পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের শীর্ষ প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘কমপ্লায়েন্স অব সিকিউরিটিজ মার্কেটস’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বুধবার (১৯ জুন) সকাল ১১টায় বিএসইসি ভবনের মাল্টিপারপাস হলে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিএসইসির জনসংযোগ কর্মকর্তা ও সহকারী মুখপাত্র মো.

মোহাইমিনুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আরো পড়ুন:

বিএসইসিকে প্রযুক্তি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়তা দেবে এএসআইসি

প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক-বিএসইসির বৈঠক

অনুষ্ঠিত সেমিনারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের শীর্ষ প্রতিনিধিরা (ব্যবস্থাপনা পরিচালক/পরিচালক/সিইও/সিএফও/কোম্পানি সচিব) উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের শেয়ার বিভাগের কর্মকর্তারা জুম লিংকের মাধ্যমে উক্ত সেমিনারে অংশ নেন। বিএসইসির পরিচালক মো. আবুল কালাম সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতকরণসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কমপ্লায়েন্সের ক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ, কমপ্লায়েন্সের নিয়মাবলীসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করা হয়। অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের শীর্ষ প্রতিনিধিরাও সেমিনারে কমপ্লায়েন্স সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা নিয়ে কথা বলেন এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। 

রেগুলেটরি কমপ্লায়েন্স ও প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতকরণ এবং পুঁজিবাজারে কর্মরত পেশাজীবীদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদারে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বিএসইসি। এরই ধারাবাহিকতায় বিএসইসি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৫৯টি কোম্পানির শীর্ষ প্রতিনিধিদের নিয়ে সেমিনার আয়োজন করে।

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে ৩০১টি কোম্পানির শীর্ষ প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে এ ধরনের ৫টি সেমিনার আয়োজিত হয়েছে এবং বর্তমান অর্থবছরেই বাকি ৫৮টি কোম্পানির শীর্ষ প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে আরো একটি সেমিনার আয়োজিত হবে। 

ঢাকা/এনটি/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ম ন র আয় জ কমপ ল য় ন স ব এসইস র

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণে জর্জরিত ৫ কোম্পানিতে বিএসইসির নজরদারি, কমিটি গঠন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো গ্রুপেরে ৩টি কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রম তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিগুলোর কার্যক্রমে বিশেষ নজরদারির অংশ হিসেবে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এছাড়া আরো দুইটি কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রম তদন্ত করবে বিএসইসি। এসব কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী ঋণে জর্জরিত।

এ লক্ষ্যে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি। গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তদন্তের নির্দেশ দেওয়া কোম্পানিগুলো হলো- বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো, শাইনপুকুর সিরামিকস, রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস (আরএসআরএম) ও নিউ লাইন ক্লোথিংস। এর মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ও শাইনপুকুর সিরামিকস বেক্সিমকো শিল্পগোষ্ঠীর কোম্পানি।

আরো পড়ুন:

সূচক ডিএসইতে কমলেও সিএসইতে বেড়েছে

সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের পর্ষদ সভা ২৪ জুন

সম্প্রতি বিএসইসির ইনসপেকশন, ইনকোয়ারি অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন থেকে এ সংক্রান্ত আদেশগুলো জারি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিএসইসির গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- অতিরিক্ত পরিচালক মুহাম্মদ জিয়াউর রহমান, উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান রনি ও সহকারী পরিচালক মো. আবু হেনা মোস্তফা।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, তদন্তের নির্দেশ দেওয়া কোম্পানিগুলোর কারখানা, অফিস, আর্থিক হিসাব এবং ব্যবসায়িক অন্যান্য কার্যক্রম তদন্ত করা হবে। এছাড়া সঠিক নথির মাধ্যমে কমিশনের বিধান অনুসারে আয় ও ব্যয় নিশ্চিত করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি কোম্পানিগুরোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ারধারন, আর্থিক প্রতিবেদন, বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম), অভ্যন্তরীণ লেনদেন, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেন ও এসব বিষয়ে অন্য কোন প্রাসঙ্গিক সমস্যা থাকলে তা যাচাই করবে গঠিত তদন্ত কমিটি।

বিগত সরকারের আমলে আইন লঙ্ঘন করা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন পুঁজিবাজারের কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক কার্যক্রমে অসঙ্গতি খুঁজে বের করতে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র ও পরিচালক আবুল কালাম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “বেক্সিমকো গ্রুপের ৩টি কোম্পানিসহ আরো ২টির সার্বিক কার্যক্রম তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কোনো অসঙ্গতি পাওয়া গেলে, সে অনুযায়ী প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিশ্লেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের নজরদারি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। তবে একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সচেতনতা ও সতর্কতাও বাড়বে, যাতে তারা গুজব নয়, বাস্তব তথ্যের ভিত্তিতে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেয়।

বিএসইসির তদন্তের আদেশ
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এ মর্মে অভিমত দেয় যে, পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে ৫টি ইস্যুয়ার কোম্পানির সিকিউরিটিজ আইন ও বিধি-বিধানের অধীনে রেগুলেটরি কমপ্লাইয়েন্স সংক্রান্ত বিষয়াদি পরিপালন নিশ্চিত করার জন্য কমিশনের অনুসন্ধান করা প্রয়োজন। এমতাবস্থায়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স, ১৯৬৯ এর সেকশন ২১ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে চারজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে অনুসন্ধান কার্য পরিচালনার নির্দেশ প্রদান করা হলো। অনুসন্ধান কর্মকর্তারা এই আদেশ জারির তারিখ থেকে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে অনুসন্ধান সম্পন্ন করে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

এদিকে, সর্বশেষ কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মার ৩০.১৩ শতাংশ, বেক্সিমকোর ৩৩.১৩ শতাংশ, শাইনপুকুর সিরামিকসের ৫০ শতাংশ, রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলসের ২৯.৯৩ শতাংশ ও নিউলাইন ক্লোথিংসের ৩০.৬১ শতাংশ শেয়ার উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে রয়েছে। এর মধ্যে রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলসের উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে সম্মিলিতভাবে নূন্যতম সীমা ৩০ শতাংশের কম শেয়ারধারন রয়েছে।

বেক্সিমকো ফার্মা: বেক্সিমকো গ্রুপের ব্যাংক ঋণের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে, যার বড় অংশই এখন মন্দ ঋণে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির বেক্সিমকো ফার্মার ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪২৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আর দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭৫ কোটি ৭৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ফলে কোম্পানির স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে মোট ঋণের পরিমাণ ৬০২ কোটি ৫৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

বেক্সিমকো: ‘বি’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১০৯ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। আর দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩৪০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। ফলে কোম্পানির স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে মোট ঋণের পরিমাণ ৬ হাজার ৪৪৯ কোটি ৬৮ লাখ ২০ হাজার টাকা।

শাইনপুকুর সিরামিকস: ‘বি’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৭ কোটি ৫৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আর দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ফলে কোম্পানির স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে মোট ঋণের পরিমাণ ৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা।

রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস: ‘জেড’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ কোটি ৯৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আর দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৮ কোটি ৬৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। ফলে কোম্পানির স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে মোট ঋণের পরিমাণ ১৯৩ কোটি ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের পর প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক কোনো তথ্য নেই।

নিউলাইন ক্লোথিংস: ‘জেড’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১ কোটি ৮২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আর দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৯ কোটি ৯১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ফলে কোম্পানির স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে মোট ঋণের পরিমাণ ৯১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের পর প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক কোনো তথ্য নেই।

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএসইসিকে প্রযুক্তি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়তা দেবে এএসআইসি
  • প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক-বিএসইসির বৈঠক
  • মীর আখতারের প্রেফারেন্স শেয়ার ইস্যুর আবেদন বাতিল
  • বিটিভিতে বিনিয়োগ শিক্ষা অনুষ্ঠান প্রচারে মন্ত্রণালয়কে বিএসইসির অন
  • প্রিমিয়ার ব্যাংক পারপেচুয়াল বন্ডের অর্ধবার্ষিক কুপন রেট ঘোষণা
  • মার্জিন ঋণ-নেগেটিভ ইক্যুইটি-প্রভিশনের তথ্য চায় বিএসইসি
  • ঋণে জর্জরিত ৫ কোম্পানিতে বিএসইসির নজরদারি, কমিটি গঠন
  • শেয়ার বিক্রি করবেন এনসিসি ব্যাংকের উদ্যোক্তা