শর্তসাপেক্ষে উত্তরায় শুটিং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পথে
Published: 26th, July 2025 GMT
ঢাকার উত্তরা সেক্টর-৪–এ নাটক ও সিনেমার শুটিং কার্যক্রম বন্ধে উত্তরা কল্যাণ সমিতির জারি করা নিষেধাজ্ঞা শিগগিরই শর্তসাপেক্ষে প্রত্যাহার হতে যাচ্ছে।
শনিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে শুটিং হাউস মালিক, কল্যাণ সমিতি ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে এক বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার কথা রয়েছে।
গত ২০ জুলাই উত্তরা কল্যাণ সমিতি সেক্টর-৪ এলাকায় হাউস মালিকদের শুটিংয়ের জন্য ভাড়া না দেওয়ার আহ্বান জানায়। সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুটিং চলাকালে জনসমাগম, শব্দ দূষণ ও বাসিন্দাদের অসুবিধার কারণে তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলের সমালোচনা করায় জাতিসংঘের বিশেষ দূতের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
জবিতে রাত ১০টার পর অবস্থান নিষেধ
তবে নির্মাতা ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর প্রতিবাদের মুখে বিষয়টি আলোচনার টেবিলে আসে। ডিরেক্টরস গিল্ডের আনুষ্ঠানিক আপত্তির পর সমিতি নতুন করে সমঝোতার পথে হেঁটেছে।
বর্তমানে সেক্টর-৪–এ তিনটি সক্রিয় শুটিং হাউস রয়েছে— লাবণী-৪, লাবণী-৫ এবং আপন ঘর-২। এছাড়াও একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের শুটিং স্পট থাকলেও তার কার্যক্রম অনিয়মিত।
শুটিং বন্ধের ঘোষণায় নাট্য ও চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের দাবি, এ ধরনের সিদ্ধান্ত নির্মাণ প্রক্রিয়ায় বড় বাধা সৃষ্টি করবে এবং অনেক পেশাজীবী কর্মহীন হয়ে পড়বেন।
তবে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির একটি স্থায়ী ও বাস্তবসম্মত সমাধানের দিকে এগোচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট শর্ত আরোপ করে শিগগিরই শুটিং কার্যক্রম আবার চালু হবে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
সেক্টর-৪ কল্যাণ সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী জানান, “আমরা এলাকাবাসীর স্বার্থেই কাজ করি। তবে শুটিং ইউনিটগুলো যদি পরিবেশ রক্ষা করে, নিয়ম মেনে কাজ করে— তাহলে পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে কাজ চালানো সম্ভব। আজকের বৈঠকে আশাবাদী, যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছানো যাবে।”
শুটিং হাউস মালিকদের সংগঠনের উপদেষ্টা এবং ‘আপন ঘর’ শুটিং হাউসের মালিক খলিলুর রহমান বলেন, “৩০ বছর ধরে আমরা এই কাজ করছি। হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সমস্যার সমাধান হয় না। আমরা চাই গঠনমূলক আলোচনা ও পারস্পরিক সম্মানবোধকে ভিত্তি করে চলতে।”
ঢাকা/রাহাত/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।
মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।
জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।
এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।
ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।
আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগেফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে