জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও সাংবাদিকদের সুরক্ষা আইন কার্যকর হয়নি, গণমাধ্যম সংস্কারেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক নেতারা।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা একথা বলেন।

বক্তারা বলেন, এখনো তথ্য মন্ত্রণালয় সাংবাদিকদের সঙ্গে শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ করছে এবং সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগও তুলেছেন তারা।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, ‘‘সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের জন্য হলেও সেখানে প্রকৃত সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে সুবিধাভোগীদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চাই।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘যেদিন সাংবাদিকরা রাজপথে নামবে, সেদিন কেউ রেহাই পাবে না।’’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ বলেন, ‘‘আজ আমাদের আনন্দ ও বেদনার দিন। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটলেও এখনও গণতন্ত্র পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ। ভারতীয় টিভি চ্যানেল এখনো বন্ধ হয়নি। কিছু উপদেষ্টার অজ্ঞতা দেশকে অস্থির করে তুলছে।’’

বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরি বলেন, ‘‘সাইবার সিকিউরিটি আইন এখনো বাতিল হয়নি, এটা হাসিনার সরকারের মতোই দমনমূলক। ভোটহীন ১৭ বছর পর গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের আশায় অপেক্ষা করছি, কিন্তু এখনো সংস্কারের নামে শুধু প্রতিশ্রুতি শুনছি।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ১৭ বছর ধরে রাজপথে ছিলাম, রক্ত দিয়েছি। এবার যদি আবার প্রতারণা হয়, তাহলে সাংবাদিক সমাজ আর সহ্য করবে না।’’

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, গণমাধ্যমে যারা স্বৈরাচারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে, তারা এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে। এই ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গণমাধ্যমকে মুক্ত করতে হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ মুরসালীন নোমানী, রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাংবাদিক নেতা আব্দুল্লাহ মজুমদার সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা/এএএম//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নোবিপ্রবির আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তা স্থায়ী বহিষ্কার 

আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান ভূঁইয়াকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অশ্লীল ও শিষ্টাচার বহির্ভূত মন্তব্য করায় স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আরো পড়ুন:

জুলাই বিরোধিতা: ইবির ৩০ শিক্ষক-কর্মচারী ও ৩৩ ছাত্রলীগ নেতার ‘শাস্তি’

আ.লীগে যোগ দেওয়া মুবিনকে আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার 

সোমবার (৩ নভেম্বর) নোবিপ্রবির রেজিষ্টার (ভারপ্রাপ্ত) মো. তামজীদ হোসাইন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের  রিজেন্ট বোর্ডের ৬৭তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  

নোটিশে বলা হয়েছে, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত বিদেশে গমন করেন, যা সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল ) বিধিমালা ২০১৮ এর ধারা ২(চ) অনুযায়ী ‘পলায়ন’ ।

এছাড়া একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়েও রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশ করায় ‘নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ,২০০১’ এর ধারা ৪৭(৫) এর স্পষ্ট লঙ্ঘন। 

নোটিশে আরো বলা হয়েছে, গত ২৮ মে  আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হলে সেটির জবাব যথাযথ হয়নি। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি আপনাকে পুনরায় ৭ জুলাই বিজ্ঞ আইনজীবীর মতামত এবং ৩১ জুলাই প্রেরিত নোটিশের জবাব না দেয়ায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর নোবিপ্রবি রিজেন্ট বোর্ডের ৬৭ তম সভার আলোচ্যসূচি-১৮ এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০১ এর ৪৭(৮) ধারা অনুযায়ী এবং সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল ) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও (গ) অনুযায়ী নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর সহকারী পরিচালক (সামরিক বরখাস্ত) পদ থেকে চূড়ান্ত বা স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো লেনদেন থাকলে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও বিধি অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

নোয়াখালী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে জিয়াউর রহমান ভূঁইয়া আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতির বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে থাকেন এই কর্মকর্তা।

ঢাকা/শফিউল্লাহ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ