ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্রের পর ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে ইরান। শনিবার প্রথম প্রহরেই এই হামলা শুরু করেছে তেহরান। খবর বিবিসি ও আল-জাজিরা অনলাইন।

শুক্রবার ভোররাতে তেহরানে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের সদর দপ্তরে হামলা চালায় ইসরায়েল। এছাড়া ইরানের নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনায়ও হামলা হয়েছে। এই হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর প্রধান, বিপ্লবী বাহিনীর প্রধান এবং দুজন পরামণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। ইরান এই হামলার কঠোর জবাব দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল।

ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে ইরান ‘চূর্ণবিচূর্ণ’ প্রতিশোধ নেওয়া শুরু করেছে।

আরো পড়ুন:

ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানাল বাংলাদেশ

ইরান চুক্তি না করলে ইসরায়েল আরো নৃশংস হামলা চালাবে: ট্রাম্প

বার্তা সংস্থাটি বলেছে, “কয়েক মিনিট আগে অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের মাধ্যমে ইহুদিবাদী সরকারের নৃশংস আক্রমণের চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।”

আল-জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিব থেকে সরাসরি ফুটেজে দেখা গেছে কিছুক্ষণ আগে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং তারপর ধোঁয়ার কুণ্ডলী বাতাসে উড়ছে।

হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইরান কিছুক্ষণ আগে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে এবং তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই হুমকি রোধে কাজ করছে।

বিবিসি জানিয়েছে, জেরুজালেমের আকাশে উজ্জ্বল ঝলকানি দেখা যাচ্ছে। শহর থেকে জোরে জোরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনার কথা জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদদাতা।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানে আহত সামিউলের দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়

কোটা সংস্কার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় ভূমিকা রাখা বাগেরহাটের ছাত্র সামিউল ইসলাম এখন চরম অসহায়ত্ব ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন পার করছেন। হামলায় গুরুতর আহত হওয়ায় তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। এমনকি, ঠিকভাবে বসতেও পারেন না সামিউল।

২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বাগেরহাট কোর্ট চত্বরে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের হামলার শিকার হন সামিউল ইসলাম। এতে তার হাতের পেশি কেটে যায় এবং মাথা ও পিঠে গুরুতর আঘাত লাগে। নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরও পুরোপুরি সুস্থ হননি তিনি। 

এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা সামিউল ইসলামের। ২৬ জুন শুরু হতে যাওয়া পরীক্ষায় অংশ নেওয়া নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। তার পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা দাবি জানিয়েছেন, অসুস্থ শিক্ষার্থীদের জন্য যেমন পরীক্ষায় বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়, সেরকম ব্যবস্থা করা হোক সামিউলের জন্যও।

সামিউলের প্রতিবেশী শামসুদ্দোহা বলেছেন, “সামিউল হামলায় আহত হওয়ার পর থেকেই নানা সমস্যায় ভুগছে। সরকারিভাবে যেভাবে অসুস্থদের সহায়তা দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়, সেভাবে তাকেও সুযোগ দেওয়া হোক।”

সামিউলের বাবা আইয়ুব আলী শেখ বলেছেন, “আমার একমাত্র ছেলে এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি। এখনো তার পিঠ ও হাতে ব্যথা আছে। অনেক খরচ করে চিকিৎসা করালেও উন্নতি হয়নি। সরকার যেন উন্নত চিকিৎসা ও পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেয়।”

সামিউলের মা রুবিয়া বেগম বলেছেন, “ছাত্রলীগের হামলায় ওর যা অবস্থা হয়েছে, তা বলার মতো না। আমরা ওকে ভয়ে কোথাও নিতে পারিনি। এখন সে কিছুই করতে পারে না। পরীক্ষা দিতে পারলে হয়ত ভবিষ্যতের একটা রাস্তায় পৌঁছাতে পারত।”

সামিউল ইসলাম বলেছেন, “আমি এখনো স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারি না। খেতেও কষ্ট হয়। লেখালেখি করতে পারি না। এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার স্বপ্ন ছিল, কিন্তু এখনো সুস্থ না হওয়ায় সব অনিশ্চিত হয়ে গেছে। আমি চাই, সরকার যেন আমাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেয় এবং উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।”

আন্দোলনের সহযোদ্ধা মো. রেজুয়ান শেখ বলেন, “ছাত্রলীগ রামদা ও হকিস্টিক দিয়ে সামিউলের ওপর হামলা চালায়। সে এখন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে কি না, তা নিয়েই শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আমরা সরকারের সহযোগিতা চাই।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাগেরহাট জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক নাঈম শেখ বলেছেন, “সামিউলের চিকিৎসা এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। সে আমাদের আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। তার বর্তমান অবস্থা আমাদের ব্যথিত করে।”

রাংদিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন বলেছেন, “সামিউল মেধাবী শিক্ষার্থী। সরকার যদি তাকে বিশেষ সুবিধা দেয়, তাহলে সে ভালো ফল করতে পারবে।”

ঢাকা/শহিদুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ