ইসরায়েলের বোমা হামলায় গাজার ডি-ফ্যাক্টো প্রধানমন্ত্রী নিহত
Published: 19th, March 2025 GMT
গাজা উপত্যকার ডি-ফ্যাক্টো প্রধানমন্ত্রী ইশাম দা-লিসকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েল। সোমবার মধ্যরাতে গাজাজুড়ে ইসরায়েলের ব্যাপক বোমা হামলায় ইশাম দা-লিস নিহত হন। গাজায় তার পদবী হলো ‘সরকারের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ’ কমিটির প্রধান। যা প্রধানমন্ত্রীর সমপর্যায়ের পদ বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল।
ইশাম দা-লিস ছাড়াও গাজার হামাস সরকারের বিচার মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক আহমেদ আল-খাত্তা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আবু ওয়াতফা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান বাহজাত আবু সুলতান নিহত হয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মাহমুদ আবু ওয়াতফা হামাস সরকারের পুলিশ এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করতেন। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, হামাস সরকারের উচ্চপদস্থ এ চার নেতাকে লক্ষ্য করে হত্যা করা হয়েছে। আইডিএফ আরও জানিয়েছে, হামাসের মধ্যম সারির কমান্ডারদেরও হামলায় লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছিল। যার উদ্দেশ্য ছিল হামাসের সামরিক ও বেসামরিক সরকারের ওপর বড় আঘাত হানা। যেন গাজায় তারা নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং দখলদার ইসরায়েলের জন্য কোনো ধরনের হুমকি না হয়।
এরআগে গাজার সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাহি মুস্তাহাকে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে হত্যা করে দখলদাররা। এরপর তার স্থলাভিষিক্ত হন ইশাম দা-লিস।
ইসরায়েল হুমকি দিয়েছে, যদি তাদের জিম্মিদের হামাস ছেড়ে না দেয় তাহলে গাজায় এ ধরনের হামলা আরও অব্যাহত রাখা হবে। সোমবার রাতে ঘুমন্ত এসব মানুষের ওপর বর্বরোচিত বোমা হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে চারশরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে অসংখ্য নারী ও শিশু রয়েছে।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল র সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়: ডাকসু
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগের সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায় বলে দাবি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।
রবিবার (২ নভেম্বর) ডাকসুর ভিপি মো. আবু সাদিক, জিএস এসএম ফরহাদ ও এজিএস মুহা: মহিউদ্দিন খান স্বাক্ষরিত ‘রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কাৃরের বিরোধিতা এবং ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো অক্ষুণ্ন রাখার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ডাকসুর প্রতিবাদ' শীর্ষক এক প্রতিবাদলিপিতে এ কথা বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করতে ২ কমিটি
ঢাবিতে সপ্তাহব্যাপী শিল্পকর্ম প্রদর্শনী শুরু
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, জুলাই বিপ্লব ছিল বৈষম্য, অবিচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার এক সম্মিলিত বিপ্লব। কেবল সরকার পরিবর্তন নয় বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ, স্বাধীন ও শক্তিশালী সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গঠন, প্রশাসনিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং একটি বৈষম্যহীন-ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল এই বিপ্লবের মূল ভিত্তি। নতুন প্রজন্ম চেয়েছিল এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কোন প্রকার বৈষম্য ও রাজনৈতিক একচেটিয়া কর্তৃত্বের জায়গা থাকবে না।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। বিশেষত বিএনপি এমন সব মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতা করেছে যা সরাসরি ছাত্র–জনতার স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত। পিএসসি, দুদক, ন্যায়পাল ও মহা-হিসাব নিরীক্ষকের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিত করার সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়।
যে বৈষম্যমূলক চাকরি ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করেই জুলাই বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল সেই কাঠামো পরিবর্তনের বিরুদ্ধাচরণ করে বিএনপি নতুন প্রজন্মের ন্যায্য দাবি অস্বীকার করছে। পাশাপাশি জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিশনের বিরোধিতা, অনুচ্ছেদ–৭০ সংস্কারে আপত্তি, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান আলাদা দুজন ব্যক্তির মতো আধুনিক গণতান্ত্রিক প্রস্তাবে বিরোধিতা, আইন পেশায় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা, স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস গঠনে তাদের আপত্তি রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্মাণের পথে বড় বাঁধার সৃষ্টি করছে। এভাবে বিএনপি মূলত জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে অস্বীকার করে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
প্রতিবাদলিপিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, এই সংস্কারগুলো ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থ নয় বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং আধুনিক, গণতান্ত্রিক ও শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তৈরির লক্ষ্যেই প্রস্তাবিত হয়েছে। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ গঠনের নৈতিক দায়িত্ব ছাত্র ও সর্বস্তরের জনগণের। তাই সংস্কারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জনগণ থেকে নিতে হবে। আর গণভোটই জনগণের ম্যান্ডেট নিশ্চিতের উপযুক্ত মাধ্যম। গণভোটের মাধ্যমেই জনগণ ঠিক করবে দেশের স্বার্থে কোন কোন সংস্কার প্রস্তাবনাগুলোকে তারা সমর্থন দিবে।
কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব যদি রাষ্ট্রগঠনমূলক সংস্কারের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তবে ছাত্র-জনতা সেই বাধা অতিক্রমে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে জানিয়ে প্রতিবাদলিপিতে আরো বলা হয়, জুলাই বিপ্লব শুধু শাসক বা সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন নয় বরং জুলাই বিপ্লব হলো ফ্যাসিবাদী কাঠামো বিলোপ করে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী