জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কিংবা সরকারের ভূমিকা কিছু কিছু ক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে ঐকমত্য কমিশন কিংবা সরকারের ভূমিকা কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটু পক্ষপাতদুষ্ট হচ্ছে কিংবা কোনো কোনো দলের প্রতি বিশেষ একটা প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এটা হলে এ সংস্কার কিংবা এই সময়ের সর্বজনীন বিষয়টা আমার মনে হয়, হারিয়ে যাবে।’

আজ মঙ্গলবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা হয়। সেই আলোচনার বিরতির সময় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ‘এখনো তো নির্বাচন হয় নাই, কাজেই ভোট ছাড়া কোন দল বড়, কোন দল ছোট, মেজরিটি পার্টি তো আপনি নির্ধারণ করতে পারেন না। সরকার যদি আগেই কোনো কোনো পার্টির প্রতি একটা দৃষ্টিভঙ্গি রাখে যে এই পার্টি বড়, এই পার্টি মেজরিটি, তাহলে তো অনেক ক্ষেত্রেই অনেকের কথার গুরুত্ব থাকে না। সে ক্ষেত্রে আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কিংবা সরকারের ভূমিকা কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটু পক্ষপাতদুষ্ট হচ্ছে কিংবা কোনো কোনো দলের প্রতি বিশেষ একটা প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।’

আজকের আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অংশ না নেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গণ অধিকারের পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলকে প্রাধান্য দেওয়া বা তাদের কেন্দ্রিক সংস্কার বা জাতীয় ঐকমত্যের আলোচনাটাকে নিয়ে যাওয়া প্রতিয়মান হওয়ার অভিযোগ জামায়াতসহ কিছু কিছু রাজনৈক দল করছে।’ তিনি বলেন, এই রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরেও গণ-আন্দোলনে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো সবার মতামতকে প্রতিয়মান করে না। রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি পেশাজীবী সংগঠনগুলো তথা সাংবাদিক, শিক্ষক, চিকিৎসকদের মতামত নেওয়া দরকার।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেন, ‘আমরা বারবার জোর দিচ্ছি, নব্বইয়ে তিন জোটের রূপরেখা হয়েছিল। সবাই ভালো ভালো কথা বলেছিল, লিখে দিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে কেউ কথা রাখেনি। সে জায়গা থেকে আমরা বারবার গণভোটের মাধ্যমে এ সংস্কারকে বাস্তবায়ন এবং এর একটা লিগ্যাল বেসিস তৈরির জন্য আহ্বান জানিয়েছি।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আজকের আলোচনায় জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বিএনপি, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, গণ অধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিয়েছে।

আজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত রয়েছেন আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র ভ ম ক ন র ল হক

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ নিয়ে আজ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ফের বসছে কমিশন

আলোচিত জুলাই সনদ ঘোষণার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও আলোচনায় বসছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। 

মঙ্গলবার (১৭ জুন)  থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের এই আলোচনা আবার শুরু হচ্ছে। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে বেলা ১১টা থেকে এই আলোচনা শুরু হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবারের আলোচ্যসূচি হিসেবে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো- আগের অসমাপ্ত আলোচনা সমাপ্ত করা (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন ও নারী প্রতিনিধিত্ব), দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ (নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ) এবং প্রধান বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়া।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, মঙ্গলবার আলোচনা শেষ হওয়ার পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রথমে সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফ করবেন। পরে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা ব্রিফ করবেন। আলোচনা অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন-নিউজ (বিটিভি-নিউজ) সরাসরি সম্প্রচার করবে।

সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠনের উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয় এবং ২০ মার্চ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করে কমিশন। গত ১৯ মে পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, সিপিবি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনে আলোচনা করেছে কমিশন।

প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় অনেক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হলেও মৌলিক সংস্কারের কিছু প্রস্তাব নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। সেসব প্রস্তাবে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ২ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরের দিন বিষয়ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্যায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তিনটি বিষয়ে (সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন ও নারী প্রতিনিধিত্ব) আলোচনার পর ওই দিন অধিবেশন মুলতবি করা হয়। সেই মুলতবি বৈঠকই আজ মঙ্গলবার আবার শুরু হচ্ছে।

আগামীকাল বুধ ও বৃহস্পতিবারও আলোচনা হবে। তবে বুধ ও বৃহস্পতিবারের আলোচ্য সূচি (আলোচনার বিষয়বস্তু) পরে জানাবে বলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

ঢাকা/হাসান/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শুভস্য শীঘ্রম
  • সংস্কার বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সরকার, কোনো অজুহাতে নির্বাচন বিলম্বিত করা যাবে না: সিপিবি
  • ঐকমত্য কমিশনের আগামীকালের আলোচনায় জামায়াত অংশ নেবে, আশা প্রেস সচিবের
  • ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় সব পক্ষের প্রতিনিধিত্ব নেই: এনসিপি
  • ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে যোগ দেয়নি জামায়াত
  • রমজানের আগে নির্বাচনের ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য আছে: আমীর খসরু
  • ঐকমত্য কমিশনের আজকের বৈঠকে অংশ নেয়নি জামায়াত
  • ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে যাচ্ছে না জামায়াত
  • জুলাই সনদ নিয়ে আজ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ফের বসছে কমিশন