পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির মোকছেদুল সভাপতি, ফারুক সম্পাদক
Published: 14th, April 2025 GMT
প্রায় এক যুগ পর নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি পদে মোকছেদুল হক ও সাধারণ সম্পাদক পদে আবদুল্লাহ আল ফারুক নির্বাচিত হয়েছেন। সাংগঠনিক দুটি পদে নজরুল ইসলাম ও রমজান আলী কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।
আজ সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় উপজেলার নজিপুর মিনি স্টেডিয়াম মাঠে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ভোটাভুটি শেষে কমিটির নাম ঘোষণা করেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসমবায়বিষয়ক সম্পাদক নজমুল হক। এর আগে সকাল ১০টা থেকে পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির নতুন নেতত্ব গঠনের লক্ষ্যে নজিপুর সিদ্দিকীয়া ফাযিল মাদ্রাসায় কাউন্সিলর প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে ভোট গ্রহণ হয়। ভোট গ্রহণ চলে বেলা তিনটা পর্যন্ত।
দীর্ঘদিন পর সম্মেলনকে ঘিরে দলটির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল। এর আগে কয়েক দিন ধরে দলীয় পদপ্রত্যাশীরা শহর ও গ্রামে মাইকিং করে প্রচার-প্রচারণা চালান।
পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে সভাপতি পদে মোকছেদুল হক, নওশাদ আলী বিশ্বাস ও আবদুস সালাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সাধারণ সম্পাদক পদে আবদুল্লাহ আল ফারুক, আবু ইউসুফ ও তোফাজ্জল হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ ছাড়া সাংগঠনিক দুটি পদে ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ নির্বাচনে উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন বিএনপির ৭৩৫ ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ৬৮২ জন। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য এমদাদুল হক।
ভোটাভুটি পর্ব শেষে বিকেলে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্কাস আলী। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নজমুল হক। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক শামসুজ্জোহা খান, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব বায়েজিদ হোসেন, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনুর রহমান প্রমুখ।
এর আগে ২০১৩ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সর্বশেষ দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স দ ল হক কম ট র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।