এভারেস্টজয়ী নিশাত মজুমদার অনেক দিন ধরে চিন্তা করছিলেন, পর্বত আরোহণে নারীকে কীভাবে উদ্বুদ্ধ করা যায়। অভিযাত্রী গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে আলাপও করেছেন এই বিষয়ে। আলাপ-আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়– মেয়েদের নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব কাজটি শুরু করতে হবে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। সদস্যরা সবাই ঠিক করলেন এই আয়োজনের নাম হবে ‘ট্র্যাক উইথ নিশাত’।
২০২২ সালে শুরু হয় প্রতিযোগিতা। ট্র্যাক উইথ নিশাতে অংশগ্রহণকারী মেয়েদের বয়স ২৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। মৌখিক ও ফিটনেস পরীক্ষার মাধ্যমে এখান থেকে ১০ জনকে বাছাই করা হয়। এই ১০ জন ১৫ কেজি ওজনের ব্যাগ কাঁধে বহন করে সিলেট অঞ্চলের কালাপাহাড়ে সারাদিন হাঁটতে হবে। ফিরে এসে লিখিত পরীক্ষা হবে। এর পর শেষে ভোটের একটি ব্যবস্থা থাকবে; যেখানে ভলান্টিয়াররা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শেষ পর্যন্ত যে ক’জন টিকে থাকবেন, তাদের মধ্যে একজনকে নির্বাচিত করবে।
আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ফিটনেস পরীক্ষা কীভাবে নিতে হবে। আমিও এর মধ্যে ফিটনেস পরীক্ষার একটি পরিকল্পনা তৈরি করে ফেললাম। নিশাত মজুমদার তাদের অভিযাত্রী দলের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলে দিন-তারিখ ঠিক করে ফেলেন। অভিযাত্রী সদস্যরা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত এই আয়োজনের জন্য। 
তারিখ ঘোষণা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। আমাদের একটা চিন্তার বিষয় ছিল। এ রকম একটি ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিযোগিতায় শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক নারী রেজিস্ট্রেশন করবেন কিনা। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো– শেষ তারিখ পর্যন্ত ঢাকা এবং এর বাইরে থেকে রেজিস্ট্রেশনকারীর সংখ্যা আমাদের ধারণার থেকেও বেশি। এ রকম উৎসাহ দেখে কিছুটা অবাক হয়েছি। বিষয়টি ভালো লাগল যে, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। মৌখিক পরীক্ষায় এমনও নারী পেয়েছি– যিনি কখনও খেলাধুলা করেননি। এর পরও আমরা তাদের বাদ দিইনি। আমরা চেয়েছি তিনি ফিটনেস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জানুন, তাঁর শরীরের কী অবস্থা? 
এর মাধ্যমে পরে অনেক মেয়ের আগ্রহ আরও বেড়েছে। তারা কল দিয়ে জানতে চাইতেন ফিটনেস ভালো করার জন্য আর কী কী করতে পারি? আমি মনে করি, এই জায়গাতেও ট্র্যাক উইথ নিশাতের বড় সফলতা। 
ফিটনেস পরীক্ষায় এমনও দেখা গেছে, বমি করেও কেউ থেমে থাকেননি। কী অসম্ভব আগ্রহশক্তি! আমাদের এই আয়োজনে সার্বক্ষণিক একজন চিকিৎসক আছেন।
ট্র্যাক উইথ নিশাতের ২০২২ সালের প্রথম প্রতিযোগিতায় সব বিষয়ে সফলভাবে শেষ করে নির্বাচিত হন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী প্রজ্ঞা পারমিতা রায়। নিশাত মজুমদার প্রজ্ঞাকে নেপালের ৮ হাজার মিটারের পর্বত মানাসলুর বেসক্যাম্পে নিয়ে যান এবং তিনি বেসক্যাম্প সফলভাবে শেষ করে ফিরে আসেন। ২০২৩ সালে দ্বিতীয় বছর প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত নারীর নাম তাহুরা সুলতানা রেখা। নিশাত মজুমদারের সঙ্গে আমাদাবলাম বেসক্যাম্প সফলভাবে অভিযান শেষ করে ফিরে আসেন তিনি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে নিশাতের সঙ্গে শীতকালীন অভিযানে যে পাঁচজন নারী অংশগ্রহণ করেন, তার মধ্যে রেখা একজন। এখন রেখা অভিযানের জন্য নেপালেই সময় কাটাচ্ছেন। ২০২৪ সালে তৃতীয় আয়োজনে নির্বাচিত হন উম্মুল আখিয়ার। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, তিন বিজয়ীর বাড়িই চট্টগ্রামে।
এ বছর শুরু হয়েছে ট্র্যাক উইথ নিশাতের চতুর্থ আয়োজন। নারীদের এখন পর্বত অভিযানের ইচ্ছা আগে থেকে অনেক বেড়েছে। ট্র্যাক উইথ নিশাত মূলত এক বছরের মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম। নিশাত মজুমদারের কাছ থেকে এক বছর মেন্টরিং পাবে। তারপর বছর শেষে এই মেন্টরশিপ প্রোগ্রামের শেষ ধাপ হলো হিমালয়ে নিশাত মজুমদারের কাছ থেকে ট্র্যাকিংয়ে হাতেখড়ির সুযোগ। নিশাত মজুমদার প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে নারীদের হিমালয়ের বিভিন্ন অভিযানে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি বছর এপ্রিল-মে মাসে আবেদন আহ্বান করা হয়ে থাকে। এবারের রেজিস্ট্রেশন শেষ। জুন মাসের শেষ নাগাদ বাছাই পর্ব শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। সম্ভাব্য তারিখ কিছুদিনের মধ্যে জানানো হবে। v
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট র য ক উইথ ন শ ত

এছাড়াও পড়ুন:

মাইক্রোসফটের ফ্রি অনলাইন কোর্স : ডেটা সায়েন্স–এআইসহ নানা বিষয়ে শেখার সুযোগ

ঘরে বসেই দক্ষতা বাড়াতে শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ নিয়ে এসেছে মাইক্রোসফট। এই অনলাইন কোর্সগুলো edX প্ল্যাটফর্মে উন্মুক্ত করা হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের শিক্ষার্থী বা পেশাজীবীরা কোর্সগুলোতে অংশ নিতে পারবেন।

২০২৫ সালের এই প্রোগ্রামে ৬০টির বেশি অনলাইন কোর্স রয়েছে, যা বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ দেবে। দ্রুত পরিবর্তনশীল চাকরির বাজারে নিজেকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে সাহায্য করবে এসব কোর্স। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা Microsoft AI Skills Fest-এ অংশ নিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সম্পর্কিত বিশেষায়িত কোর্সও করতে পারবেন।

মাইক্রোসফটের লক্ষ্য হলো আজকের চাকরির বাজারে চাহিদাসম্পন্ন প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত দক্ষতা গড়ে তুলতে সহায়তা করা। এই কোর্সগুলো শিক্ষার্থীরা নিজের সুবিধামতো সময়ে শিখতে পারবেন। এখানে থাকছে ক্লাউড কম্পিউটিং, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ডেটা সায়েন্স, মেশিন লার্নিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং সাইবার সিকিউরিটিসহ নানা বিষয়ে হাতে–কলমে শেখার সুযোগ।

বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ

মাইক্রোসফটের অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞরা এই কোর্সগুলো তৈরি ও পরিচালনা করেন। ফলে অংশগ্রহণকারীরা বাস্তব জীবনের জ্ঞান এবং দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন। যাঁরা প্রযুক্তির জগতে নতুন, তাঁরা বিগিনার লেভেলের কোর্স দিয়ে শুরু করতে পারবেন। আর যাঁরা অভিজ্ঞ, তাঁদের জন্য রয়েছে ইন্টারমিডিয়েট লেভেলের কোর্স। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের নতুন অ্যাপ্লিকেশন, ডিজিটাল সেবা এবং উদ্ভাবনী সমাধান ডিজাইন করার দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।

কোর্স কাঠামো ও সার্টিফিকেট

মাইক্রোসফটের এই অনলাইন কোর্সগুলো ফ্রি অডিট ট্র্যাকের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনা খরচে করা যাবে। তবে যাঁরা শিখে একটি অফিশিয়াল ভেরিফায়েড সার্টিফিকেট পেতে চান, তাঁরা নামমাত্র ফি দিয়ে সার্টিফিকেট নিতে পারবেন, যা চাকরি বা ক্যারিয়ারে বাড়তি গুরুত্ব দেবে।

এটি একটি MOOC (Massive Open Online Course) উদ্যোগ, যা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্রি অনলাইন কোর্স ২০২৫-এর মতো বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।

মাইক্রোসফটের কোর্স এখন করা যায় ঘরে বসেই

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনবে চোখের নতুন ড্রপ
  • মাইক্রোসফটের ফ্রি অনলাইন কোর্স : ডেটা সায়েন্স–এআইসহ নানা বিষয়ে শেখার সুযোগ
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর