সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী ও শিক্ষার্থী। বিক্ষোভ শেষে রাত ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে শাহবাগ মোড় ‘ব্লকেড’ করেন তাঁরা। এ সময় প্রায় আধা ঘণ্টা সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন চাকরিপ্রত্যাশী ও শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক।

নুরুল হক বলেন, শুধু পিএসসি না, সরকারি বিভিন্ন নিয়োগে যে অস্বচ্ছতা রয়েছে, সেটাকে স্বচ্ছ করা দরকার। ডিসি অফিস, এসপি অফিস, ইউএনও অফিসের প্রশাসন একেবারে ভালো হয়ে যায়নি। আগের মতো এখনো সেই দলবাজি মনোভাব লক্ষ করা যাচ্ছে।

ডাকসুর সাবেক এই ভিপি অভিযোগ করেন, পিএসসিতে বিদ্যমান আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে একটা বিসিএসের নিয়োগ হতেই তিন-চার বছর লেগে যায়। এক বছরের মধ্যে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করার দাবি জানান তিনি।

এরপর রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি টিএসসি হয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে দিয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে যায়। সেখান থেকে সূর্য সেন হলের সামনে দিয়ে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল হয়ে ভিসি চত্বরে যায়। পরে সেখান থেকে রাজু ভাস্কর্য হয়ে শাহবাগে গিয়ে সড়ক অবরোধ করেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।

এ সময় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘শাহবাগ ব্লকেড থেকে আমরা ঘোষণা দিচ্ছি, আগামীকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে যদি আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া না হয়, তাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করব।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা আজকে অল্প সময়ের জন্য শাহবাগ ব্লক করেছি। যদি আমাদের যৌক্তিক দাবি মনে নেওয়া না হয়, তাহলে আমরা শুধু শাহবাগ নয়, পুরো বাংলাদেশ ব্লক করে দেব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র স মন শ হব গ প এসস

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ