তীব্র গরমেও চট্টগ্রামে সড়কে হাঁটু পানি!
Published: 16th, April 2025 GMT
মাথার উপর হা করে আছে সূর্য। তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৩৫ ডিগ্রির ঘর। গরমে নাভিশ্বাস অবস্থা সবার। কিন্তু এর মধ্যেই হাঁটু পানিতে ভাসছে নগরীর জামালখান ও রহমতগঞ্জ এলাকা। রাতে হালকা বৃষ্টি হয়েছিল। তাতেই মঙ্গলবার হাঁটু পানি জমেছে এই দুটি এলাকাতে। সকালের সূর্য দুপুরে গড়ালেও কমছে না পানি। হাঁটু সমান পানির মধ্যে দিয়ে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে কর্মজীবী নারী-পুরুষদের।
জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা বলছেন, খালে বাঁধ দিয়ে সংস্কার কাজ করা হচ্ছে, তাই পানি জমেছে। বর্ষার আগে বাঁধ অপসারণ করা হলে পানি আর জমবে না। অথচ মাত্র চারদিন আগে এবার জলাবদ্ধতা কম হওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন কাজ তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। কিন্তু মঙ্গলবার দেখা গেল ভিন্ন চিত্র।
কয়েকদিনের তাপ প্রবাহের পর মঙ্গলবার ভোররাতে চট্টগ্রামে হালকা বৃষ্টি নামে। ভ্যাপসা গরমে ভোররাতের বৃষ্টি ভেজা শীতল হাওয়া মানুষের মাঝে স্বস্তি দিয়েছে। কিন্তু সকালে বাসা থেকে বের হতে গিয়ে মানুষ পড়েছেন বিপাকে। তাদের একজন জামালখানের শরীফ কলোনীর বাসিন্দা স্বপন কুমার মল্লিক। তিনি বলেন, ‘সকালে প্রাতঃভ্রমণে বের হতে গিয়ে দেখি বাসার সামনে হাঁটু পানি জমে আছে। তাই আর বের হতে পারিনি। এমনিতে বর্ষায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। বৈশাখে কখনো এমন জলাবদ্ধতা দেখিনি। তবে সংস্কার কাজের কারণে প্রায় সময় সড়কে পানি জমে থাকে।’
পঞ্জিকা অনুযায়ী সনাতন ধর্মের লোকজন বাংলা নববর্ষের আচার পালন করেছেন মঙ্গলবার। তাই জামালখান বাইলেনের বাসিন্দা নিপুল কুমার দে বলেন, ‘উন্নয়নের যন্ত্রণা নিয়ে বছরের প্রথম দিনের শুরু।’ এখানকার কর্মজীবী লোকজন অতিরিক্ত ভাড়া গুনে ভ্যানে ও রিকশায় পথ পাড়ি দিয়েছেন। সকালে একইভাবে আন্দরকিল্লা পেশাগত কাজে যেতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েন নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সকালে আন্দরকিল্লা যেতে বাসা থেকে বের হই। রহমতগঞ্জ বাংলা কলেজ এলাকায় গিয়ে দেখি পানি জমে আছে। পরে বিকল্প পথে আন্দরকিল্লা গিয়েছি।’
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরের সিআরবি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সম্মেলন কক্ষে জলাবদ্ধতা নিরসন নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুঠিত হয়। এতে চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা আগের তুলনায় অনেকাংশে কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। বৃষ্টির পরিমাণ কেমন হবে তা একটা বড় ফ্যাক্টর। তবে এই দুর্ভোগ এবার অনেকটা লাঘব হবে।’ জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অগ্রগতি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন কাজের কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। তবে একটা জিনিস দেখে খারাপ লাগছে, কিছুদিন আগে খাল পরিষ্কার করা হলেও সেখানে এখন আবার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়েছে। এতে মনে হচ্ছে এই কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারি নাই।’
নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। প্রকল্পটির আওতায় নগরের জামালখান খালে সংস্কার কাজ চলছে। নগরের নূর আহমদ সড়কের বিমান অফিস এলাকা থেকে উৎপত্তি খালটি মিলিত হয়েছে নগরের চাক্তাইখালে। সংস্কার কাজের খালটিতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। খালের বিভিন্ন অংশে সম্প্রসারণ ও প্রতিরোধ দেওয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। এতে বৃষ্টির পানি উপচে পড়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
জলাবদ্ধতা নিরসনে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটির পরিচালক সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার কাজ চলছে। এর +মধ্যে ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্প ও দুই হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চউক। ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা/জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ১ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরের বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। চউকের ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পটির পূর্ত কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নগর র জ প রকল প ন রসন
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির প্রার্থীর তালিকায় নেই তারকারা
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে কয়েকজন জনপ্রিয় তারকার মনোনয়ন পাওয়ার গুঞ্জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত প্রার্থী তালিকায় তাদের নাম নেই।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭ আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
শাহরুখের অজানা এই সাত তথ্য জানেন?
মালয়েশিয়ায় পরীমণির দশ দিন
তবে আলোচনায় থাকা কোনো তারকা প্রার্থী চূড়ান্ত তালিকায় আসেননি। সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন (নীলফামারী–৪), মনির খান (ঝিনাইদহ–৩) ও রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা (সিরাজগঞ্জ–১) মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।
তাদের মধ্যে বেবী নাজনীন ও মনির খানের আসনে যথাক্রমে আবদুল গফুর সরকার ও মেহেদী হাসান মনোনয়ন পেয়েছেন। কনকচাঁপার আসনের প্রার্থী এখনো ঘোষণা হয়নি।
২০১৮ সালের নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ–১ আসন থেকেই বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন কনকচাঁপা। তখন আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। এবারের নির্বাচনে আবারো লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানা যায়।
মনির খান ও কনকচাঁপা দুজনই বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতা। এছাড়া দলটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও চলচ্চিত্র অভিনেতা আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বলের নামও আলোচনায় ছিল।
উজ্জ্বল বলেন, “দল যদি মনে করে আমার প্রার্থী হওয়া দরকার, আমি প্রস্তুত।”
বিএনপির এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আপাতত স্পষ্ট—বিনোদন অঙ্গনের জনপ্রিয় মুখগুলো এবারো দলীয় প্রার্থী তালিকার বাইরে থাকছেন।
ঢাকা/রাহাত/মেহেদী