আ.লীগ নেতাসহ দুই শতাধিক ব্যবসায়ী এনসিপিতে
Published: 18th, May 2025 GMT
মাদারীপুরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক পৌর কাউন্সিলরসহ দুই শতাধিক ব্যবসায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দিয়েছেন। শনিবার দুপুরে জেলার রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরে এ যোগদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় রাজৈর উপজেলা এনসিপি নেতাদের হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে যোগ দেন খালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও টেকেরহাট মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল হাওলাদার এবং রাজৈর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রাহিম হাওলাদারসহ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির দুই শতাধিক সদস্য।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজৈর উপজেলা এনসিপি প্রতিনিধি মহাসিন ফকির, জাবের হাওলাদার, আজগর শেখ, তরিকুল ইসলাম, মৎস্য ব্যবসায়ী বাচ্চু বাঘা, স্থানীয় রাজীব বাঘা, মনির ফকিরসহ উপজেলা এনসিপির নেতাকর্মী।
যোগ দেওয়ার পরে আমিনুল হাওলাদার বলেন, আমি গত বছর ৫ আগস্টের আগেই আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেছি। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া আমার দুই ছেলে আন্দোলন করেছে। আমি তাতে সমর্থন করেছি। এনসিপি দল গঠনের পর থেকে দেখছি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করে। দেশকে ভালো একটা পর্যায়ে পৌঁছে দিতে তারা কাজ করে যাচ্ছে। তাদের এই আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি এনসিপিতে যোগ দিয়েছি। মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির যত নেতাকর্মী ও সদস্য আছেন, সবাইকে নিয়ে এনসিপির একটা দুর্গ গড়ে তুলব এবং তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজৈর উপজেলার প্রতিনিধি মহাসিন ফকির জানান, তাদের সততা ও আদর্শ দেখে আমিনুল হাওলাদার, রাহিম হাওলাদারসহ টেকেরহাট মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সবাই এনসিপিতে যোগ দিয়েছেন। অল্প দিনের মধ্যে আরও অনেকেই যোগ দেবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজৈর উপজেলার আরেক প্রতিনিধি জাবের হাওলাদার জানান, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে ভারতের গোলামি করার জন্য নয়। এ দেশে আর যেন কোনো ফ্যাসিস্ট তৈরি না হয়, আর কেউ যেন একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে না পারে, জুলুম-নির্যাতন, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি করতে না পারে, সেজন্য তারা ছাত্র-জনতা, আলেম-ওলামাকে ঐক্যবদ্ধ করে প্রতিহত করবেন। তারা বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়ে তুলতে চান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প আওয় ম ল গ মৎস য ব যবস য় র জ র উপজ ল এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্প কীভাবে ‘ম্যাডম্যান তত্ত্ব’ ব্যবহার করে বিশ্ব বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গত মাসে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ইরানে হামলায় তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন কি না। জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এটা করতে পারি। আবার আমি না-ও করতে পারি। আমি কী করতে যাচ্ছি, তা কেউই জানে না।’
ট্রাম্প বিশ্বকে এমনটা বিশ্বাস করতে দিয়েছিলেন যে ইরানকে আলোচনা শুরুর সুযোগ দিতে দুই সপ্তাহ হামলা স্থগিত রাখার বিষয়ে তিনি সম্মত হয়েছেন। কিন্তু পরে এ সময়ের মধ্যেই তিনি হামলা চালিয়ে বসেন।
এ ঘটনায় একটি প্রবণতা সামনে এসেছে, ট্রাম্পের সম্পর্কে সবচেয়ে অনুমেয় বিষয়টি হলো তাঁর অননুমেয় আচরণ। তিনি তাঁর চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করেন। তিনি স্ববিরোধী কাজ করেন। তাঁর কথা আর কাজে মিল নেই।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক পিটার ট্রুবোউইৎজ বলেন, ‘(ট্রাম্প) একটি অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়া তৈরি করেছেন, অন্তত পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে। সম্ভবত (প্রেসিডেন্ট) রিচার্ড নিক্সনের পর থেকে এটিই সবচেয়ে কেন্দ্রীভূত।’ তিনি বলেন, ‘এটি নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তগুলোকে ট্রাম্পের আচরণ, তাঁর পছন্দ ও মেজাজ-মর্জির ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল করে তুলেছে।’
ট্রাম্প তাঁর এই বৈশিষ্ট্যকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। তিনি তাঁর নিজের অননুমেয় আচরণকে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ও রাজনৈতিক সম্পদে পরিণত করেছেন। তিনি এই অননুমেয় আচরণকে একটি মতবাদ বা নীতির পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। আর এখন যে ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য তিনি হোয়াইট হাউসে নিয়ে এসেছেন, সেটিই পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। এটি বিশ্বব্যবস্থার বিদ্যমান কাঠামো পাল্টে দিচ্ছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এটিকে ‘ম্যাডম্যান থিওরি’ বা ‘খ্যাপাটে তত্ত্ব’ বলে থাকেন। এই তত্ত্বে একজন বিশ্বনেতা তাঁর প্রতিপক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, তিনি নিজের মেজাজ-মর্জিমতো যেকোনো কিছু করতে সক্ষম, যাতে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করা যায়। সফলভাবে ব্যবহার করা হলে এটি একধরনের জবরদস্তি বা চাপ প্রয়োগের কৌশল হতে পারে। ট্রাম্প বিশ্বাস করেন, এটি সুফল দিচ্ছে এবং এর মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের তাঁর পছন্দমতো অবস্থানে নিয়ে আসতে পারছেন।
কিন্তু এটি কি এমন পদ্ধতি, যা শত্রুদের বিরুদ্ধেও কাজে দেবে? আর এর ত্রুটি কি এমনটি হতে পারে যে এটি প্রতিপক্ষকে বোকা বানানোর জন্য তৈরি করা একটি কৌশল না হয়ে বরং সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুস্পষ্ট চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে গঠিত, যার ফলে তাঁর আচরণ আরও সহজে অনুমানযোগ্য হয়ে ওঠে?
কথার আক্রমণ, অপমান ও কাছে টানা
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কাছে টেনে আর আমেরিকার মিত্রদের কথার আক্রমণের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করেন। তিনি কানাডাকে অপমান করে বলেছিলেন, দেশটির যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যাওয়া উচিত।
ট্রাম্প বলেছিলেন, গ্রিনল্যান্ডকে (আমেরিকার মিত্র ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগের কথা বিবেচনা করতে তিনি প্রস্তুত। তিনি আরও বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত পুনরায় পানামা খালের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।
সামরিক জোট ন্যাটো সনদের ৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রতিটি সদস্যদেশ অন্য দেশকে রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের এ অঙ্গীকারকে সংশয়ের মধ্যে ফেলে দেন। যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, ‘আমি মনে করি, (ন্যাটো সনদের) ৫ অনুচ্ছেদ লাইফ সাপোর্টে আছে।’
ন্যাটো সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (প্রথম সারিতে বাঁ থেকে চতুর্থ) ও বিশ্বনেতারা