ভারতের গুজরাট প্রদেশের রাজধানী আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজ (বোয়িং ৭৮৭-৮) বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। পর্যাপ্ত থ্রাস্ট (আকাশে ওঠার শক্তি) না পাওয়া, দুই ইঞ্জিনই বিকল হয়ে যাওয়া, ফুয়েল মিটারিং সিস্টেম বন্ধ হওয়া কিংবা বার্ড স্ট্রাইক (পাখির সঙ্গে সংঘর্ষ) মতো কারণগুলোকে সামনে রেখে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ভারতীয় তদন্তকারীদের সঙ্গে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরাও যোগ দিয়েছেন। সহায়তা দেবে বোয়িংও।
ভিডিও বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উড়োজাহাজটি ৬২৫ ফুট উঁচুতে উঠে আর ওড়ার শক্তি পাচ্ছিল না। শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি এক্স পোস্টে লেখেন, ধ্বংসের দৃশ্যটি দুঃখজনক।
শুক্রবার রয়টার্সকে দুটি পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে। পোস্টমর্টেম কক্ষের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, পরিবার মুখ দেখে শনাক্ত করায় ছয়টি মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে ভারত সরকার এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমান বহর বন্ধ রাখার কথা ভাবছে। অন্যদিকে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে বোমা আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়েছে একটি ফ্লাইট।
বিবিসির যাচাই করা ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানটি আবাসিক এলাকার ওপর দিয়ে খুব নিচু দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত ফ্লাইট ডেটা অনুসারে, বিমানটি ৬২৫ ফুট (প্রায় ১৯০ মিটার) উচ্চতা পর্যন্ত উঠেছিল। এর পর বিমানটি ওড়ার শক্তি হারিয়ে ফেলে এবং ক্রমেই নিচে নেমে যায় ও বিস্ফোরণ ঘটে। বিমানটি আকাশে ছিল মাত্র ৩০ সেকেন্ড।
বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে (স্থানীয় সময়) উড্ডয়ন করে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রাকালে ফ্লাইট এআই১৭১ গুজরাট বিমানবন্দরের কাছাকাছি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। তাতে ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন। একজন বাদে বাকি সবারই মৃত্যু ঘটেছে। মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের ওপর আছড়ে পড়ায় ছয় শিক্ষার্থী মারা গেছেন। বিমানটি চালাচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সাবহারওয়াল ও কো-পাইলট ক্লাইভ কুন্ডার। বিমান চালনায় তাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে।
আকাশে ওড়ার আগে শেষ মুহূর্তে তোলা একটি ছবি শেষ স্মৃতি হয়ে রইল। বিমানে থাকা চিকিৎসক দম্পতি ও তাদের তিন শিশুর সেই সেলফি এখন সবার হৃদয়ে দাগ কেটেছে। ছবিতে দেখা যায়, ডা.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নিউ ইয়র্কে নিহত বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে যা জানা গেলো
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল ম্যানহাটনে একটি বহুতল অফিসে বন্দুক হামলায় নিহত হয়েছেন নিউ ইয়র্ক পুলিশের কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম (৩৬)। জানা গেছে, তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অভিবাসী ছিলেন। খবর রয়টার্সের।
নিহত কর্মকর্তা দিদরুল ইসলামকে একজন ‘বীর বাংলাদেশি অভিবাসী’ হিসেবে উল্লেখ বর্ণনা করেছেন নিউ ইয়র্কের মেয়র এবং নিউ ইয়র্কের পুলিশ কমিশনার। তারা বলেছেন, ওই কর্মকর্তা নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে অন্যদের জীবন রক্ষা করেছিলেন।
সোমবার ম্যানহাটনের মিডটাউন অফিস টাওয়ারের ভেতরে এক বন্দুকধারী হামলা চালিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম (৩৬) সহ চারজনকে হত্যা করে। হামলাকারী পরবর্তীতে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
পুতিনকে এবার ১২ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন ট্রাম্প
নিউ ইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৪
নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “ভয়াবহ একটি বন্দুক সহিংসতার ঘটনায় আমরা চারটি প্রাণ হারিয়েছি, যার মধ্যে নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশ বিভাগের একজন সদস্য ‘অফিসার ইসলাম’ রয়েছেন।
অ্যাডামস জানান, নিহত অফিসার তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে নিউ ইয়র্ক পুলিশে কর্মরত ছিলেন এবং তিনি বাংলাদেশ থেকে আসা একজন অভিবাসী।
মেয়র বলেন, “হামলার সময় অফিসার ইসলাম অন্যদের জীবন রক্ষা করছিলেন, তিনি নিউ ইয়র্কবাসীদের রক্ষা করছিলেন। তিনি এই শহরকে ভালোবাসতেন এবং আমরা যাদের সাথে কথা বলেছি তারা সবাই বলেছেন যে, তিনি একজন সৎ মানুষ ও ঈশ্বরে বিশ্বাসী ব্যক্তি ছিলেন।”
মেয়র আরো জানিয়েছেন, সোমবার রাতে তিনি অফিসর ইসলামের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন।
মেয়র আরো বলেন, “আমি তাদেরকে বলেছি, অফিসার ইসলাম একজন একজন বীর এবং আমরা তার ত্যাগের প্রশংসা করি।”
নিউ ইয়র্কের পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ সংবাদ সম্মেলনে জানান, অফিসার ইসলাম বিবাহিত ছিলেন এবং তার দুটি সন্তান ছিল। তার স্ত্রী তৃতীয় সন্তানের মা হতে চলেছেন।
পুলিশ কমিশনার বলেন, “অফিসার ইসলাম নিজেকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছিলেন। তিনি চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন, তাকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।”
ঢাকা/ফিরোজ