ্যে ছিল অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় ৯৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিদেশী ঋণের ২২ হাজার কোটি টাকা।

একইভাবে আগামী তিন অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়েরও একটি প্রক্ষেপণ করেছে অর্থ বিভাগ। এই হিসেবে দেখা যায় আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয় হবে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা (অভ্যন্তরীণ এক লাখ কোটি টাকা , বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা)। একইভাবে এর পরের অর্থবছর ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে একলাখ ৩৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা(অভ্যন্তরীণ এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা এবং বিদেশি ঋণের ২৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা) এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে সুদ খাতে ব্যয়ের  প্রক্ষেপণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। 

অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে,  মোট সুদ ব্যয়ের সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে  ৯৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে অভ্যন্তরীণ সুদ পরিশোধের হার ২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ২৯ শতাংশ থেকে কমে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশে হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ মোট সুদ ব্যয়ের তুলনায় কম, তবে এটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে এটি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৭ হাজার ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত হতে পারে। মোট বাজেটের অনুপাতে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ এ সময়কালে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।

বিদেশি ঋণের সুদ ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের কার্যকর ব্যবস্থাপনা শুধু আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই নয়, বরং এটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রক্ষা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা, আন্তর্জাতিক ঋণমান বজায় রাখা এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভাবনা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খেলাপি ঋণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে
  • সুদ পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে
  • সংশোধিত সাইবার অধ্যাদেশও আন্তর্জাতিক মানের হয়নি
  • জার্মানির ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্যে পড়াশোনা, জেনে নিন সব তথ্য
  • স্বপ্নে হলো দেখা
  • ২০২৪ সালে মেটার কাছে ৩৭৭১ অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে সরকার
  • কয়েক দশকের ছায়াযুদ্ধ থেকে এবার প্রকাশ্য সংঘাতে ইরান-ইসরায়েল
  • তিন চ্যাম্পিয়ন দলসহ যেসব তারকাকে দেখা যাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে
  • ৫ বছরে ঋণের স্থিতি বাড়বে ৫৩.৭৭ শতাংশ: অর্থবিভাগ