‘২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’ বক্তব্যটি শেখ হাসিনার: তাজুল ইসলাম
Published: 30th, April 2025 GMT
‘২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’—অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া অডিও রেকর্ডের এই বক্তব্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ওই অডিও রেকর্ড সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষা করিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে ট্রাইব্যুনালের ফটকে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই কথোপকথনের মাধ্যমে আসামি শেখ হাসিনা বিচারপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছেন।
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে কথা বলেছেন। এর পাশাপাশি বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থানরত নেতা–কর্মীদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন দাবি করে বেশ কয়েকটি অডিও রেকর্ড অনলাইনে ছড়িয়েছে। এগুলোর একটি রেকর্ডে একজনের সঙ্গে কথোপকথনের এক পর্যায়ে একটি নারীকণ্ঠকে বলতে শোনা যায়, সারা দেশে তাঁর নামে ২২৭টি হত্যা মামলা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তিনি ২২৭টি হত্যার লাইসেন্স পেয়েছেন। কারণ, একটি হত্যা মামলায় যে সাজা, দুই শর বেশি হত্যা মামলায়ও সেই সাজা।
আজ দুপুরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের সময়ে এ বিষয়ে কথা বলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এই কথোপকথনটি সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। পরীক্ষা করে সিআইডি মতামত দেয় যে কথোপকথনটি শেখ হাসিনা এবং শাকিল আহমেদের মধ্যেই হয়েছে। এটা বানানো কোনো কনভারসেশন (কথোপকথন) কিংবা এআই দিয়ে তৈরি নয়।’
শেখ হাসিনা ওই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পুলিশ ও মামলার সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আসামি শেখ হাসিনা তাঁর মামলার সাক্ষীদের বাড়িঘর ভাঙচুর করার নির্দেশ দেন। তিনি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, তারা যেন মনে রাখে, তাদের ভবিষ্যতেও চাকরি করতে হবে।’
শেখ হাসিনার এই অডিও রেকর্ড এবং সেটার ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছেন বলে জানান তাজুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, ‘আদালত আগামী ১৫ মে আসামিদের সশরীরে কিংবা আইনজীবীর মাধ্যমে জবাব দাখিল করতে বলেছেন। সেদিন তাঁরা তাঁদের জবাব দাখিল করলে আদালত সে অনুযায়ী পরবর্তী কার্যধারা গ্রহণ করবেন।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত জ ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
নোবিপ্রবির আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা স্থায়ী বহিষ্কার
আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান ভূঁইয়াকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অশ্লীল ও শিষ্টাচার বহির্ভূত মন্তব্য করায় স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরো পড়ুন:
জুলাই বিরোধিতা: ইবির ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’
আ.লীগে যোগ দেওয়া মুবিনকে আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার
সোমবার (৩ নভেম্বর) নোবিপ্রবির রেজিষ্টার (ভারপ্রাপ্ত) মো. তামজীদ হোসাইন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের ৬৭তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত বিদেশে গমন করেন, যা সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল ) বিধিমালা ২০১৮ এর ধারা ২(চ) অনুযায়ী ‘পলায়ন’ ।
এছাড়া একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়েও রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশ করায় ‘নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ,২০০১’ এর ধারা ৪৭(৫) এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
নোটিশে আরো বলা হয়েছে, গত ২৮ মে আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হলে সেটির জবাব যথাযথ হয়নি। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি আপনাকে পুনরায় ৭ জুলাই বিজ্ঞ আইনজীবীর মতামত এবং ৩১ জুলাই প্রেরিত নোটিশের জবাব না দেয়ায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর নোবিপ্রবি রিজেন্ট বোর্ডের ৬৭ তম সভার আলোচ্যসূচি-১৮ এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০১ এর ৪৭(৮) ধারা অনুযায়ী এবং সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল ) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও (গ) অনুযায়ী নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর সহকারী পরিচালক (সামরিক বরখাস্ত) পদ থেকে চূড়ান্ত বা স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো লেনদেন থাকলে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও বিধি অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতির বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে থাকেন এই কর্মকর্তা।
ঢাকা/শফিউল্লাহ/মেহেদী