পুরান ঢাকায় ঐতিহ্যবাহী স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধের দাবি আরবান স্টাডি গ্রুপের
Published: 17th, June 2025 GMT
রাজধানীর পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলোর ওপর চলমান ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে তা বন্ধের দাবি জানিয়েছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্য নিয়ে কাজ করা সংগঠন আরবান স্টাডি গ্রুপ (ইউএসজি)।
সোমবার সন্ধ্যায় ইউএসজির প্রধান নির্বাহী তাইমুর ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে ৬টি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে পুরান ঢাকায় ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলোর ওপর চলমান ধ্বংসযজ্ঞ অবিলম্বে বন্ধ করা, তালিকাভুক্ত সব স্থাপনাকে যথাযথভাবে সুরক্ষা দেওয়া এবং সংরক্ষণ নিশ্চিত করা, ঢাকা মহানগরীর ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী আরবান স্টাডি গ্রুপের তালিকাভুক্ত সব স্থাপনার সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুরান ঢাকার একাধিক ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন ভবন ধ্বংসের যে অপতৎপরতা চলছে, তা চরমভাবে উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত করেছে। এই ভাঙচুরের ঘটনাগুলো ঘটেছে কখনো বেসরকারি ভবনে, কখনো সরকারি মালিকানাধীন বা ব্যবস্থাপনাধীন ভবনে এমনকি হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে কিংবা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন স্থাপনাতেও।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে ঈদুল আজহার আগে টিপু সুলতান রোডের শতবর্ষী শঙ্খনিধী হাউজ (রাধাকৃষ্ণ মন্দির), ফরাশগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা মঙ্গলালয়ে আবারও ভাঙচুর, উচ্চ আদালতের রায় লঙ্ঘন করে সরকারি উদ্যোগে শতবর্ষী নারিন্দা স্যুয়ারেজ পাম্পিং স্টেশন, নারী জাগরণের অগ্রদূত নূরজাহান বেগমের বাসভবন (নাসিরউদ্দিন স্মৃতি ভবন হিসেবে পরিচিত) ভাঙার ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে উদ্বেগ জানানো হয়।
আরও পড়ুনপুরান ঢাকার পুরাকীর্তিগুলো কি হারিয়ে যাবে২৯ ডিসেম্বর ২০২৩.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২০, আহত তিন শতাধিক
উত্তর আফগানিস্তানে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রায় ৩২০ জন আহত হয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শরাফাত জামান আজ সোমবার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, বালখ এবং সামাঙ্গান প্রদেশে প্রাথমিকভাবে নিহত ও আহতের সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে, যেখানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ভূমি অফিসকে আস্থার প্রতিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে: সিনিয়র সচিব
ফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬৯
ক্ষতি প্রত্যক্ষকারী এএফপির সাংবাদিকের মতে, ভূমিকম্পে ১৫ শতকের স্মৃতিস্তম্ভ মাজার-ই-শরিফের নীল মসজিদও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল আফগানিস্তানের খুলম থেকে ২২ কিলোমিটার (১৪ মাইল) পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং ২৮ কিলোমিটার গভীরে। স্থানীয় সময় রাত ১২ টা ৫৯ মিনিটে এটি আঘাত হানে বলে জানিয়েছে ইউএসজিএস।
আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় বলেছে, উদ্ধার ও জরুরি সহায়তা দলগুলো বালখ এবং সামাঙ্গান প্রদেশের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছেছে। আহতদের স্থানান্তর ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তাসহ উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ভূমিকম্পে মাজার-ই-শরিফের নীল মসজিদ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এএফপি জানিয়েছে, অলঙ্কৃত কাঠামোর টুকরো, বিশেষ করে এর একটি মিনার ভেঙে মাটিতে পড়ে গেছে।
শতাব্দী প্রাচীন এই স্থানটি আফগানিস্তানের সবচেয়ে সম্মানিত ধর্মীয় নিদর্শনগুলোর মধ্যে একটি এবং ইসলামিক ও সাংস্কৃতিক উৎসবের সময় একটি প্রধান সমাবেশস্থল। এটি দেশটির কয়েকটি পর্যটন স্থানের মধ্যে একটি।
রাজধানী কাবুল এবং আফগানিস্তানের আরো কয়েকটি প্রদেশেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পাহাড় থেকে পাথর পড়ার কারণে কাবুলের সঙ্গে মাজার-ই-শরিফের সংযোগকারী একটি প্রধান মহাসড়ক কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যায়, তবে পরে রাস্তাটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফগানিস্তান ধারাবাহিকভাবে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠছে। অর্থনৈতিক সংকটে থাকা দেশটি প্রায়শই এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় অসুবিধার সম্মুখীন হয়, বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
গত ৩১ আগস্ট পাকিস্তান সীমান্তের কাছে পূর্ব আফগানিস্তানে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। তালেবান সরকারের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প এবং তার পরে শক্তিশালী আফটারশকে কমপক্ষে চার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ঢাকা/ফিরোজ