‘পিএসসি সংস্কার ও চাকরিতে রাজনৈতিক পরিচয়ে নিয়োগের পাঁয়তারা বন্ধের’ দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে মিছিল বের করা হয়। এ সময় ‘পিএসসি সংস্কার’ প্রসঙ্গে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলে ‘জুলাইয়ের অঙ্গীকার, পিএসসি সংস্কার’, ‘চব্বিশের অঙ্গীকার, পিএসসি সংস্কার’, ‘পিএসসি নিয়ে তালবাহানা, চলবে না চলবে না’সহ নানা স্লোগান দেন। পরে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘গত ফ্যাসিবাদী ১৬ বছরে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আওয়ামীকরণ করা হয়েছিল। স্বৈরতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্রের সবগুলো প্রতিষ্ঠান দলীয়করণই যথেষ্ট। আমরা দেখতে পাই, আবারও একটি দল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কুক্ষিগত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।’

হাসিবুল ইসলাম আরও বলেন, সরকারি চাকরিতে কোনো দলের কিংবা মতের সুপারিশকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া যাবে না। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন ও স্বতন্ত্রভাবে চলতে দিতে হবে। রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে কাউকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখপাত্র রাফিয়া রেহনুমা বলেন, আগামীর বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় আসুক, তারা যেন কোনোভাবেই সরকারি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে অবৈধভাবে রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করতে না পারে, সে জন্য দলমত–নির্বিশেষে জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে।

‘পিএসসি সংস্কার’ প্রসঙ্গে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে দুই দফা দাবি উত্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা। দাবি উত্থাপন ও পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী সিরাজুল সালেহীন। তিনি বলেন, ‘আমরা ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে আমাদের দুটি দাবি জানাচ্ছি। এক.

পিএসসিসহ অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, সুপারিশ ও রাজনৈতিক নিয়োগ বন্ধ করতে হবে। দুই. পিএসসিসহ অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের পদগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি স্বতন্ত্র কমিটি থাকবে।’ দাবি পূরণ না হলে অবরোধ ও ব্লকেডের মতো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক প এসস

এছাড়াও পড়ুন:

মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।

মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।

জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।

এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।

ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।

আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগে

ফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ