চবিতে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ঢাবিতে সনাতনী জাগরণ জোটের বিক্ষোভ
Published: 4th, July 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তীকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট।
শুক্রবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। এ সময় কুশল বরণের যথাযথ নিরাপত্তা প্রদানের দাবি জানায় সনাতনী জাগরণ জোট।
কুশল বরণ চক্রবর্তী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি সনাতনী জাগরণ জোটের সহমুখপাত্র ও সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। শুক্রবার পদোন্নতির সাক্ষাৎকার দিতে এলে উপাচার্যের দপ্তরে তাঁকে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে ইসলামী ছাত্রশিবির ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক সুমন কুমার রায় বলেন, ‘দেশে আজ সর্বত্র মবতন্ত্র বিরাজ করছে, দেশে কোথায় আইনের শাসন নেই। দেশে কোনো সরকার আছে বলে মনে হচ্ছে না।’
সুমন কুমার বলেন, ‘কুশল বরণকে যে ঘটনায় মামলার আসামি করা হয়েছে, তখন তিনি আমাদের সঙ্গে শাহবাগে আন্দোলনে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মবতন্ত্র সৃষ্টি করে উপাচার্যের অফিস কক্ষে তাঁকে মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র সাজন কুমার মিশ্র বলেন, ‘আগে শুনতাম মগের মুল্লুক আর এখন দেখছি মবের মুল্লুক। এমনভাবে মব হচ্ছে, তা দেখে মনে হচ্ছে, সরকার দেশ চালাতে ব্যর্থ।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সাজন কুমার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ব্যর্থতার দায়ে যেভাবে দেশ ছেড়েছে, মনে হচ্ছে আপনাদেরও সেই পথে যেতে হবে। মব অত্যাচার বন্ধ করতে না পারলে দ্রুত পদত্যাগ করে বিদায় নিন। অন্যথায় আপনাদেরও আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হতে পারে।’
আরও পড়ুনচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পদোন্নতির সাক্ষাৎকারে আসা শিক্ষককে ঘিরে হট্টগোল, ‘মব’ সৃষ্টির অভিযোগ৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ গরণ জ ট
এছাড়াও পড়ুন:
মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।
মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।
জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।
এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।
ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।
আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগেফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে