ঢাকার উত্তরা সেক্টর-৪–এ নাটক ও সিনেমার শুটিং কার্যক্রম বন্ধে উত্তরা কল্যাণ সমিতির জারি করা নিষেধাজ্ঞা শিগগিরই শর্তসাপেক্ষে প্রত্যাহার হতে যাচ্ছে।

শনিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে শুটিং হাউস মালিক, কল্যাণ সমিতি ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে এক বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার কথা রয়েছে।

গত ২০ জুলাই উত্তরা কল্যাণ সমিতি সেক্টর-৪ এলাকায় হাউস মালিকদের শুটিংয়ের জন্য ভাড়া না দেওয়ার আহ্বান জানায়। সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুটিং চলাকালে জনসমাগম, শব্দ দূষণ ও বাসিন্দাদের অসুবিধার কারণে তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলের সমালোচনা করায় জাতিসংঘের বিশেষ দূতের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

জবিতে রাত ১০টার পর অবস্থান নিষেধ

তবে নির্মাতা ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর প্রতিবাদের মুখে বিষয়টি আলোচনার টেবিলে আসে। ডিরেক্টরস গিল্ডের আনুষ্ঠানিক আপত্তির পর সমিতি নতুন করে সমঝোতার পথে হেঁটেছে।

বর্তমানে সেক্টর-৪–এ তিনটি সক্রিয় শুটিং হাউস রয়েছে— লাবণী-৪, লাবণী-৫ এবং আপন ঘর-২। এছাড়াও একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের শুটিং স্পট থাকলেও তার কার্যক্রম অনিয়মিত।

শুটিং বন্ধের ঘোষণায় নাট্য ও চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের দাবি, এ ধরনের সিদ্ধান্ত নির্মাণ প্রক্রিয়ায় বড় বাধা সৃষ্টি করবে এবং অনেক পেশাজীবী কর্মহীন হয়ে পড়বেন।

তবে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির একটি স্থায়ী ও বাস্তবসম্মত সমাধানের দিকে এগোচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট শর্ত আরোপ করে শিগগিরই শুটিং কার্যক্রম আবার চালু হবে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

সেক্টর-৪ কল্যাণ সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী জানান, “আমরা এলাকাবাসীর স্বার্থেই কাজ করি। তবে শুটিং ইউনিটগুলো যদি পরিবেশ রক্ষা করে, নিয়ম মেনে কাজ করে— তাহলে পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে কাজ চালানো সম্ভব। আজকের বৈঠকে আশাবাদী, যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছানো যাবে।”

শুটিং হাউস মালিকদের সংগঠনের উপদেষ্টা এবং ‘আপন ঘর’ শুটিং হাউসের মালিক খলিলুর রহমান বলেন, “৩০ বছর ধরে আমরা এই কাজ করছি। হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সমস্যার সমাধান হয় না। আমরা চাই গঠনমূলক আলোচনা ও পারস্পরিক সম্মানবোধকে ভিত্তি করে চলতে।”

ঢাকা/রাহাত/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে বইমেলায় বিক্রি কম, এখনো আশায় আছেন প্রকাশকেরা

রাজশাহী বিভাগীয় বইমেলার প্রথম তিন দিনে লোকজনের ভিড় থাকলেও বেচাকেনা তেমন হয়নি। এতে অনেক প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে আগামী কয়েক দিনে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছেন প্রকাশকেরা ও আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

গত শুক্রবার রাজশাহী জেলা কালেক্টরেট মাঠে ৯ দিনব্যাপী এই বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে এবং রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এ মেলা চলবে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০টি বেসরকারি প্রকাশনাসহ মোট ৮১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাদে মেলা চলছে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। আর ছুটির দিনে মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়।

উদ্বোধনের আগের দিন বৃষ্টিতে মেলার মাঠ কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। সেই কর্দমাক্ত পরিবেশেই মেলার উদ্বোধন হয়। দর্শনার্থীদের ভোগান্তি কমাতে পরে প্রতিটি স্টলের সামনে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বিক্রির খরা কাটেনি বলে জানালেন বিক্রেতারা।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন অংশে তখনো পানি জমে আছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের সামনের প্যান্ডেলেও কাদা। সেখানেই কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা চলছিল, তবে দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি ছিল নগণ্য। স্টলের সামনে ইটের সলিংয়ের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন অনেকে। অনেকে বই দেখছেন।

সূর্যোদয় প্রকাশনীর বিক্রেতা রিপন আলী বলেন, প্রথম দিন তো কাদাপানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তখনো মানুষ ছিলেন। এখন ইট বিছানোর পর আরও বেশি মানুষ আসছেন, ভিড়ও করছেন, কিন্তু বই কিনছেন খুব কম।

ঐতিহ্য প্রকাশনীর স্টলে কাদার ওপর চেয়ার পেতে বসে থাকতে দেখা গেল বিক্রয়কর্মী ও চিত্রশিল্পী অর্ণব পাল সন্তুকে। তিনি বলেন, মানুষ আসছেন, ঘুরে দেখছেন, কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। মেলার ব্যবস্থাপনা আরও ভালো হতে পারত। আরেক বিক্রেতা আবদুল্লাহ হীল বাকি জানালেন, এমনও স্টল আছে, যেখানে সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বইও বিক্রি হচ্ছে না।

তবে হতাশার ভিড়ে আশার কথাও শোনালেন কেউ কেউ। চট্টগ্রাম থেকে আসা নন্দন বইঘর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী সুব্রত কান্তি চৌধুরী বলেন, বেচাবিক্রি আজ না হোক কাল হবে। মানুষ যে মেলায় এসে বই হাতে নিয়ে দেখছেন, এটাই বড় পাওয়া। এতে তাঁদের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ তৈরি হবে।

মেলায় আসা পাঠকদের মধ্যে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। দুই সন্তানের জন্য শিশুতোষ বই কিনে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আনন্দটাই অন্য রকম।
মেলা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপ্যাধ্যায়ের বই কিনেছেন মনির হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় একসঙ্গে অনেক বই পাওয়া যায়, যা বই কেনার জন্য দারুণ সুযোগ।

রাজশাহী কালেক্টরেট মাঠে বইমেলা উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে আলোচনা সভা। গতকাল রোববার সন্ধ্যায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ