কুমিল্লায় পুলিশের নাম ভাঙিয়ে ফুটপাতে চাঁদাবাজি
Published: 28th, March 2025 GMT
ঈদের আর কয়েকদিন বাকি। কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে মানুষের ঢল নেমেছে কেনাকাটায়। ভিড় সামাল দিতে নিউমার্কেট ও লিবার্টি মোড়ে যান চলাচল নিষিদ্ধ করেছে জেলা পুলিশ। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মূল সড়কের বড় অংশ দখল করে বসেছে ভাসমান দোকান। আর এসব দোকান বসাতে প্রতিদিনই গুণতে হচ্ছে চাঁদা!
এদিকে কান্দিরপাড়ে যান চলাচল বন্ধ থাকায় সড়কজুড়ে তৈরি হয়েছে জনস্রোত। কিন্তু রাস্তার মাঝখানে দোকান বসানোর কারণে হাঁটা কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, যান চলাচল বন্ধের উদ্যোগ ভালো, তবে সেটার সুফল পেতে হলে ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত রাখা জরুরি। অবৈধ দোকান উচ্ছেদে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। একইসঙ্গে চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এ দুর্ভোগ চলতেই থাকবে।
অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের নাম ভাঙিয়ে একটি চক্র প্রকাশ্যেই এ চাঁদাবাজি করছে। চাঁদা দিলে দোকান, না দিলে উচ্ছেদ।
অনুসন্ধানে জানা যায় গেছে, নিউমার্কেট থেকে টাউনহল পর্যন্ত দুই শতাধিক ভাসমান দোকান গড়ে উঠেছে। ফুটপাতের পর এবার সড়কের মাঝেও দোকান বসেছে। অথচ এসব দোকান বসাতে হচ্ছে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা দিয়ে। বড় দোকানগুলো থেকে ২০০ টাকা, ছোট দোকান থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে প্রতিদিন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্রেতা বলেন, “আমরা এখানে বসার অনুমতি পাইনি। টাকা দিয়েই বসতে হয়েছে। পুলিশের নাম নিয়ে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করা হয়। টাকা না দিলে দোকান তুলে দেওয়া হয়।”
অন্য এক বিক্রেতা বলেন, “পুলিশ আগে সরাসরি টাকা নিত। এখন তাদের নাম ভাঙিয়ে কিছু লোক এসে চাঁদা তোলে। না দিলে দোকান সরানোর হুমকি দেওয়া হয়।”
ভিড়, জট আর হাঁটার দুর্ভোগ কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের জন্য এসব দোকান এখন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফারজানা আক্তার নামে এক ক্রেতা বলেন, “প্রতি বছর ঈদের আগে আসি, কিন্তু এবার হাঁটাও যাচ্ছে না। ফুটপাত দখল ছিলই, এখন তো রাস্তার মাঝেও দোকান বসেছে!”
রাজীব হাসান নামে আরেক ক্রেতার প্রশ্ন, “পুলিশ যদি যান চলাচল বন্ধ করে, তবে তারা রাস্তা দখল করেও দোকান বসতে দিচ্ছে কেন? জনসাধারণের চলাচলের জন্য যে উদ্যোগ, সেটাই তো বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”
চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, “পুলিশ কোনো ধরনের চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নয়। কেউ পুলিশের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা আদায় করলে প্রমাণসহ অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান বলেন, “পুলিশের নাম ব্যবহার করে কেউ চাঁদাবাজি করতে পারবে না। অভিযোগ পেলেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/রুবেল/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াতের পর এবার সমাবেশে অংশ নিতে বিশেষ ট্রেন ভাড়া ছাত্রদলের
জামায়াতে ইসলামীর পর এবার বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৩ আগস্ট ছাত্র সমাবেশে অংশ নিতে প্রায় ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে চট্টগ্রাম ছাত্রদল ২০ বগির এই বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে।
জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩ আগস্ট ছাত্র সমাবেশ করবে ছাত্রদল।
এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ২০ বগির একটি বিশেষ ট্রেনের জন্য আবেদন করা হয়। ছাত্রদলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ রেলওয়ে। আগামী রোববার সকাল সোয়া ৭টায় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে এই ট্রেন ছেড়ে যাবে। আর ঢাকায় পৌঁছাবে বেলা সোয়া ১টায়। এই ট্রেন সন্ধ্যা সাতটায় আবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০ বগির ট্রেনটিতে ১ হাজার ১২৬টি আসন রয়েছে। বিশেষ ট্রেন পরিচালনার জন্য রেলওয়ের চট্টগ্রাম, ঢাকা বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তৌষিয়া আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রদলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রেল ভবনের অনুমোদন সাপেক্ষে বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই কারণে নিয়মিত ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না।
চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) সাব্বির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এই ট্রেনে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার প্রায় দেড় হাজার নেতা-কর্মী যাবেন। সবাই একসঙ্গে যেতে চাওয়ায় ট্রেন ভাড়া করেছেন। বাসে হলে তা সম্ভব ছিল না।
এর আগে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করেছিল জামায়াতে ইসলামী। সমাবেশে নেতা-কর্মীদের যাতায়াতের জন্য ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম থেকে চার জোড়া বিশেষ ট্রেন ভাড়া করে দলটি। এই চার ট্রেন ভাড়া করতে দলটিকে গুনতে হয়েছে প্রায় ৩২ লাখ টাকা।
জামায়াতের ট্রেন ভাড়া করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় জানায়, বিশেষ ট্রেন পরিচালনায় স্বাভাবিক নিয়মের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।