আসন্ন জাতীয় বাজেটে ক্ষেতমজুর ও গ্রামীণ শ্রমজীবীদের জন্য রেশনিং ও পেনশন চালুর দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে নেতারা বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে গরিব মানুষ বাঁচতে পারছে না। তারা দিনরাত পরিশ্রম করেও তিন বেলা খেতে পায় না, বঞ্চিত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা ও সন্তানদের শিক্ষার অধিকার থেকেও।

ক্ষেতমজুর সমিতির সভাপতি ডা.

ফজলুর রহমান বলেন, প্রতিবছর লক্ষ কোটি টাকার বাজেট হয়, কিন্তু গরিব মানুষের কষ্ট কমে না। এবার একটি গরিববান্ধব বাজেট চাই। তিনি ষাটোর্ধ্ব মজুরদের জন্য মাসিক ১০ হাজার টাকা পেনশন এবং দরিদ্র মানুষের জন্য চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপণ্যের রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সমিতির কার্যকরী সভাপতি আনোয়ার হোসেন রেজা, সাধারণ সম্পাদক অর্ণব সরকার, সহসাধারণ সম্পাদক কল্লোল বণিক, নির্বাহী সদস্য অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, মোতালেব হোসেন, রমেন্দ্র চন্দ্র বর্মণ, সুখেন্দ সূত্রধর ও ফিরোজ আলম মামুন।

অর্ণব সরকার বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে গরিব মানুষ তার সামান্য অংশই পায়। বৃদ্ধ ভাতা মাত্র ৬৫০ টাকা, এ টাকায় কি একজন বৃদ্ধ মাস পার করতে পারে?

সমিতির নেতারা বলেন, ’২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানে সাধারণ মানুষের রক্তের বিনিময়ে যে “শোষণমুক্ত সমাজ” প্রতিষ্ঠার আশা করা হয়েছিল, তার কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। বরং ধনী-গরিব বৈষম্য আরও বেড়েছে।

তাঁরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাজেটে গ্রামীণ মজুরদের জন্য যথাযথ বরাদ্দ না থাকলে আবার রাজপথে নামতে বাধ্য হবেন। একই দাবিতে আগামীকাল শনিবার (৩১ মে) দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ক্ষেতমজুর সমিতির উদ্যোগে বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে জানান নেতারা।

সমাবেশ শেষে একটি মিছিল রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ষ তমজ র দ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ