৩ রুশ কূটনীতিককে বরখাস্ত করেছে মলদোভা, পাল্টা ব্যবস্থার হুমকি মস্কোর
Published: 1st, April 2025 GMT
তিন রুশ কূটনীতিককে মলদোভা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা ক্রেমলিনপন্থি মলদোভার এক আইনপ্রণেতাকে কারাভোগ করা থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন।
মলদোভার এই পদক্ষেপের পর পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে মস্কো।
মলদোভার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল সোমবার রাশিয়ার দূতাবাসের ওই তিন কর্মীকে বরখাস্ত করেছে। বার্তা আদান–প্রদাণের অ্যাপ টেলিগ্রামে নিজেদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানাতে গিয়ে শুরুতেই বলেছে, ‘কূটনৈতিক অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কর্মকাণ্ডের স্পষ্ট প্রমাণ থাকার ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
মলদোভার এই পদক্ষেপের দ্রুত জবাব দিয়েছে মস্কো। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ নভোস্তির খবর অনুযায়ী, রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা পাল্টা পদক্ষেপ নেবে।
সোমবার মলদোভার একটি অভিযোগের জেরে প্রতিবেশী রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির নতুন করে এই কূটনৈতিক টানাপড়েন শুরু হয়েছে। মলদোভার অভিযোগ, সে দেশের রুশ দূতাবাস মলদোভার একজন আইনপ্রণেতাকে রাশিয়া-সমর্থিত দেশটির বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চল ট্রান্সনিস্ত্রিয়ায় পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে।
দুর্নীতির অভিযোগে দোষীসাব্যস্ত হওয়ার পর ওই আইনপ্রণেতাকে কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন৪৫ রুশ কূটনীতিক-দূতাবাসকর্মীকে বহিষ্কার করল মলদোভা২৭ জুলাই ২০২৩ওই আইনপ্রণেতার নাম আলেকজান্ডার নেস্তেরোভস্কি। মলদোভার গোয়েন্দা সংস্থা একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ১৮ মার্চ নেস্তেরোভস্কি মলদোভায় রাশিয়ার দূতাবাসে প্রবেশ করছেন। তার পরদিন একটি আদালত নেস্তেরোভস্কিকে ১২ বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেয়। নেস্তেরোভস্কি তাঁর বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক টন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। আজ বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য (এমইপি) মুনির সাতোরির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিনিধিদলকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করেছি। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ফেব্রুয়ারির শুরুতে, রমজানের ঠিক আগে।’ তিনি উল্লেখ করেন, জনসাধারণ, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে নির্বাচনী উৎসাহ বাড়ছে। কারণ, দীর্ঘদিন পর কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দশকের বেশি সময় পর ছাত্র সংসদ নির্বাচন আবার শুরু হয়েছে।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর।’ তিনি বলেন, কিছু শক্তি এখনো নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে, তবে অন্তর্বর্তী সরকার নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, তরুণ ভোটাররা এবার রেকর্ড সংখ্যায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। কারণ, ১৫ বছরের বেশি সময় পর অনেকেই প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন। তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য এক নতুন সূচনা বয়ে আনবে। এটি আমাদের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে—জাতির জন্য এক নতুন যাত্রা।’
ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা ও ইউরোপীয় আইনপ্রণেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অব্যাহত সমর্থন ও চলমান রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়ে মতবিনিময় করেন।
আগামী নির্বাচন বাংলাদেশে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন ইউরোপীয় আইনপ্রণেতারা। এক আইনপ্রণেতা প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সরকারের গত ১৪ মাসের ‘অসাধারণ’ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
এক ডাচ আইনপ্রণেতা মন্তব্য করেন, বাংলাদেশ কতিপয় দেশের মধ্যে অন্যতম, যেখানে ‘ঘটনাগুলো সঠিক পথে এগোচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য বাড়তি তহবিল প্রদানের আহ্বান জানান।
বিশেষ করে সম্প্রতি অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্কুলগুলো আবার চালু করতে সহায়তা প্রদানের অনুরোধ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ শ্রম সংস্কারগুলো তুলে ধরে বলেন, এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশ–ইইউ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।