নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া সমবায় মার্কেট এর সামনে মহান মে দিবস উপলক্ষে শ্রমিক জাগরণ মঞ্চ'র উদ্যোগে  শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক জাগরণ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্রমিক জননেতা জাহাঙ্গীর আলম গোলক, আইন সহায়তা তথ্য রিপোর্টার মানবাধিকার ফাউন্ডেশন এর নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম আরজু, শ্রমিক জাগরণ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটি সাধারণ সম্পাদক -জেসমিন আক্তার, বাংলাদেশ রিপোর্টার্স ক্লাব ট্রাস্টের  নারায়ণগঞ্জ জেলা'র সভাপতি ও মানবাধিকার কর্মী- এস.

এম. জহিরুল ইসলাম বিদুৎ, নিউজ ব্যাংক ২৪ ডট.নেট এর সম্পাদক ও প্রকাশক- আল মামুন খাঁন, সাংস্কৃতিক সংগঠক- জহিরুল ইসলাম মিন্টু, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী-সাজ্জাদ আহম্মেদ খোকন, নাট্য অভিনেতা- আবুল কালাম আজাদ, কণ্ঠশিল্পী ও মানবাধিকার কর্মী-রিয়া খাঁন,সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী- মোহাম্মদ ওয়ার্দে রহমান, মানবাধিকার কর্মী- মো. জাহিদ হোসেন, মানবাধিকার কর্মী শাহানাজ আক্তার সাথী, সমাজ সেবক  শাহানাজ আক্তার মুক্তাসহ সংগঠনের সদস্যবৃন্দ।

এ সময় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক জাগরণ মঞ্চের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি আব্দুস সবুর।
সমাবেশে শ্রমিক জননেতা জাহাঙ্গীর আলম গোলক বলেন, মহান মে দিবস আজ অথচ স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও এখনো বাংলাদেশে শ্রমিকস্বার্থে কিছুই হয়নি । নারায়ণগঞ্জ শহরের মতো সারা দেশে বাড়ছে শিশু শ্রম । বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে নারী শিশু ও শ্রমিকের জীবন মান ।

হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে । শত শত ছোট কারখানা, গার্মেন্টস্, ডগ ইয়ার্ড, রুলিং মিল, জুট মিল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে । শ্রমিকদের কষ্টকর জীবনের কষ্ট আরো বাড়ছে । ভালো জনে থাকে ভাঙ্গা ঘরে মন্দ যে সেজন সিংহাসনে বসে। এ যেনো এক হিরক রাজার দেশে পরিণত হয়েছে। দূর্নীতি বাজ লুটপাট কারি

শ্রমিকদের টাকা আত্মসাৎ কারি বড়লোক মালিকের গোষ্ঠী আজ এই দেশের মালিকানা পেয়ে বসে আছে অথচ যে শ্রমিক জীবন দিয়ে রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছে রাষ্ট্রের চাকা ঘুরাচ্ছে সেই রাষ্ট্রও শ্রমিকদের সাথে প্রতারণা করছে। শ্রমিক তার প্রকৃত সঠিক শ্রমের ন্যায্য মর্যাদাপূর্ণ মজুরি পাচ্ছে না, রেশন,হেল্থ কার্ড দেওয়া হচ্ছে না।

শ্রমিক জাগরণ মঞ্চ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম গোলক আরো বলেন, যতদিন পর্যন্ত শ্রমিকরা তাদের অধিকার আদায়ে জন্য সঠিক সংগঠনকে শক্তিশালী না করবে ততদিন পর্যন্ত এই অবস্থা দুনিয়ার দেশে দেশে ছিলো, এখনো আছে আর যে সকল দেশের শ্রমিকরা জাগরণ তৈরি করতে পেরেছে সেই সব দেশে দেশে শ্রমিকরা প্রথম শ্রেণীর নাগরিক মর্যাদা পেয়েছে। মৌলিক সকল অধিকার পেয়েছে। তাই আমাদের দেশে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ জাগরণ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে ।

শ্রমিক জাগরণ মঞ্চ সেই মৌলিক আন্দোলনটি গড়ে তুলতে সচেষ্ট আছে । নিশ্চয়ই শ্রমিকদের জয় অনিবার্য । দুনিয়ার সব মজদুর এক হও সবাইকে মহান মে দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!

সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। 

এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।  

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। 

এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন। 

এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। 

এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।

একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।

নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।

যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।  

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়। 

২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাইলস্টোন স্কুলে হতাহতদের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
  •  শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের স্বাধীনতা চান নাই : টিপু 
  • নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাথে গিয়াসউদ্দিনের মতবিনিময় সভা
  • সোনারগাঁয়ে ইসলামী আন্দোলনের পরিচিতি সভা ও শপথ গ্রহণ  
  • বন্দর ২০নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রাথমিক সদস্য ফরম বিতরণ 
  • তেল চোর দেলোয়ারকে ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবেন : টিপু
  • নারায়ণগঞ্জে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৫ বিএনপি নেতা বহিষ্কার
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ইজিবাইকের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু
  • কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও সদস্য ফরম বিতরণ
  • সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!