আশুরা উপলেক্ষে শেকৃবিতে শিবিরের গণসেহরি
Published: 6th, July 2025 GMT
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) পবিত্র আশুরা ও মহররম মাস উপলক্ষে ছাত্রদের জন্য সম্মিলিত সেহরি ও নৈশ ইবাদতের আয়োজন করেছে শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির।
শনিবার (৫ জুলাই) রাতে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনের প্রথম দিনে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। রবিবার (৬ জুলাই) ভোর রাতে তারা সম্মিলিত সেহরির আয়োজন করে। সোমবার (৭ জুলাই) আশুরার দ্বিতীয় রোজার সেহরির মাধ্যমে তাদের এ আয়োজন শেষ হবে।
রবিবার ভোর রাতে সেহরির পূর্বে শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন। এরপর নবাব সিরাজউদ্দৌলা হলের ডাইনিংয়ে শুরু হয় সেহরির আয়োজন।
আরো পড়ুন:
৭৩ বছরে রাবি: গবেষণা-উচ্চশিক্ষাসহ চাকরি ক্ষেত্রে গৌরবময় যাত্রা
জবিতে বিপণন শিক্ষার ১৮ বছর উদযাপন
এতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, এমন আয়োজন তাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও ধর্মীয় অনুভূতিকে জাগ্রত করেছে।
শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান বলেন, “এমন আয়োজন আমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করে এবং দ্বীনের প্রতি ভালোবাসা বাড়ায়।”
আরেকজন শিক্ষার্থী পারভেজ আহমেদ বলেন, “সারারাত ইবাদত করে একসঙ্গে সেহরি করার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। এমন পরিবেশ আমাদের আরো আন্তরিকভাবে দ্বীনের পথে চলতে উৎসাহিত করে।”
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবির সভাপতি মো.
তিনি আরও বলেন, “এই আয়োজন শুধুই ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি ভ্রাতৃত্ব, সংহতি এবং সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক।”
দীর্ঘ ১৬ বছর পর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য গণসেহরির আয়োজন করেছে ছাত্রশিবির। ক্যাম্পাসে অবস্থানরত ছাত্রদের সেহরি করতে নানা অসুবিধার কথা মাথায় রেখে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা।
ঢাকা/মামুন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্প কীভাবে ‘ম্যাডম্যান তত্ত্ব’ ব্যবহার করে বিশ্ব বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গত মাসে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ইরানে হামলায় তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন কি না। জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এটা করতে পারি। আবার আমি না-ও করতে পারি। আমি কী করতে যাচ্ছি, তা কেউই জানে না।’
ট্রাম্প বিশ্বকে এমনটা বিশ্বাস করতে দিয়েছিলেন যে ইরানকে আলোচনা শুরুর সুযোগ দিতে দুই সপ্তাহ হামলা স্থগিত রাখার বিষয়ে তিনি সম্মত হয়েছেন। কিন্তু পরে এ সময়ের মধ্যেই তিনি হামলা চালিয়ে বসেন।
এ ঘটনায় একটি প্রবণতা সামনে এসেছে, ট্রাম্পের সম্পর্কে সবচেয়ে অনুমেয় বিষয়টি হলো তাঁর অননুমেয় আচরণ। তিনি তাঁর চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করেন। তিনি স্ববিরোধী কাজ করেন। তাঁর কথা আর কাজে মিল নেই।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক পিটার ট্রুবোউইৎজ বলেন, ‘(ট্রাম্প) একটি অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়া তৈরি করেছেন, অন্তত পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে। সম্ভবত (প্রেসিডেন্ট) রিচার্ড নিক্সনের পর থেকে এটিই সবচেয়ে কেন্দ্রীভূত।’ তিনি বলেন, ‘এটি নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তগুলোকে ট্রাম্পের আচরণ, তাঁর পছন্দ ও মেজাজ-মর্জির ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল করে তুলেছে।’
ট্রাম্প তাঁর এই বৈশিষ্ট্যকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। তিনি তাঁর নিজের অননুমেয় আচরণকে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ও রাজনৈতিক সম্পদে পরিণত করেছেন। তিনি এই অননুমেয় আচরণকে একটি মতবাদ বা নীতির পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। আর এখন যে ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য তিনি হোয়াইট হাউসে নিয়ে এসেছেন, সেটিই পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। এটি বিশ্বব্যবস্থার বিদ্যমান কাঠামো পাল্টে দিচ্ছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এটিকে ‘ম্যাডম্যান থিওরি’ বা ‘খ্যাপাটে তত্ত্ব’ বলে থাকেন। এই তত্ত্বে একজন বিশ্বনেতা তাঁর প্রতিপক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, তিনি নিজের মেজাজ-মর্জিমতো যেকোনো কিছু করতে সক্ষম, যাতে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করা যায়। সফলভাবে ব্যবহার করা হলে এটি একধরনের জবরদস্তি বা চাপ প্রয়োগের কৌশল হতে পারে। ট্রাম্প বিশ্বাস করেন, এটি সুফল দিচ্ছে এবং এর মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের তাঁর পছন্দমতো অবস্থানে নিয়ে আসতে পারছেন।
কিন্তু এটি কি এমন পদ্ধতি, যা শত্রুদের বিরুদ্ধেও কাজে দেবে? আর এর ত্রুটি কি এমনটি হতে পারে যে এটি প্রতিপক্ষকে বোকা বানানোর জন্য তৈরি করা একটি কৌশল না হয়ে বরং সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুস্পষ্ট চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে গঠিত, যার ফলে তাঁর আচরণ আরও সহজে অনুমানযোগ্য হয়ে ওঠে?
কথার আক্রমণ, অপমান ও কাছে টানা
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কাছে টেনে আর আমেরিকার মিত্রদের কথার আক্রমণের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করেন। তিনি কানাডাকে অপমান করে বলেছিলেন, দেশটির যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যাওয়া উচিত।
ট্রাম্প বলেছিলেন, গ্রিনল্যান্ডকে (আমেরিকার মিত্র ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগের কথা বিবেচনা করতে তিনি প্রস্তুত। তিনি আরও বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত পুনরায় পানামা খালের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।
সামরিক জোট ন্যাটো সনদের ৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রতিটি সদস্যদেশ অন্য দেশকে রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের এ অঙ্গীকারকে সংশয়ের মধ্যে ফেলে দেন। যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, ‘আমি মনে করি, (ন্যাটো সনদের) ৫ অনুচ্ছেদ লাইফ সাপোর্টে আছে।’
ন্যাটো সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (প্রথম সারিতে বাঁ থেকে চতুর্থ) ও বিশ্বনেতারা