ফিলিস্তিনের গাজায় অনাহারে আরও অন্তত ১০ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে উপত্যকাটিতে ক্ষুধা ও চরম অপুষ্টিতে ভুগে অন্তত ১১১ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। অনাহারে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের অধিকাংশই শিশু। ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন গত কয়েক সপ্তাহে।

গাজায় গণহারে মানুষ অনাহারে রয়েছেন। অথচ বাইরে টন টন খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসাসামগ্রী পড়ে আছে। উপত্যকাটিতে ত্রাণ বিতরণে সহায়তাকারী সংস্থাগুলোকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল।

এদিকে গাজায় ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৪ জন ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, এ বছর এখন পর্যন্ত অপুষ্টিজনিত কারণে গাজায় যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী ২১টি শিশু রয়েছে।

আরও পড়ুনগাজায় না খেয়ে মারা গেল ৩৫ দিনের শিশু২০ জুলাই ২০২৫

ডব্লিউএইচও গত মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রায় ৮০ দিন গাজায় কোনো খাদ্য সরবরাহ করতে পারেনি। সংস্থাটি বলেছে, এখন যে খাদ্যসহায়তা চালু হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।

১১১টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজায় গণহারে মানুষ অনাহারে রয়েছে। অথচ গাজার বাইরে টনকে টন খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসাসামগ্রী পড়ে রয়েছে। ত্রাণ বিতরণের জন্য সহায়তাকারী সংস্থাগুলোকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

ক্ষুধা এখন বোমার মতোই প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে। পরিবারগুলো আর পর্যাপ্ত খাবার চাইছে না, তারা এখন যা হোক কিছু একটা চাইছে।তারেক আবু আজ্জুম, আল–জাজিরার প্রতিনিধি

গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর আল-বালাহ থেকে আল–জাজিরার প্রতিনিধি তারেক আবু আজ্জুম বলেছেন, ‘ক্ষুধা এখন বোমার মতোই প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে। পরিবারগুলো আর পর্যাপ্ত খাবার চাইছে না, তারা এখন যা হোক কিছু একটা চাইছে।’

রাফার একটি সরকারি স্কুলে খাবার সংগ্রহের জন্য এসেছেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন হ র

এছাড়াও পড়ুন:

মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।

মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।

জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।

এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।

ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।

আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগে

ফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ