বাড়ির পাশে ফুল বাগানে শাড়ি পরে ছবি তুলে তা শেয়ার করছেন কেউ। আবার কেউ কেউ পাহাড়ের কোলে বসে সেলফি তুলে তা সামাজিক মাধ্যমে ছেড়েছেন। ফুটবল থেকে দূরে থাকা সানজিদা আক্তার-ঋতুপর্ণা চাকমাদের সময়টা যাচ্ছে এখন পরিবারের সঙ্গে হাসি আর আনন্দে। এক মাসের বেশি সময় ক্যাম্প ছেড়ে যাওয়া মেয়েরা ভুলে যেতে চায় পিটার বাটলারের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া নেতিবাচক বিষয়গুলো। সব ভুলে এখন ক্যাম্পে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তহুরা খাতুন-শামসুন্নাহাররা। নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের প্রস্তুতির জন্য আগামী ৬ এপ্রিল ক্যাম্পে ফেরার কথা জাতীয় নারী ফুটবলারদের। বাটলারের অধীনে অনুশীলন বয়কট করা ১৮ নারী ফুটবলারও সেদিন যোগ দেবেন। তাদের নমনীয় হওয়াটা বাংলাদেশ নারী ফুটবলের জন্য ইতিবাচক বটে।

বডি শেমিংসহ কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা সাবিনা খাতুন-মাসুরা পারভীনরা অনুশীলন বয়কট করেন। সিনিয়রদের ছাড়াই সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করে আসে বাংলাদেশ দল। দুটি ম্যাচে হারলেও তরুণ এবং নতুন মেয়েদের নিয়ে ভবিষ্যতের দল গঠনের কাজ করতে থাকেন বাটলার। কিন্তু নারী সাফ জিততে যাদের বেশি অবদান, তাদের বাদ দিতে চায় না বলে বাফুফে মোট ৫৫ জনকে চুক্তির আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেয়। ৩৭ জন চুক্তি করলেও বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেননি। মূলত কোচ ইস্যুতে তাদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক আলোচনা হওয়ায় ট্রমায় চলে গিয়েছিল মেয়েরা। তাই ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখের পরে ছুটি নিয়ে যে যার মতো করে নিজ বাড়িতে চলে গিয়েছে। তবে ঈদে যাওয়ার আগে বাফুফে থেকে টাকা নিয়ে যেতে পারত। এবার চুক্তি না করাতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেয়েরা। শুক্রবার সমকালের সঙ্গে আলাপে এ বিষয়টা স্বীকার করেছেন এক নারী ফুটবলার, ‘আমরা যদি চুক্তিতে থাকতাম, হয়তো আমরা বেতন পেতাম। তখন আরও বেশি ভালো লাগত আর ঈদটা একটু বেশি ভালোভাবে কাটাতাম।’ 

মেয়েদের আয়ের উৎসই হলো ফুটবল। তাই এবার বেতন পাননি বলে অনেকের ঈদটা যেমন ভালো কাটবে না, তেমনি করে অনেক দিন পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারার তৃপ্তিও আছে। ‘দেখেন আমি যখন ক্লাস সিক্সে উঠছি, তখন বাফুফের ক্যাম্পে চলে গিয়েছিলাম। ২০১৫ সালের পর থেকে এই পর্যন্ত বেশির ভাগ সময়ই ছিলাম ক্যাম্পে। পরিবারের সঙ্গে সেভাবে সময় কাটাতে পারিনি। এবার অনেক দিন বাড়িতে আছি বলে ভালো লাগছে। পরিবারও খুশি। বাড়িতে ঈদ করব বলে আমি এবং আমার পরিবার অনেক খুশি। আর যা কিছু হয়েছে আমি এগুলো নিয়ে পরিবারের সঙ্গে আলোচনাও করি না। খেলা ও পরিবার আমার কাছে দুটি ভিন্ন জিনিস’– পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো নিয়ে নিজের উচ্ছ্বাস এভাবেই প্রকাশ করেছেন ওই নারী ফুটবলার।

দেড় মাসের মতো বাফুফে ক্যাম্পের বাইরে আছেন নারী ফুটবলাররা। এই সময়ে অনেক কিছু উপলব্ধি করেছেন তারা। কোচের বিরুদ্ধে গিয়ে আন্দোলন করাটা যে সঠিক ছিল না, তা বুঝেছেন। বেশ কয়েকজনই জানিয়েছেন সবার সঙ্গে কোচের ঝামেলা ছিল না। হাতেগোনা কয়েকজনকে কোচ পছন্দ করতেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নারী ফুটবলার জানিয়েছেন, অনেকেই নাকি মোবাইল ফোন নিয়ে অনুশীলনে যেতেন, ‘সত্যি বলতে কি সব মেয়ের সঙ্গে কোচের ঝামেলা হয়নি। কিছু কিছু ফুটবলারের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়েছে। আমার সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়নি। যেহেতু ফুটবল খেলা একটা টিম ওয়ার্ক, সেহেতু দলের সঙ্গে থাকতে হয়েছে।’ 
বিদ্রোহীরা সব ভুলে ক্যাম্পে ফিরবেন। কিন্তু এখন দেখার বিষয় পিটার বাটলার সেই মেয়েদের কীভাবে গ্রহণ করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ল দ শ ফ টবল ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির প্রার্থীর তালিকায় নেই তারকারা

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে কয়েকজন জনপ্রিয় তারকার মনোনয়ন পাওয়ার গুঞ্জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত প্রার্থী তালিকায় তাদের নাম নেই।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭ আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুন:

শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?

মালয়েশিয়ায় পরীমণির দশ দিন

তবে আলোচনায় থাকা কোনো তারকা প্রার্থী চূড়ান্ত তালিকায় আসেননি। সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন (নীলফামারী–৪), মনির খান (ঝিনাইদহ–৩) ও রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা (সিরাজগঞ্জ–১) মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।

তাদের মধ্যে বেবী নাজনীন ও মনির খানের আসনে যথাক্রমে আবদুল গফুর সরকার ও মেহেদী হাসান মনোনয়ন পেয়েছেন। কনকচাঁপার আসনের প্রার্থী এখনো ঘোষণা হয়নি।

২০১৮ সালের নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ–১ আসন থেকেই বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন কনকচাঁপা। তখন আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। এবারের নির্বাচনে আবারো লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানা যায়।

মনির খান ও কনকচাঁপা দুজনই বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতা। এছাড়া দলটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও চলচ্চিত্র অভিনেতা আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বলের নামও আলোচনায় ছিল।

উজ্জ্বল বলেন, “দল যদি মনে করে আমার প্রার্থী হওয়া দরকার, আমি প্রস্তুত।”

বিএনপির এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আপাতত স্পষ্ট—বিনোদন অঙ্গনের জনপ্রিয় মুখগুলো এবারো দলীয় প্রার্থী তালিকার বাইরে থাকছেন।

ঢাকা/রাহাত/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ