সেবার বিনিময়ে ‘উপহার’ নিতে পারবেন না সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীরা
Published: 22nd, March 2025 GMT
প্রায় ৪০০টি সরকারি সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আচরণ সংহিতা (কোড অব কনডাক্ট) তৈরি করেছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সম্প্রতি এ বিষয়ে ১২ পৃষ্ঠার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। অ-আর্থিক সংস্থাগুলোর জন্য এ আচরণ সংহিতা প্রযোজ্য।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো সংস্থায় কর্মরত কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর পরিবারের সদস্যদের জন্য সরাসরি বা পরোক্ষভাবে লাভজনক হতে পারে, এমন কোনো কর্মকাণ্ডে তাঁরা যুক্ত হতে পারবেন না। সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে অস্বাভাবিক কোনো সুবিধাও গ্রহণ করতে পারবেন না তাঁরা। এ ছাড়া সংস্থার অনুমোদন ছাড়া সেবা গ্রহণকারীদের কাছ থেকে কেউ কোনো উপহার বা মূল্যবান বস্তু গ্রহণ করতে পারবেন না। কোন পরিস্থিতিতে কী উপহার ও সুবিধা গ্রহণ করা যাবে, তার তালিকা করাসহ রেকর্ড সংরক্ষণ করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে বলা হয়েছে।
অ-আর্থিক সংস্থা বলতে বোঝানো হয়েছে, দেশের কোনো আইনের মাধ্যমে তৈরি বা পরিচালিত অথবা আইনের অধীনে প্রতিষ্ঠিত কোনো স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, কমিশন, কাউন্সিল, বোর্ড ইত্যাদি।
অর্থ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত ভ্রমণসহ প্রাতিষ্ঠানিক ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কর্মচারীদের শেয়ার, সিকিউরিটিজ বা অন্যান্য আর্থিক সম্পদ কেনাবেচা, লেনদেন ও ধারণ করার ক্ষেত্রে সরকারের প্রচলিত বিধিবিধান অনুসরণ করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নিজ সংস্থার সঙ্গে ব্যবসায়িক স্বার্থ আছে, এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত হতে পারবেন না কেউ, ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না এবং ব্যক্তিগত লাভের জন্য কিছু করা যাবে না। অন্য কোথাও বৈতনিক বা অবৈতনিক অথবা খণ্ডকালীন চাকরিও করা যাবে না।
বলা হয়েছে, নিজের ধর্মের প্রতি সম্মান বজায় রাখার পাশাপাশি অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতিও সমানুভূতি প্রকাশ করতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গনির্বিশেষে সবার প্রতি সমান সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করতে হবে। হেনস্তা, বৈষম্য বা অন্য কোনো অস্বস্তিকর আচরণমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে নিজের অফিসে। সেবাগ্রহীতাদের তৃপ্তি বা অতৃপ্তি, সন্তুষ্টি বা অসন্তোষ ইত্যাদি প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
সরকারি কেনাকাটায় কোনোভাবেই আইন বা বিধির ফাঁকে প্রতিযোগিতার ব্যত্যয় ঘটিয়ে দরপত্র ডাকা যাবে না। ক্রয়প্রক্রিয়া এমনভাবে সম্পাদন করতে হবে, যাতে কোনোভাবেই স্বজনপ্রীতি বা পক্ষপাতিত্বের সূত্রপাত না ঘটে। আর অর্থ বিভাগের অনুমোদন ছাড়া কোনো প্রকার বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করা যাবে না। বৈদেশিক মুদ্রায় কোনো দায় সৃষ্টির অঙ্গীকারও করা যাবে না।
আরও বলা হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কেউ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতে পারবেন না, চাকরিস্থল ত্যাগও করতে পারবেন না। কাজ করতে পারবেন না কেউ কোনো বিমা কোম্পানির এজেন্ট হিসেবেও।
আচরণ সংহিতা লঙ্ঘন করলে কী হবে—এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। অর্থ বিভাগের একজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা অবশ্য বলেন, সরকার চায় সব সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীই এ আচরণ সংহিতা মেনে চলবেন। এটা লঙ্ঘনের দায়ে কী করা হবে বলা না থাকলেও সরকার চাইলে ব্যবস্থা নিতেই পারবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আচরণ স হ ত কর মকর ত প রব ন ন র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমি কী অপরাধ করেছি’— সবাই জানেন শিরোনামটা...
সবাই জানেন শিরোনামের উক্তিটি শেখ হাসিনার।
২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান বিষয়ে জাতিসংঘ নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক গবেষণা করেছে। মাস কয়েক আগে প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে। গবেষণার সারসংক্ষেপ—শেখ হাসিনা ২০২৪-এর গণহত্যার সরাসরি নির্দেশদাতা। কমপক্ষে ১ হাজার ৪০০ আন্দোলনকারী হত, ২০ হাজারের বেশি নাগরিক আহত।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন অবশ্যই নির্ভরযোগ্য। তবু শেখ হাসিনা, তাঁর দল, সমর্থক এবং শাসনকালের সুবিধাভোগীরা প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেছে। সম্প্রতি বিবিসি এবং আল-জাজিরার মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম একই ধরনের অকাট্য তথ্যপ্রমাণ হাজির করেছে। দিনের আলোর মতো পরিষ্কার—হাসিনা আন্দোলনকারীদের প্রাণঘাতী অস্ত্র দ্বারা হত্যার নির্দেশও দিয়েছিলেন। যথারীতি প্রামাণ্য প্রতিবেদনগুলোর তথ্য-উপাত্ত এবং ভাষ্যও অস্বীকার করে চলেছেন দলটির কর্মী-সমর্থকেরা।
হাতে হাতে সেলফোন থাকার সুবাদে গণমাধ্যমের বরাতে সারা দুনিয়া দেখে ফেলেছে কী ঘটেছে বাংলাদেশে। তবু শেখ হাসিনা নির্দ্বিধায় বলতে পারেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পরও শেখ হাসিনা, তাঁর দল বা কর্মী–সমর্থকের মধে৵ অনুতাপ-অনুশোচনার লেশমাত্রও নেই; বরং তারা স্বরূপেই ফিরতে মরিয়া। অবলীলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে যুক্তির মালা গাঁথছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিদারুণ সক্রিয় থাকছে। গুজব, অপতথ্য, বানোয়াট কল্পকাহিনি, কুযুক্তি, অন্যায়-অপকর্মের বিপরীতে কুযুক্তি নির্মাণে তারা থেমে নেই।
দুই.
পৃথিবীর দেশে দেশে ‘ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন’ (দায় স্বীকার ও পুনর্মিলন) উদাহরণ অনেক। রাজনৈতিক সংঘাত-সংঘর্ষ, হানাহানি-লোকক্ষয়ের ঘটনা ঘটেই থাকে। এরপরও দিন শেষে মানুষ চায় শান্তি। চায় ভুলে যেতে। মাফসাফ করে দিয়ে মিলেমিশে থাকতে। বাংলাদেশেও শান্তিবাদী সংবেদনশীল মানুষের অভাব নেই। তাঁরাও চান আওয়ামী লীগ নিজেদের দায়দায়িত্ব বিষয়ে সাচ্চা ও সৎ অবস্থান নেবে। কৃতকর্মের জন্য ভুল স্বীকার করবে, ক্ষমা চাইবে। দেশে যদি এক কোটি আওয়ামী লীগ সমর্থক মানুষ থাকে, তাদের বাদ দিয়ে কি দেশ পুনর্গঠন করা সম্ভব?
কানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, রুয়ান্ডা, চিলি, আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার রাজনৈতিক পুনর্মিলন হয়েছে দ্রুত। কানাডা আদিবাসীদের ওপর ১০০ থেকে ১৫০ বছর পুরোনো অন্যায্য ও অমানবিক আচরণের জন্য অনুতাপ-অনুশোচনাসহ ভুল স্বীকার করে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা তো চেয়েছেই, ক্ষতিপূরণও দিচ্ছে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির প্রভাবে কানাডায় ইংরেজি শেখানোর জন্য এবং ইউরোপীয় কেতা-কায়দা শিক্ষা দেওয়ার জন্য আদিবাসী শিশুদের বোর্ডিং স্কুলে নিয়ে আসা হতো। করা হতো অমানবিক আচরণ। অনেক শিশুর মৃত্যুও হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সেসব বোর্ডিং স্কুল বন্ধ হয়েছে। তবু ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন (টিআরসি) তৈরি থামেনি। অনুশোচনা ও ভুল স্বীকার কানাডার গ্লানি কমিয়েছে, গৌরব বাড়িয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় নেলসন ম্যান্ডেলার রাজনৈতিক জীবনের বেশির ভাগই কেটেছে শ্বেতাঙ্গ শাসকের কারাগারে। কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর নির্যাতন-নিবর্তন ছিল অবর্ণনীয়। নেলসন ম্যান্ডেলা ক্ষমতায় এসে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে দুষ্কর্মকারী শ্বেতাঙ্গদের রক্তবন্যায় ভাসাতে পারতেন; কিন্তু তিনি গঠন করলেন ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন (টিআরসি)। আগের শ্বেতাঙ্গ সরকার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তঁাদের ভুল স্বীকার করলেন, ক্ষমা চাইলেন, আইনানুযায়ী প্রাপ্য শাস্তিও মেনে নিলেন। ভুল স্বীকার করায় দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির মাত্রাও লঘু করা হয়েছিল।
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের অন্যতম পুরোনো এবং বিভিন্ন সময়ের সেরা রাজনৈতিক দল। হিংস্রতা এবং দায়িত্ব এক নয়—এই বোধটুকু ধারণ করে রিকনসিলিয়েশনে এগিয়ে এলে দলটি স্বশক্তিতেই টিকে থাকবে। নইলে বরণ করে নিতে হবে মুসলিম লীগের পরিণতি।রুয়ান্ডায় হুতু-তুতসিদের দীর্ঘদিনের সংঘাতসংকুল জাতিগত বিরোধে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারান। ১৯৯৪ সালের ভয়াবহ দাঙ্গার পর রুয়ান্ডান প্যাট্রিয়াটিক ন্যাশনাল ফ্রন্ট (আরপিএফ) ক্ষমতা নেয়। পিএনএফ হুতুদের দ্বারা নির্যাতিত। অন্য দেশে আশ্রিত। শরণার্থী গেরিলা দল। ক্ষমতা নেওয়ার পর তারা প্রতিশোধ–উন্মত্ত হতে পারত। ৬ এপ্রিল ১৯৯৪ হুতু প্রেসিডেন্ট জুভেনাল হাবিয়ারিমানার বিমান ভূপাতিত হলে হুতু চরমপন্থী মিলিশিয়ারা আরপিএফ গেরিলাদের অভিযুক্ত করেই তুতসি ও হুতু উদারপন্থীদের নির্বিচার হত্যা করে।
কিন্তু আরপিএফ কমান্ডার এবং প্রেসিডেন্ট পল কাগামেও মান্দেলার মতো ইউনিটি ও রিকনসিলিয়েশন কমিশন করেন। হুতু অপরাধীরা দলে দলে দায়দায়িত্ব নিয়ে দোষ স্বীকার ও ক্ষমা প্রার্থনা করে। সাধারণ ক্ষমা বা লঘু শাস্তিও মেলে। আইন হয় সবারই একটিই পরিচিতি—‘রুয়ান্ডান’। বিভাজনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। রুয়ান্ডা এখন শান্ত। চিলি ও আর্জেন্টিনায় এক সময়ের মহাক্ষমতাধর সামরিক জান্তা ক্ষমা চেয়ে ক্ষমা পেয়ে এবং কলম্বিয়ায় সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী অস্ত্র সমর্পণ করে মূলধারায় মিশে গেছে।
গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার দলের বেলায় ইতিহাসের এসব সবক কোনোই কাজে লাগছে না। তিনি ম্যান্ডেলা বা কাগামের পথ ধরেননি। ধরেছেন কম্বোডিয়ার কসাই পলপট এবং ইতালির ফ্যাসিস্ট মুসোলিনির পথ। হাজার হাজার মানুষের খুনি পলপটও ছিলেন অনুতাপহীন। তাঁরও ছিল একই ভঙ্গি—‘আমি কী অপরাধ করেছি?’ মুসোলিনি তো আত্মহত্যাই করে বসলেন, যাতে দায় স্বীকার করতে না হয়।
বিভাজন-বিদ্বেষের রাজনীতি অনন্তকাল টিকে থাকতে পারে না। টিকে থাকলে রাষ্ট্র, সরকার, জনগণসহ সব রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানই দুর্বল হয়ে পড়ে। রাজাকার-মুক্তিযোদ্ধা, পক্ষশক্তি-বিপক্ষ শক্তি বয়ানের তিলকে তাল বানিয়ে নাগরিকদের বিভাজিত রাখাই ছিল হাসিনার খলকৌশল। এসবের পেছনে লক্ষ-কোটি টাকা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ অপচয়ের ফল হাসিনার ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠা। বয়ানগুলো বড়সড় সংখ্যার একদল মানুষের মগজ-মজ্জা-অস্থিতে সেঁটে দেওয়া গেছে। তাই দলটির কর্মী–সমর্থকদের সিংহভাগই অনুতাপহীন।
তিন.
অনুতাপহীনতার সামষ্টিক মনস্তত্ত্বটি বোঝা দরকার। নইলে আগামী দিনে বারবারই ফ্যাসিবাদ ফিরবে বিভিন্ন চেহারায়। ধরা যাক, আমরা বাংলাদেশেও অধ্যাদেশ বা আইন করে একটি ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন করব। উদ্দেশ্য—অপরাধ স্বীকারকারীদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি লঘু করে বা সাধারণ ক্ষমা দিয়ে মূলধারার রাজনীতিতে অংশগ্রহণ ও দেশ পুনর্গঠন করার অংশীজন হওয়ার সুযোগ দেব। এটা কতটা সম্ভব বিবেচনা করতে গেলে দলীয় প্রধান ও দলের কর্মী–সমর্থকদের সামাজিক মনস্তত্ত্ব পাঠ জরুরি।
কেন তারা অনুতাপ-অনুশোচনাহীন? ব্যাখ্যা মেলে সামাজিক মনোবিদ লিওন ফেস্টিঞ্জারের ‘কগনিটিভ ডিসোনেন্স’ তত্ত্বে। ফেস্টিঞ্জারের মতে—ক্ষমতা, দুর্নীতি, অনৈতিক উপায়ে উপার্জন, নেশাগ্রস্ততাসহ যেকোনো কিছুতে আসক্ত ব্যক্তি কোনো না কোনোভাবে তার আসক্তির সমর্থনে পাঁচ-দশটা যুক্তি বের করে নেবেই নেবে। সেসব যুক্তি যতই কুযুক্তি বা প্রতারণা-প্রবঞ্চনামূলক হোক না কেন, বয়ানকারী সেগুলোকে যৌক্তিক প্রমাণ করতে প্রাণান্ত চেষ্টা করবেই। ফলে বিশ্বাস এবং আচরণের আকাশ-পাতাল বেমিলও তারা গায়ের জোরে যুক্তি হিসেবে প্রমাণ করতে নামে।
উদাহরণ—এক বাবার বদ্ধমূল বিশ্বাস, তাঁর সন্তানটি অসামান্য মেধাবী। সন্তান কিন্তু পড়াশোনা করেনি। পরীক্ষায় খুব খারাপ করেছে। বাবা অসংখ্য যুক্তি আবিষ্কার করলেন। বিশ্বাসও করলেন—তাঁর সন্তানের প্রতি শিক্ষক অবিচার করেছেন, ঠেকিয়েছেন। শিক্ষকের চেয়েও তাঁর সন্তান বেশি মেধাবী হওয়ায় শিক্ষক ঈর্ষান্বিত। অথবা স্কুলটির পড়াশোনার মান পড়ে গেছে। আরেকটি উদাহরণ—একজন নিশ্চিত জানেন এবং বিশ্বাস করেন ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তবু ধূমপান ছাড়েন না। যুক্তি হিসেবে বলেন, আমার নানা আমার চেয়ে বেশি ধূমপান করেও ৯৫ বছর বেঁচে ছিলেন।
পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যার পরও ফ্যাসিস্ট যুক্তি দেয়—গুলি নয়, দেশের শৃঙ্খলা, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সংহতি টিকিয়ে রাখতে যা করা দরকার করেছি।