গাজার পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ ও অমানবিক’: জাতিসংঘ
Published: 17th, June 2025 GMT
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে সেখানকার পরিস্থিতি এখন ‘ভয়াবহ ও অমানবিক কষ্টকর’ বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক। সোমবার জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫৯তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বার্ষিক প্রতিবেদনে উপস্থাপনের সময় টুর্ক বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের সামরিক অভিযান এবং যুদ্ধের পদ্ধতি গাজায় ভয়াবহ ও অযৌক্তিক মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করছে।’
টুর্ক বলেন, ‘ইসরায়েল খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এবং জীবনরক্ষাকারী ত্রাণ আটকে দিচ্ছে। আমি হতাশাগ্রস্ত বেসামরিক মানুষের ওপর হামলার নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি শীর্ষ কর্মকর্তাদের ‘মানবতাবিরোধী ও ঘৃণা ছড়ানো বক্তব্য’ ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর অপরাধের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
গতকাল সোমবার ভোর থেকে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৫ জন নিহত হয়েছেন রাফায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে সহায়তা নিতে এসে। ওই ত্রাণ কেন্দ্রটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালনা করে।
গাজা সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, তাদের মরদেহ ও আহত ২০০ জনের বেশি মানুষকে খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকার রেড ক্রস ফিল্ড হাসপাতাল ও নাসের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৯ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৫ হাজার ৩৬২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বিপুলসংখ্যক শিশু রয়েছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক সামরিক বিশ্লেষক ট্রিটা পার্সি আল জাজিরাকে বলেছেন, ইরানকে ভুলভাবে মূল্যায়ন করেছে ইসরায়েল। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল মনে করেছিল, এটি হবে শরণার্থী শিবিরে বোমা ফেলার মতো সহজ, কিন্তু তারা কঠোর প্রতিরোধের মুখে পড়েছে।’
অন্যদিকে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন জানিয়েছেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গাজায় আরও মানবিক ত্রাণ প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে বলে তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ জ গণহত য ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
তিন-তিনটি সুপার ওভারের এক বিরল ও শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ
ক্রিকেট যখন নাটকীয়তা ছুঁয়ে যায়, তখন রেকর্ড নিজে থেকেই গড়ে ওঠে। স্কটল্যান্ডে চলমান ত্রিদেশীয় সিরিজের একটি ম্যাচ যেন তারই উজ্জ্বল প্রমাণ। গ্লাসগোতে সোমবার (১৬ জুন) অনুষ্ঠিত নেদারল্যান্ডস ও নেপাল ম্যাচে যা ঘটল, তা শুধু স্মরণীয় নয়; টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের পাতায় চিরকাল স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কারণ, এক ম্যাচেই দেখা মিলল তিন-তিনটি সুপার ওভারের, যা এই ফরম্যাটে এই প্রথম।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে ডাচরা তোলে ১৫২ রানের লড়াকু সংগ্রহ। নেপালও হাল ছাড়ে না। শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১৬ রান। যা তুলেই ম্যাচকে তারা ঠেলে দেয় প্রথম সুপার ওভারে। সেখানেও নাটক কম নয়। নেপালের কুশল ভুর্তেল মেরে বসেন দুটি ছক্কা আর এক চার। তুলে নেন ১৯ রান। নেদারল্যান্ডসও জবাবে তুলে নেয় সমান রান, মাইকেল লেভিট ও ম্যাক্স ও’ডাউডের সাহসী ব্যাটে আবারও সমতা!
এরপর আসে দ্বিতীয় সুপার ওভার। লেভিট আবারো ছক্কা হাঁকান, ও’ডাউড শেষ দুই বলে ছক্কা ও চার। তাতে দল তোলে ১৭ রান। নেপালও দমে না। রোহিত পাউডেল প্রথম বলেই ছক্কা, দীপেন্দ্র এয়ারির ব্যাটে চারের পর শেষ বলে দরকার পড়ে ৭ রান। এয়ারি ছয় মেরে আবারও সমতা ফেরান! ম্যাচ ঢুকে পড়ে তৃতীয় সুপার ওভারে, এক অবিশ্বাস্য স্ক্রিপ্টে।
আরো পড়ুন:
ছক্কার বৃষ্টিতে অ্যালেনের ইতিহাস, গড়লেন দুই অনন্য বিশ্বরেকর্ড
সেঞ্চুরি ছাড়াই চারশো! ব্যাটে-বলে এক অন্যরকম দিন ইংল্যান্ডের
তবে তৃতীয় সুপার ওভারে ভাগ্য বদলায়। নেদারল্যান্ডসের অফস্পিনার জ্যাক লায়ন-ক্যাশে ম্যাচের রূপান্তর ঘটান। মাত্র দুই বলেই দুই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেয়ার পর নেপাল কোনো রান সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়। ফলে নেদারল্যান্ডসের সামনে মাত্র এক রান লক্ষ্য ছিল। মাইকেল লেভিট সেই রান তোলার জন্য প্রথম বলেই লং অন থেকে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে অসাধারণ এক জয় উপহার দেন।
এটি কেবল একটি ক্রিকেট ম্যাচ ছিল না, বরং এটি ছিল উত্তেজনা, ধৈর্য্য এবং মনোবলের এক অসাধারণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। যা বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে অনন্য স্থান করে নিলো। নেপাল ও নেদারল্যান্ডসের এই দুর্দান্ত লড়াই ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে দীর্ঘদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ঢাকা/আমিনুল