হাতকড়াসহ ২ আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আটক ২৭
Published: 11th, April 2025 GMT
মাদারীপুরের কালকিনিতে ইয়াবাসহ আটক দুই যুবককে হাতকড়া পরা অবস্থায় পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় আহত হন ৪ পুলিশ সদস্য।
আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ছিনিয়ে নেওয়া আসামিদের আটক করতে পারেনি পুলিশ। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কালকিনি পৌরসভার মাছ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, মাদারীপুরের কালকিনির মাছ বাজার এলাকা থেকে ইয়াবাসহ আটক দুই যুবককে আটক করে পুলিশ। তাদের হাতে হাতকড়া পরানোর পর পুলিশের ওপর হামলা চালায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশের কাছ থেকে আসামিদের ছিনিয়ে নেয় তারা। এ সময় চারজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
আহতরা হলেন, কালকিনি থানার এসআই আবুল বাশার, এএসএই সোহেল রানা, কাজী কাজী স্বপন ও আতিকুল ইসলাম। ছিনিয়ে নেওয়া আসামিরা হল কালকিনি পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ঠ্যাঙ্গামারা গ্রামের সিরাজ খানের ছেলে ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা রাশেদুল খান (৩৫)। তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামাল বাকামিনের বড় ভাই ও একই এলাকার মোস্তফা সরদারের ছেলে আল আমিন সরদার (৩০)। আল আমিনের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে.
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম মুঠোফোনে সমকালকে জানান, সন্ধ্যায় কালকিনি থানার এসআই আবুল বাশারের নেতৃত্বে কালকিনি বাজারের বড়ব্রিজ এলাকা থেকে ৫ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয় আল আমিন সরদার ও রাশেদুল খানকে। হাতকড়া পরিয়ে বড়ব্রিজ থেকে মাছবাজারের কাছাকাছি পৌঁছালে পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় স্থানীয়রা। এ সময় কালকিনি থানার এসআই আবুল বাশার, এএসএই সোহেল রানা, কাজী কাজী স্বপন ও আতিকুল ইসলামকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে হামলাকারীরা। পরে হাতকড়া পড়া অবস্থায় ছিনিয়ে নেওয়া হয় আটক দুই যুবককে। আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, কালকিনি থানা পুলিশ ও জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ যৌথ অভিযানে নামে। এই ঘটনায় আলাদা দুটি মামলা করবে পুলিশ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গোপালগঞ্জে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সুদের টাকা লেনদেনের বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৪ পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
আহতরা হলেন- পারভেজ শেখ (২০), মানিক শেখ (৪১), সাদ্দাম শেখ (৩৫), শাকিল খান (২৫), ফয়সাল শেখ (২০), আবু সাঈদ শেখ (৪০), সজীব শেখ (১৯), রনি শেখ (৪০), সোহেল সুলতান (২৫), আফ্রিদি শেখ (১৯), মোস্তফা শেখ (৪০), নুরুন্নবী (১৮), আমানুল্লাহসহ (২৫) আরও অনেকে।
গুরুতর আহতদের গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া কোটালীপাড়া থানার আহত এসআই সেলিম মাহমুদ কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ওই এসআইসহ কোটালীপাড়া থানার আরও ৩ কনস্টেবল আহত হয়েছেন বলে কোটালীপাড়া থানার এসআই মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন।
মাঝবাড়ি গ্রামের কালাম দাড়িয়া ও বংকুরা গ্রামের হাসেম মুন্সি জানিয়েছেন, কোটালীপাড়া উপজেলার বংকুরা গ্রামের রিয়াজুলের কাছ থেকে মাঝবাড়ি গ্রামের ফারুক দাড়িয়া সুদে টাকা নেন । সেই টাকা সময়মত ফারুক সুদে আসলে পরিশোধ করতে গড়িমসি শুরু করেন। এতে পাওনাদার রিয়াজুল ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সুদের টাকা লেনদেন নিয়ে দু’জনের মধ্যে আজ শুক্রবার সকালে বাকবিতণ্ডা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মসজিদের মাইক থেকে গ্রামবাসীকে সংঘর্ষে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ আহ্বানের পর দুই গ্রামের লোকজন ঢাল-সড়কিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দফায়-দফায় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। পুলিশ প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। দুই ঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।
উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
কোটালীপাড়া পাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ ও উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে ওসি আরও বলেন, এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পাওয়ামাত্র আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত রিয়াজুল ও ফারুক দাড়িয়ার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।