সরকারি ছুটির দিনে শিশু আদালতের কার্যক্রম চলমান রাখতে নির্দেশনা
Published: 10th, April 2025 GMT
সরকারি ছুটির দিনগুলোতে শিশু আদালতের কার্যক্রম চলমান রাখতে কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার (বিচার) মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেনের সই করা বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য, শুক্র/শনিবারসহ সরকারি ছুটির দিনগুলোতে শিশুদের গ্রেপ্তার বা আটক করার পর তাদের সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থাপন না করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থাপন করা হচ্ছে বলে হাইকোর্ট বিভাগের নজরে এসেছে। অথচ এসব শিশুর জামিন, রিমান্ড, হেফাজত, বয়স নির্ধারণসহ অন্তর্বর্তীকালীন কোনো আদেশ দেওয়ার বিষয়ে এসব আদালতের আইনগত এখতিয়ার না থাকায় ওই শিশুদের গ্রহণ ও তাদের বিষয়ে যেকোনো আদেশ/সিদ্ধান্ত প্রদানে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটরা অপারগতা প্রকাশ করে থাকেন। এ পরিস্থিতিতে সরকারি ছুটির দিনগুলোতে শিশু আদালতের কার্যক্রম চলমান রাখাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে হাইকোর্ট বিভাগ।
নির্দেশনায় বলা হয়, ২০১৩ সালের শিশু আইন (সংশোধিত ২০১৮) এবং মো.
অপর নির্দেশনায় বলা হয়, সরকারি কার্যদিবসের ন্যায় ছুটির দিনগুলোতে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শিশু আদালতের নির্দেশে আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু (ভিকটিম/সংবাদদাতা/সাক্ষী) বা আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশুর জবানবন্দি দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট লিপিবদ্ধ করতে পারবেন।
নির্দেশনায় বলা হয়, আইনের সংস্পর্শে আসা শিশুর (ভিকটিম/সংবাদদাতা/সাক্ষী) জবানবন্দি রেকর্ড প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তাদের জিম্মা হেফাজতসহ অন্য যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান এবং আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশুকে আটক/গ্রেপ্তারের পর পুলিশ কর্তৃক জামিন প্রদান না করা হলে ওইরূপ শিশুর জবানবন্দি রেকর্ড, তার বয়স নির্ধারণ, রিমান্ড, নিরাপদ হেফাজতসহ যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরকারি কার্যদিবসের ন্যায় সাপ্তাহিক ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতে অভিযুক্ত/আটক করা শিশুকে সংশ্লিষ্ট শিশু আদালতে উপস্থাপন করবে।
অপর নির্দেশনায় বলা হয়, আইনের সংস্পর্শে আসা শিশু ও আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশুদের হেফাজত, জামিন, রিমান্ড, বয়স নির্ধারণসহ যেকোনো অন্তর্বর্তী বিষয়ে সরকারি কার্যদিবসের ন্যায় সরকারি ছুটির দিনগুলোতেও সংশ্লিষ্ট শিশু আদালত ২০১৩ সালের শিশু আইন (সংশোধিত ২০১৮) মো. হৃদয় বনাম রাষ্ট্র মামলায় দেওয়া নির্দেশনা অনুসরণ করে নিষ্পত্তি করবেন।
২০১৩ সালের শিশু আইনের (সংশোধিত ২০১৮) বর্তমান অস্পষ্টতা ও অসংগতি দূর করতে শিশু আইন সংশোধন কিংবা এই কোর্ট (হাইকোর্ট বিভাগ) থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত উল্লিখিত নির্দেশনাগুলো কার্যকর/বহাল থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইন র স স পর শ বয়স ন র ধ উপস থ প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আমাদের সন্তানেরা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছিল, আমরাও তাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা ফ্যাসিবাদকে বিদায় করেছে। এক বছর আগেও মানুষ চিন্তা করতে পারেনি যে তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু আজ সারা দেশের জনগণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই সর্বময় ক্ষমতার মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন এবং ইচ্ছেমতো কেড়েও নেন। তা আমরা জুলাই বিপ্লবে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছি।’
আজ সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘সহযোগী সদস্য সংগ্রহ অভিযান-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথাগুলো বলেন।
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন নিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘২০১৪ সালে তারা ষড়যন্ত্র করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছিল। কেউ নির্বাচনে যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায়। যেখানে রাতেই ভোট হয়ে গিয়েছিল। আর এসব নির্বাচনে হাসিনাকে সঙ্গ দিয়েছে জাতীয় পার্টি। আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের সব অধিকার হরণ করেছিল। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। মানুষকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেয়নি। তারা মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেয়নি।’ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যারা হাত-পা হারিয়েছে, যারা নির্যাতিত হয়েছে, তারা কখনোই এসব খুনিকে ক্ষমা করবে না। খুনিদের বিচার করতে হবে এবং সব স্তরে সংস্কার করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে, যেখানে কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব থাকবে না। নির্বাচন জনগণের অধিকার। জনগণই তাঁদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। যাঁরা নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার করতে চাইবেন, জনগণ তাঁদের প্রতিহত করবেন।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতার দম্ভে মানুষের ওপর লাগামহীন জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবিলা না করে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জেল-জুলম, গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তারা মনে করেছিল যে তাদের এমন অপশাসন ও দুঃশাসন কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। কিন্তু আল্লাহ জালিমদের ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না।’
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে, বেকারত্ব ও চাঁদাবাজি থাকবে না। যেখানে মা-বোনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না। আমরা সাম্যের ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও বায়তুল মাল সেক্রেটারি হাফেজ আমিনুল ইসলাম। গণসংযোগের সময় স্থানীয় মার্কেটের ব্যবসায়ী, পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দা, গাড়িচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাওয়াত দেওয়া হয়।