অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার কামাল আহদেম মজুমদার
Published: 4th, June 2025 GMT
রাজধানীর বনানী থানায় অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায় সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমান তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে বনানী থানা পুলিশ কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে। আদালত শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। বুধবার সকালে কামাল আহমেদ মজুমদারকে আদালতে হাজির করা হয়। বেলা ১২টার দিকে শুনানিকালে তাকে এজলাসে তোলা হয়। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
বনানী থানার এসআই মো.
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত বছরের ২৫ আগস্ট জারি করা এক প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য প্রদত্ত সকল আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়। স্থগিত করা লাইসেন্সভুক্ত আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই তারিখের মধ্যে অস্ত্র ও গোলাবারুদ থানায় জমা না দেওয়া হলে তা অবৈধ অস্ত্র হিসেবে গণ্য করে অস্ত্র আইনে মামলা হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসামি কামাল আহমেদ মজুমদার তার দুটি আগ্নেয়াস্ত্র নিজে অথবা অন্য কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে বনানী থানায় বা অন্য কোনো থানায় জমা দিয়েছেন কি না, সে বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে থানাকে অবহিতও করেননি তিনি। তার অস্ত্রের লাইসেন্স ঠিকানায় উপস্থিত হয়ে বাসায় কাউকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/এম/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সেই ছাগল এখন কোথায়
বিক্রেতা কারাগারে, ক্রেতা লোকচক্ষুর আড়ালে, ক্রেতার মা–বাবা কারাগারে, ভাই–বোন মামলার আসামি। একটি ছাগল ঘিরে এত কিছু ঘটে গেল, কিন্তু সেই ছাগল রয়েছে ছাগলের জায়গায়।
বলছি মতিউরের সেই ছাগলের কথা। বাদামি গায়ে ছোপ ছোপ দাগ, আকারে বেশ বড়। ২০২৪ সালে পবিত্র ঈদুল আজহায় সবচেয়ে আলোচিত ছিল এই ছাগল।
যাঁরা ভুলে গেছেন, তাঁদের মনে করিয়ে দিই, ২০২৪ সালের পবিত্র ঈদুল আজহার আগে সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ছাগলটি কেনেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তৎকালীন সদস্য মতিউর রহমানের দ্বিতীয় ঘরের সন্তান মুশফিকুর রহমান (ইফাত)। সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন তখন ছাগলটির দাম নেন ১৫ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন‘উচ্চবংশীয়’ ছাগলের খামার সাদিক অ্যাগ্রোর চেয়ারম্যান ইমরান গ্রেপ্তার০৩ মার্চ ২০২৫মতিউরের ছেলে মুশফিকুর ছাগলটির সঙ্গে একটি সেলফি তুলে ফেসবুকে দেন। সে–ই শুরু। নেটিজেন ও পরে সাংবাদিকেরা বের করে ফেলেন, এই ছাগলের ক্রেতা এনবিআরের একজন কর্মকর্তার ছেলে। একজন সরকারি কর্মকর্তার ছেলে কীভাবে এত দাম দিয়ে একটি ছাগল কেনেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মতিউর দাবি করেন, ছাগলের ক্রেতা তাঁর ছেলে নন। পরে অবশ্য অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, মতিউরের আরেক স্ত্রী আছেন। সেই ঘরের সন্তান ছাগলের ক্রেতা মুশফিকুর।
ছাগল–কাণ্ডের পর মতিউর এনবিআর থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। অবশ্য সবকিছু সেখানে শেষ হয়ে যায়নি। বেরিয়ে আসতে থাকে নানা কেলেঙ্কারির তথ্য। চাপের মুখে ২০২৪ সালের ৩ জুলাই সাদিক অ্যাগ্রোতে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দেশে আমদানি–নিষিদ্ধ ব্রাহামা জাতের পাঁচটি গরু উদ্ধার করা হয়। পরে মামলা দেওয়া হয় সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ও খামারমালিক সমিতির সভাপতি ইমরানের বিরুদ্ধে।
এদিকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। গত জানুয়ারিতে দুদক অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মতিউর ও তাঁর প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ, তাঁদের ছেলে তৌফিকুর রহমান ও মেয়ে ফারজানা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করে। ১৫ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হন মতিউর ও তাঁর স্ত্রী লায়লা।
আরও পড়ুনছাগল–কাণ্ড: গত বছর ঈদে ইফাত এক খামার থেকেই কেনেন ৬টি পশু ২২ জুন ২০২৪মতিউরের আইনজীবী ওয়াহিদুজ্জামান গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, মতিউর ও লায়লা কারাগারে আছেন। তাঁরা জামিন পাননি। মুশফিকুর মাইনর, অর্থাৎ ঘটনার সময় বয়স ১৮ হয়নি। তিনি বিদেশে আছেন।
মতিউরের প্রথম ঘরের ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান, মেয়ে ফারজানা রহমান (ঈশিতা) এবং দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তার পলাতক।
ছাগলটি কোথায়
মুশফিকুর সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ছাগলটি কিনলেও তা শেষ পর্যন্ত নেননি। সেটি রয়ে যায় সাদিক অ্যাগ্রোর মোহাম্মদপুরের খামারে। খামারটি ‘অবৈধ’ভাবে সরকারি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছিল জানিয়ে ২০২৪ সালের জুনে তার বড় অংশ ভেঙে দেয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
সাদিক অ্যাগ্রো সূত্র জানায়, পরে তারা অন্যান্য গরু–ছাগলের সঙ্গে আলোচিত ছাগলটিও সরিয়ে সাভারে নিজেদের আরেক খামারে নেয়। এখনো ছাগলটি সেই খামারে আছে। গতকাল সাদিক অ্যাগ্রোর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ছাগলটি তাঁদের কাছেই আছে। বিক্রি না করে তাঁরা এটি দরিদ্রদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার চিন্তা করছেন।
ছাগলের যা–ই হোক, ছাগল–কাণ্ডকে কেন্দ্র করে মতিউর–পরিবার বিচারের আওতায় আসছে।