ফরিদপুরে মিক্সচার প্লান্টে বিস্ফোরণ, দুই শ্রমিক দগ্ধ
Published: 11th, April 2025 GMT
ফরিদপুরে সড়কের পিচ ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মিক্সচার প্লান্টে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন দুই শ্রমিক। এ সময় তীব্র ধোঁয়ার কুণ্ডলী সৃষ্টি হয়, যা প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরের এলাকা থেকে দেখা যায়। আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে শহরের ব্রাহ্মণকান্দা এলাকায় ঢাকা-বরিশাল বাইপাস সড়কসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণে মিক্সচার প্লান্টের দুই শ্রমিক দগ্ধ হন। তাঁরা হলেন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কাইলাডাঙ্গা গ্রামের আল আমিন মোল্লা (৩৫) ও একই উপজেলার বকুলনগর গ্রামের মো.
অস্থায়ীভাবে স্থাপন করা প্লান্টটি জাহিদুর রহমান নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন। প্লান্টে বিস্ফোরণের সময় পাশে থাকা তিন থেকে চারটি দোকান পুড়ে গেছে। পরে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে নির্ধারণ করা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় সড়কের কাজের জন্য ওই এলাকায় মিক্সচার প্লান্ট স্থাপন করে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। প্লান্টে পাথর, পিচ ও গ্রিন অয়েল মিক্সিং করে এই মিশ্রণ সড়কের সংস্কারকাজে ব্যবহার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের ফরিদপুর স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, ওই প্লান্টের রোলিং বা মিক্সচার মেশিনের একটি মোটর থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় আগুনে ধোঁয়ার তীব্রতা বেড়ে যায়। কারণ, গ্রিন অয়েলে দাহ্য বা তীব্রতা বেশি হয়ে থাকে। ওই সময় সামনে থাকা কয়েকটি দোকানের গ্যাস সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়। খবর পেয়ে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য এখনো জানা যায়নি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।