ঠাকুরগাঁওয়ে শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে পেঁয়াজবীজ চাষিদের সর্বনাশ
Published: 13th, April 2025 GMT
পরাগায়ণ-সংকটের পর শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকায় পেঁয়াজবীজের খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে চাষিরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। রোববার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর, আখানগর এবং বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চাড়োল ও পারুয়া এলাকা ঘুরে পেঁয়াজবীজ চাষিদের ক্ষয়ক্ষতি ও সর্বনাশের চিত্র দেখা যায়। মাঠে মাঠে পেঁয়াজবীজের খেত মাটিতে নুয়ে পড়েছে। ফুলের ডাঁটাগুলো পড়েছে ভেঙে। ফুলের মধ্যে থাকা দানা ঝরে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন পেঁয়াজবীজ চাষি জানান, এ বছর পেঁয়াজের ফুলে মৌমাছি না বসায় পরাগায়ণে সমস্যা হয়। এতে ফুলগুলো শুকিয়ে ঝরে যেতে থাকে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে তাঁরা খেতে কৃত্রিমভাবে মৌমাছি চাষ শুরু করেন। এতে পরাগায়ণের সমস্যা কেটে যেতে থাকে। গত কয়েক দিনে এলাকায় ঝড়বৃষ্টি হলেও খেতের তেমন ক্ষতি হয়নি। কিন্তু গত শনিবার রাতে শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখীতে পেঁয়াজবীজের সর্বনাশ হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৫৪৭ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজবীজ চাষ হয়েছে। যা থেকে প্রায় ৬১২ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মধ্য চাড়োল গ্রামের পেঁয়াজবীজ চাষি রাজিউর রহমান বলেন, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে খেত লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এখন খেত থেকে ১০ কেজি বীজও পাবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন। এ বছর তাঁর কয়েক লাখ টাকা লোকসান হবে।
একই উপজেলার পতিলাভাষা গ্রামের আসাদুর রহমান তাঁর এক ভাইকে সঙ্গে নিয়ে তিন বিঘা জমিতে পেঁয়াজবীজ আবাদ করেছেন। সেখান থেকে প্রায় ৯০০ কেজি পেঁয়াজবীজ পাওয়ার আশা করেছিলেন তিনি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।
মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।
জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।
এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।
ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।
আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগেফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে