গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘ছয় মাসের মধ্যে বিদেশে পাচার করা সম্পদের বড় একটি অংশ জব্দ করা হবে। এ জন্য আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলছি। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থাকে চিঠি দিচ্ছি। বিদেশি আইনি সংস্থা বা ফার্মের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে, এ কাজে তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। এরই মধ্যে আমরা বেশ কিছু সম্পদ যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতাও পাচ্ছি। এই প্রক্রিয়ায় ছয় মাসের মধ্যে বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ করা হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আজ শুক্রবার এ কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কার্যক্রম ও সমসাময়িক ব্যাংকিং নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেছেন, পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ একেবারেই নতুন। এটি দেশের আইনে নয়, বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে করতে হবে। কোন দেশে কোথায় কী আছে, এ তথ্য আগে আনতে হবে। সম্পদ জব্দ করার পর আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।

দেশে আগে মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে দেখানো হতো জানিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হতো। কিন্তু প্রকৃত খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৩-১৪ শতাংশ। গত মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ৮-৯ শতাংশে নেমে এসেছে। সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতি স্বস্তিদায়ক অবস্থানে আছে। আগামী বছর মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন গভর্নর।

সংবাদ সম্মেলনে গভর্নরের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চান, কী পরিমাণ অর্থ দেশ থেকে পাচার হয়েছে? জবাবে গভর্নর বলেন, ‘সব মিলিয়ে আমার ধারণা, আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে বড় শিল্প গ্রুপ ও তাদের পরিবারও রয়েছে। বেক্সিমকোর পাচার হওয়ার অর্থের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো। এগুলো শুধু বড় গ্রুপের তথ্য। আপাতত ছোট ছোট গ্রুপের পাচারের তথ্য দেখছি না।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সব বিষয় আদালতের মাধ্যমে নয়, আউট আব কোর্ট সেটেলমেন্ট বলে একটা কথা আছে। তার আগে সব তথ্য নিতে হবে। যখন সব তথ্য থাকবে, তখন তারা নেগোসিয়েশনে আসবে। নেগোসিয়েশনে যাওয়ার আগে সব তথ্য নিয়েই যেতে হবে। তা না হলে আমরা ঠকে যাব।’

অর্থ পাচারে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেকে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, ‘অমূলক তথ্যের ভিত্তিতে কাউকে চাকরিচ্যুত করার পক্ষে আমি নই। সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেব। দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক ও রাষ্ট্রীয় কোনো গোয়েন্দা যদি তথ্য প্রমাণ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ জড়িত, তবে তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। এরই মধ্যে যাঁদের বিরুদ্ধে তথ্য আছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো.

জোবাইর হোসেনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বা বিএফআইইউর পরিচালক মো. আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক মো. সালাহ উদ্দীন, মো. আরিফুজ্জামন, মো. আশিকুর রহমান, স্বরুপ কুমার চৌধুরী প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আহস ন এইচ মনস র ব যবস থ র বল ন

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে চুরির মামলার ২ আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩

বন্দরে বসতঘরে চুরির ঘটনার মামলার ২ চোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতরা হলো বন্দর উপজেলার ফরাজীকান্দা ছোট মসজিদ এলাকার কাজীমুদ্দিনের ছেলে সাব্বির(২২) ও একই এলাকার ইয়াজল হোসেন মিয়ার ছেলে অলিদ(৪০)। এ ব্যাপারে গৃহিনী শান্তা বেগম বাদী হয়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে  বন্দর থানায়  চুরির মামলা দায়ের করেন। যার নং ১(১১)২৫। 

এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার জয়নগর এলাকার সিরাজুল মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম (৩২) নামে এক যুবককে সন্দেহ জনক ভাবে আটক করে পুলিশ। ধৃতদের সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে উল্লেখিত মামলায়  আদালত প্রেরণ করেছে পুলিশ।

গত রোববার (২ নভেম্বর)  রাতে বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত ৪ অক্টোবর বন্দর উপজেলা  ফরাজীকান্দা এলাকায় এ চুরির ঘটনাটি ঘটে।

‎মামলার তথ্য সূত্রে জানা গেছে,  মামলার বাদিনী বন্দর উপজেলার ফরাজিকান্দা গ্ ছোট মসজিদস্থ তার  পিতার বাড়িতে বসবাস করে আসছে। বিবাদী একই এলাকার সম্পর্কে বাদিনী চাচাত ও ফুফাত ভাই ।

গত ৩ অক্টোবর বাদিনী নানা মৃত্যুবরন করলে বাদিনীসহ তার  পরিবারের লোকজন মুন্সিগঞ্জস্থ নানা বাড়িতে যায়। পরের দিন গত ৪ অক্টোবর বাদিনী তার পিতার বাড়িতে এসে  রুমে প্রবেশ করলে সবকিছু এলোমেলো দেখতে পায়।

সন্দেহ হলে ঘরের ভিতর তল্লাশী করিলে দেখতে পাড আমাদের দুটি এড্রয়েট মোবাইল সেট,মাটির ব্যাংকে রক্ষিত ১০ হাজার টাকা,দামী ব্রান্ডের ব্লুটোথসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি করে নিয়ে যায় ।

ঘরের বিভিন্ন স্থানে খোজ করিয়াও বর্নিত মালামালের কোন সন্ধান পাওয়া যায় নাই। বিবাদীরা ইতিপূর্বেও আমার বাড়িতে চুরি করেছিল এবং আমাদের প্রতিবেশিরা আমাদের অনুপস্থিতিতে বাড়ির চারপাশে ঘুরাঘুরি করতে দেখেছে বলে জানায়।

‎‎পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।  এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার জয়নগর এলাকার সিরাজুল মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম (৩২) নামে এক যুবককে সন্দেহ জনক ভাবে আটক করে। পরে আটককৃতকে পুলিশ আইনের ৩৪ ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ