চা শ্রমিকদের টাকা গেল অন্যদের বিকাশে
Published: 5th, August 2025 GMT
মৌলভীবাজারে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের সরকারি বরাদ্ধের ৬০ হাজার টাকা বিতরণে শ্রমিকনেতাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগ এনেছেন বঞ্চিতরা।
উপকারভোগী শ্রমিকদের নামের তালিকা প্রণয়নের সময় অনেকের নামের অনুকূলে তাদের বিকাশ নাম্বার না দিয়ে অন্যদের বিকাশ নাম্বার দেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি চক্র এমনটা করেছে বলে অভিযোগ শ্রমিকদের।
চা শ্রমিক নেতারা বলছেন, মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানে রেজিস্ট্রারভুক্ত প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ১ হাজার শ্রমিক জীবনমান উন্নয়নের প্রাপ্ত মাথাপিছু ছয় হাজার টাকা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। এতে ৬০ হাজার টাকার অনিয়ম হয়েছে।
মৌলভীবাজার সমাজ সেবা অধিদপ্তর বিভাগ জানিয়েছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোন কোন বাগানের পঞ্চায়েত সভপতিগণ কিছুটা অনিয়ম করেছেন। এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরেজমিনে ঘুরে জেলার শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার বিভিন্ন বাগানে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের টাকা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ মিলেছে।
কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানের বড়লাইনের শ্রমিক রামাকান্ত যাদব বলেন, ‘‘তালিকায় আমার নাম ও ভোটারআইডি নাম্বার ঠিক আছে। টাকা আমি পাইলাম না। বিকাশ নাম্বার আমার নয়।”
একই বাগানের শ্রমিক পারতালি তেলেঙ্গা, আদমটিলার শ্রমিক দুলাল শীল, রবিদাস টিলার প্রিতী পাল বলেন, আমাদের নাম, আইডি ও বিকাশ নাম্বার নিয়ে তালিকায় নাম দেওয়া হয়েছে। এরপরও আমরা টাকা পাইনি।
উপকারভোগী তালিকায় শমশেরনগর চা বাগানের শ্রমিক নেতা নির্মল দাস পাইনকা, তার স্ত্রী, মেয়ে ও তার আপন ভাইয়ের স্ত্রী, ভাই, বড় ভাইয়ের স্ত্রী ও তিন মেয়ের নাম রয়েছে।
একইভাবে ওই বাগানের পঞ্চায়েত সম্পাদক শ্রীকান্ত কানু, স্ত্রী রিনা কানু, ভাইয়ের বউ রিপা কানু, বোন হেমন্তি কানু, ভাই হৃদয় প্রকাশ কানু, ভাইয়ের স্ত্রী শিপা কানুর নাম ও বিকাশ নাম্বার দেওয়া হয়েছে।
কুলাউড়া উপজেলার লুয়াইউনি চা বাগানের শ্রমিক হৃদয় দাস বলেন, “চা বাগানের সাধারণ শ্রমিকদের নাম, ভোটার আইডি কার্ডের কপি নিয়ে কতিপয় নেতা দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা সমাজসেবা বিভাগে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দিয়েছি।”
শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর বাগানের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে অভিযোগ করে বাগানের শ্রমিক গোপাল, রিশু বাগতি, দেশান্ত কানু বলেন- চা বাগনের সাধারণ শ্রমিকদের নাম, ভোটার আইডি কপি নিয়ে কতিপয় নেতারা দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
একইভাবে রাজনগর উপজেলার ইটা, করিমপুরসহ বিভিন্ন বাগানের প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিকের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
রাজনগর উপজেলার করিমপুর চা বাগানের বাসিন্দা বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপংকর ঘোষ বলেন, ‘‘মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানে রেজিস্ট্রার-ভুক্ত প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় এক হাজার শ্রমিক জীবনমান উন্নয়নের প্রাপ্ত মাথাপিছু ছয় হাজার টাকা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। কিছু অসাধু পঞ্চায়েত নেতা চক্রান্ত করে এই ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।”
কমলগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ইউসুফ মিয়া বলেন, “এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর কয়েকটি বাগানের অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “এরকম কিছু ঘটতে পারে বলে আগেই আমি বারবার সতর্ক করেছি। সমাজসেবা অফিসারকে বিষয়টি জানিয়েছি। এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
বিষয়টি নিয়ে মৌলভীবাজার জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো.
ঢাকা/আজিজ/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কমলগঞ জ উপজ ল র ব যবস থ ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনা ভারতে বসে আবারও ষড়যন্ত্র করছে: দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে বসে আবারও ষড়যন্ত্র করছে। চোরাগোপ্তা হামলার পরিকল্পনা করছে।”
জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত প্রতীকী যুব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, “তারা যদি আবার ষড়যন্ত্র করে, নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে, তাহলে জনগণ আর কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেবে না। সম্মিলিতভাবে আবার তাদেরকে প্রতিহত করা হবে। বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এ নির্বাচনের প্রত্যাশায় দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর ধরে আন্দোলন-সংগ্রামে অনেক তরুণ প্রাণ ঝরে গেছে, লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর নামে মামলা হয়েছে এবং গণতন্ত্র রক্ষায় মানুষ নির্বাসিত জীবনযাপন করছে।”
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “যদি নির্বাচনের ঘোষণা আসে, তাহলে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ বিএনপিকে আবারও ক্ষমতায় আনবে।”
তিনি বলেন, “আগামী দিনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমান বাংলাদেশের নেতৃত্বে আসবেন এবং জনগণের ওপর নির্ভর করে দেশকে এগিয়ে নেবেন। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়েই আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়। আরো বক্তব্য রাখেন—বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম, প্রিন্সিপাল শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক,মৎস্যজীবী দলের নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী, কৃষক দলের নেতা আব্দুর রাজী, ছাত্রদলের নেতা শামীম আখন্দ প্রমুখ।
ঢাকা/রায়হান/রফিক