ভাইকে দাফন করে নায়ক জসীমের দুই সন্তানের হৃদয়স্পর্শী পোস্ট
Published: 28th, July 2025 GMT
রক ব্যান্ড ‘ওন্ড’-এর ভোকালিস্ট, বেজিস্ট ও শব্দ প্রকৌশলী এ কে রাতুলকে তাঁর বাবা চিত্রনায়ক জসীমের কবরে সমাহিত করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন রাতুল।
গতকাল রোববার বিকেলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান রাতুল (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রাতুলের বড় ভাই এ কে সামী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি মাত্রই ছোট ভাইটাকে সমাহিত করে এলাম।’
আরেক ভাই এ কে রাহুল ফেসবুকে রাতুলের একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আমার ভাইটার বুকে আমার হাত।’
রাতুলের মৃত্যুতে ফেসবুকে ঢাকার ব্যান্ড ও শিল্পীদের অনেকেই শোক জানিয়েছেন। ওয়ারফেইজ লিখেছে, ‘রাতুলের প্রয়াণের খবরে আমরা গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত। ওয়ারফেজ পরিবার রাতুলের পরিবারের জন্য সমবেদনা জানাচ্ছে এবং তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে। বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গন এক মূল্যবান রত্ন হারাল।’
আরও পড়ুনচিত্রনায়ক জসীমের ছেলে সংগীতশিল্পী রাতুল মারা গেছেন২১ ঘণ্টা আগেআর্টসেল ব্যান্ড লিখেছে, ‘ওর চলে যাওয়ায় আমাদের বাংলাদেশের সংগীতজগতে যে ক্ষতি হয়ে গেল, তা অপূরণীয়। এমন মৃত্যু কারও কাম্য নয়। একসঙ্গে ওর স্টুডিওতে আমাদের গানের কাজ করা, বিভিন্ন কনসার্টে দেখা হওয়া, কত স্মৃতি.
শিরোনামহীন লিখেছে, ‘আল্লাহ তার জীবনের সকল গুনাহ মাফ করুক এবং তার পরিবারকে শক্তি দিক, যাতে তারা এই শোক কাটিয়ে উঠতে পারে।’
রাতুলের সঙ্গে একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে গিটারিস্ট অনি হাসান লিখেছেন, ‘রাতুল, এই ট্যুরে তোমার সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল, তখনই তোমার কাজ আর নিষ্ঠার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। আমরা একসাথে জিমে যাওয়ার পরিকল্পনাও করেছিলাম, কিন্তু কে জানত, নিয়তির ভিন্ন ইচ্ছা ছিল।’
ব্যান্ডশিল্পী রায়েফ আল হাসান রাফা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তোমার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পরিচয় ছিল। এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না, তুমি আর নেই।’
শ্রোতাদের মধ্যে ওন্ড ব্যান্ডের আলাদা পরিচিতি রয়েছে। ২০১৪ সালে ব্যান্ডটির প্রথম অ্যালবাম ‘ওয়ান’ ও ২০১৭ সালে দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘টু’ প্রকাশিত হয়েছে। ২০২১ সালে প্রকাশিত হয়েছে ইপি ‘এইটিন’।
রাতুল অন্য ব্যান্ডেও কাজ করেন। তিনি অর্থহীনের ‘ফিনিক্সের ডায়েরি-১ ’-এর সাউন্ডের কাজ করেছেন। জসীমের তিন সন্তানের মধ্যে রাতুল মেজ। বড় ছেলে এ কে সামী ‘ওন্ড’ ব্যান্ডের ড্রামার, ছোট ছেলে এ কে রাহুল ‘ট্রেনরেক’ ও ‘পরাহো’ ব্যান্ডের সঙ্গে ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ সব ক
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি