টানা বৃষ্টিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বেশকিছু এলাকার পাকা ধান এখন পানিতে ভাসছে। প্রায় ৮০ ভাগ ধান কাটা হলেও বাকি ধান নিয়ে বিপদে পড়েছেন কৃষক। শ্রমিক মিলছে না। ধান থেকে চারা গজিয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে হাঁটু পানিতে নেমে অনেকেই ধান কেটে ঘরে তুলছেন।
চলতি মাসে মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলায় ২৫৮ মিলি বৃষ্টি রেকর্ড করেছে কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে গত ২৩ থেকে ২৬ মে পর্যন্ত ১৩৮ মিলি বৃষ্টি হয়েছে। এতে মাঠের ফসলের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিন নাচোল উপজেলার কামার জগদইল গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কেটে রাখা ধান জমির আইলে পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে। অনেকেই রাস্তার পাশে উঁচু জায়গায় স্তূপ করে রেখেছেন মাড়াইয়ের জন্য। কাঙ্ক্ষিত রোদ না ওঠায় মাড়াই বা শুকানো যাচ্ছে না। স্তূপ করা ধানে চারা গজিয়ে গেছে।
এ সময় কথা হয় কৃষক এনায়েত উল্লাহর সঙ্গে। তিনি জানান, চলতি মৌসুমে ৮০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। ক্ষেতের পাশে স্তূপ করে রাখা অনেক ধান ভেসে গেছে। তিনি তিন বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলেন। সব ধান তলিয়ে গেছে। শ্রমিক না পেয়ে নিজেই তিন দিন ধরে ধান কাটছেন। কাটা ধানের ৬০ ভাগই নষ্ট হয়ে গেছে।
একই এলাকার কৃষক বিজয় চন্দ্র বর্মন বলেন, আবহাওয়া ভালো না বলে মাঠ থেকে ধান নেওয়া যাচ্ছে না। শ্রমিকও বেশি বেশি মজুরি চাচ্ছেন। ধান দিয়ে এবার লাভ দূরে থাক, উৎপাদন খরচ তোলাই কষ্টকর হবে।
কৃষক আদেশ্বর জানান, পাঁচ বিঘা বোরো ধান লাগিয়েছিলাম। ফলন ভালো হয়েছিল। বেশির ভাগ ধান কেটে জমিতে আঁটি বেঁধে রেখেছিলাম। তিন দিনের বৃষ্টিতে সব শেষ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর জেলায় ৫১ হাজার ৯৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ৪৭ হাজার ৭৩০ হেক্টর। জিরাশাইল, সরু জাতের জিরাশাইলসহ দেশি জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় চার হাজার হেক্টর কম জমিতে ধানের আবাদ হলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। ধান বিক্রি করে সংসারে সচ্ছলতার আশায় বুক বেঁধেছিলেন কৃষক। এক সপ্তাহের ভারী বৃষ্টিতে সেই আশা ভঙ্গ হয়েছে। ধান এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের।
সদর উপজেলার আতাহি গ্রামের সম্বন্বিত কৃষি খামার বরেন্দ্র কৃষি উদ্যোগের মালিক মুনজের আলম মানিক জানান, এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হলেও অপ্রত্যাশিত বৃষ্টির কারণে অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁর জমিতে উন্নত জাতের ধান আবাদ করেছেন। বেশির ভাগ ধান বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলের ৭ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে টাঙ্গাইলে ৮টি আসনের মধ্যে ৭টিতে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন। তবে, টাঙ্গাইল-৫ আসনের প্রার্থী পরে ঘোষণা করা হবে।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজার-১ আসনে ধানের শীষের কাণ্ডারী সালাহউদ্দিন
বিএনপির মনোনয়ন পেলেন নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী
প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন, টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে ওবায়দুল হক নাসির, টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফর রহমান মতিন, টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ারে) আসনে উপজেলা বিএনপির সদস্য রবিউল আউয়াল লাভলু, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী এবং টাঙ্গাইল-৮ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর টাঙ্গাইলের বিভিন্ন স্থানে প্রার্থীর সর্থকদের উল্লাস করতে দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ৮টি আসনের মধ্যে সব আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রার্থী ছিল। এর মধ্যে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে একাধিক প্রার্থী থাকলেও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল ব্যাপক গণসংযোগে করেছেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের ধারণা ছিলো, টুকু ও ফরহাদের মধ্যে একজন টাঙ্গাইল-৫ আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন।
ঢাকা/কাওছার/রফিক