হেলমেট ধরে টানার ঘটনায় শাস্তি পেলেন তিন ক্রিকেটার
Published: 30th, May 2025 GMT
বাংলাদেশ–দক্ষিণ আফ্রিকার ইমার্জিং দলের ম্যাচে বাগ্বিতণ্ডা ও হেলমেট ধরে টানাটানির ঘটনায় শাস্তি পেয়েছেন তিন ক্রিকেটার। দুজন দক্ষিণ আফ্রিকার—ইনোসেন্ট এনতুলি ও মিকায়েল প্রিন্স, একজন বাংলাদেশের রিপন মণ্ডল। আইসিসির কোড অব কন্ডাক্ট অনুযায়ী তাঁদেরকে সাসপেনশন পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে একটি সূত্র।
‘বাজে ভাষা’ ব্যবহার করে এনতুলিকে উত্তপ্ত করার কারণে দুটি সাসপেনশন পয়েন্ট পেয়েছেন বাংলাদেশের পেসার রিপন। আর রিপনকে ধাক্কা ও হেলমেট ধরে টানায় চারটি সাসপেনশন পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে এনতুলিকে। একই ঘটনায় রিপনের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে আঙুল উঁচিয়ে কথা বলায় একটি সাসপেনশন পয়েন্ট পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মিকায়েল প্রিন্স। এই পয়েন্ট অনুযায়ী ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে বিসিবি ও ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যবস্থা নেবে।
ক্রিকেটারদের শাস্তি প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে ম্যাচ রেফারি সেলিম শাহেদ বলেছেন, ‘শাস্তির বিষয়ে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বোর্ডকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু সিরিজে আর ম্যাচ নেই, বোর্ডই ব্যবস্থা নেবে। দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যানেজারকে ভিডিও প্রমাণসহ ই–মেইলও করা হয়েছে।’
ঘটনাটি বুধবার মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ইমার্জিং–দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং দ্বিতীয় চার দিনের ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের। বাংলাদেশ ইমার্জিংয়ের ১০৫তম ওভারে এনতুলির বলে ছক্কা মারেন রিপন। এরপর বোলারের উদ্দেশে রিপন কিছু বলার পর এনতুলি তাঁর দিকে এগিয়ে যান।
বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে রিপনের হেলমেট ধরে টান দেন এনতুলি, অনেকটা নুইয়ে পড়েন বাংলাদেশের পেসার। তখন রিপনের দিকে আঙুল উঁচিয়ে কথা বলতে দেখা যায় মিকায়েলকে। পরে আম্পায়াররা এসে পরিস্থিতি ঠান্ডা করেন। দুই বল পর রিপনের দিকে বল ছুড়ে মারেন এনতুলি।
শেষ দুই দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছে। এর আগে প্রথম ইনিংসে ৩৭১ রান করে বাংলাদেশ ইমাজিং। বৃষ্টির আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং তোলে ৬ উইকেটে ১৫২ রান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।
মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।
জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।
এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।
ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।
আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগেফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে