সোনালী আঁশ খ্যাত পাটের যেন সুদিন ফিরতে শুরু করেছে। এ বছর নড়াইলের মিঠাপুর হাটে সর্বোচ্চ দামে পাট বেচা-কেনা হচ্ছে। নড়াইলের সর্ববৃহৎ পাটের পাইকারি মোকাম এই মিঠাপুর হাট। 

শনিবার (৩০ আগস্ট) সরেজমিনে বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মান ভেদে প্রতি মণ পাট ৩ হাজার ২০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সামনে দাম আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা।

এবার অতিবর্ষণে নড়াইলে পাটের ফলন ব্যাহত হলে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েন। তবে পাটের আশানুরূপ দামে সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পেরে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

জেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় মোট ২৩ হাজার ৪৯৮ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। যার বিপরীতে ৫৮ হাজার ৫৯০ টন পাট উৎপাদানের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরইমধ্যে ৯৮ শতাংশ পাট কেটে ফেলা হয়েছে।

পাটের ভালো দাম পেয়ে খুশি হয়েছেন কৃষকরা।

মিঠাপুর পাইকারি পাটের হাটে তাই নতুন পাটে ভরপুর। সকাল থেকেই কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পাট হাটে নিয়ে আসতে থাকেন। তাই বেলা বাড়তে না বাড়তেই ক্রেতা-বিক্রেতার ব্যাপক সমাগমে হাট কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিভিন্ন বাহন বোঝাই করা কৃষকদের পাট হাটে উঠতে না উঠতেই ফড়িয়া ব্যাপারীরা ঘিরে ধরছেন। পাটের মান ভেদে দাম বলছেন। দর দামে ঠিক হলে দেখতে দেখতে মণ মণ পাট হাত বদল হয়ে হাটের বড় বড় পাট ব্যবসায়ীর গুদামে উঠে যাচ্ছে। গত বছর একই মানের পাটের দাম ছিল দুই থেকে থেকে আড়াই হাজার টাকা। 

কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, বাজারে ভালো মানের পাটের বরাবরই চাহিদা থাকে। অন্যান্য বছর অনাবৃষ্টির ফলে পানি শূন্য খাল-বিল-ডোবা-নালায় পাট পঁচানো নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হয়। পানি সংকটে বাধ্য হয়ে নোংরা পানিতে পাট পঁচানোয় পাটের আঁশ কালো হয়ে বাজার হারায়। এবার ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে স্বচ্ছ পানিতে পাট পঁচাতে পেরে পাটের মান আশানুরূপ হয়েছে। মান ভালো হওয়ায় ব্যাপক চাহিদার পাশাপাশি বেড়েছে দামও।

ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে জমে উঠেছে হাট।

কৃষক বুলবুল আনিস বলেন, “এ বছর আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূল ছিল না। মে-জুনের তীব্র খরা দাবদহের পর জুলাই মাসে আবিরাম বর্ষণে পাটের ফলন ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে এবং উৎপাদন কম হয়। তবে পাটের দাম বাজারে বেশি হওয়ায় সে ক্ষতি পুষিয়ে যাচ্ছে কৃষকের। এভাবে পাটের বর্তমান বাজার দাম অব্যাহত রাখার দাবি করছেন কৃষকরা।”

নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জসীম উদ্দীন জানান, এবছর জেলায় পাটের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাষ উপযোগী জমিতে পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করাসহ কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পাট চাষিদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত ছিল। পাটের আবাদ বাড়াতে জেলায় মোট চার হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিকে প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে এক কেজি করে বীজ, পাঁচ কেজি করে ডিএপি এবং পাঁচ কেজি করে এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে। তবে কৃষকরা এবছর পাটের দাম ভালো পেয়েছে। এটা খুবই ভালো।

ঢাকা/শরিফুল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ষকর

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনগুলোয় প্রথম আলোর জমজমাট আয়োজন

২৭ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে প্রথম আলোর। ৪ নভেম্বর ২০২৫ সংখ্যাটিতে লেখা থাকবে বর্ষ ২৮, সংখ্যা ১। যা কিছু ভালো, তার সঙ্গে প্রথম আলো—এই স্লোগান নিয়ে ১৯৯৮ সালের ৪ নভেম্বরে বেরিয়েছিল প্রথম আলোর প্রথম সংখ্যা। ঝকঝকে ছাপা, রঙিন ছবি, ১২ পৃষ্ঠার কাগজ, প্রতিদিন নতুন নতুন ফিচার পাতা, দলনিরপেক্ষতার অঙ্গীকার, বস্তুনিষ্ঠতার চর্চা, পেশাদারত্বের উৎকর্ষ আর নতুনকে মেনে নেওয়ার অবিরাম প্রয়াস—সব মিলিয়ে প্রথম আলো হয়ে ওঠে বাংলাদেশের মানুষের এক অপরিহার্য সঙ্গী। হয়ে ওঠে পরিবারেরই একজন। অল্প কয়েক বছরের মধ্যে প্রথম আলো লাভ করে সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিকের সম্মান। নানা রকমের বাধা, প্রতিকূলতা পেরিয়ে সত্যে তথ্যে প্রথম আলো আজ শুধু একটা কাগজ নয়, একটা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মও। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বে প্রথম আলো লাভ করেছে বাংলাভাষী পাঠকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা, তেমনি ওয়ান–ইফরা বা ইনমার মতো আন্তর্জাতিক সংগঠন থেকে এ গণমাধ্যম লাভ করছে সম্মানজনক স্বীকৃতি, বিশ্বসেরা আর এশিয়া সেরার পুরস্কার।

প্রথম আলোর ঢাকা অফিস থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এরই মধ্যে বেজে উঠেছে উৎসবের আনন্দলহরী। জেলায় জেলায় চলছে প্রথম আলোর লেখক–সুধী পাঠক আর শুভানুধ্যায়ীদের সম্মিলনীর প্রস্তুতি। কাগজে, অনলাইনে, ভিডিও, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের জন্য কর্মী আর অংশীজনদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে কর্মচাঞ্চল্য।

প্রথম আলো কাগজটি মোট ৪ দিন প্রকাশিত হবে বর্ধিত কলেবরে। ৪ দিনে থাকবে ৪টি ক্রোড়পত্র। লিখবেন নিজ নিজ ক্ষেত্রে সেরা লেখকেরা। থাকবে দেশবরেণ্য শিল্পীদের আঁকা প্রচ্ছদ।

৪ নভেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার বের হবে ‘বৈষম্য পেরিয়ে’

২০২৪ সালের বিপুল অভ্যুত্থানে ছাত্র–জনতা পথে এসেছিল বৈষম্যের বিলোপ চেয়ে। এই ক্রোড়পত্রে লেখকেরা খুঁজে দেখছেন রাষ্ট্রের ক্ষমতাকাঠামোয়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ও রাজনীতির অঙ্গনে বৈষম্যের রূপ। খোঁজার চেষ্টা করেছেন উত্তরণের উপায়।

৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার প্রকাশ পাবে ‘বৈষম্যের অন্দরে’

সমাজ আর জনগোষ্ঠীর গভীরে থেকে যাওয়া বৈষম্য প্রতিফলিত হয় রাষ্ট্রে। আবার রাষ্ট্রীয় বৈষম্য সামাজিক বৈষম্যকে ভিত্তি দেয়। দেশের নারী–লেখক ও ভাবুকেরা উন্মোচন করে দেখিয়েছেন সমাজে ছড়িয়ে থাকা নানা বৈষম্যের চেহারা।

৬ নভেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার আসছে ‘তারুণ্যের দিগন্ত’

তরুণদের সামনে নতুন পৃথিবীর আহ্বান। কিন্তু সে আহ্বানে সাড়া দেওয়ার পথে শত বাধা ও বৈষম্যের প্রাচীর। আবার তরুণেরাই সেসব বৈষম্যের বাধা উপড়ে ফেলে এগিয়ে চলেন। তরুণদের পথের সেসব বাধা আর বাধা পেরোনোর গল্প নিয়ে এই ক্রোড়পত্র।

৭ নভেম্বর ২০২৫, শুক্রবার প্রকাশিত হবে ‘আলোর গল্প’

সাংবাদিকতা শেষ পর্যন্ত জনমানুষের জন্য। সত্য ও তথ্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য প্রথম আলো সেসব মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ। প্রথম আলোর নানা উদ্যোগের লক্ষ্যও মানুষ। এই ক্রোড়পত্র গত একটি বছরে প্রথম আলোর সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের গল্পের সমাবেশ।

অনলাইনে থাকছে আকর্ষণীয় আয়োজন

লেখা, ছবি, ভিডিও, পডকাস্টসহ নানা কনটেন্ট দিয়ে সাজানো হবে প্রথম আলো ডটকম, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনন্দালোকিত দিনগুলোতে প্রথম আলো ডটকম থাকবে জমজমাট। পাশাপাশি ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, টিকটকসহ সামাজিক মাধ্যমগুলোতে প্রথম আলোর ফলোয়ারদের জন্য থাকবে বাড়তি কিছু, উৎসবের উপহার।

প্রথম আলোর কর্মীরা মিলবেন প্রীতিসম্মিলনীতে

৪ নভেম্বর প্রথম আলো তার সব কর্মীকে নিয়ে আয়োজন করতে যাচ্ছে প্রীতিসম্মিলনী। রাজধানীর একটি বড় মিলনায়তনের একাধিক হলরুমজুড়ে বসবে এই আসর। তাতে সারা দেশের প্রথম আলো প্রতিনিধি, ঢাকার সর্বস্তরের স্টাফদের সঙ্গে যোগ দেবেন প্রথম আলোর আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরাও। থাকবেন অতিথি বক্তা ও শিল্পীরা।

প্রথম আলো বন্ধুসভার একটি করে ভালো কাজ

এরই মধ্যে সারা দেশে প্রথম আলোর শতাধিক বন্ধুসভা ‘একটি করে ভালো কাজ’ শীর্ষক কর্মসূচি পালন করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সুধী সম্মিলনী আয়োজনের জন্য প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বন্ধুসভা কাজ করে চলেছে উৎসাহের সঙ্গে। ঢাকা বন্ধুসভাও ১৩ নভেম্বর আয়োজন করতে যাচ্ছে বন্ধুদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উৎসব।

২০২৩ সালে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্লোগান ছিল ‘হারবে না বাংলাদেশ।’ গত বছর প্রথম আলো বলেছিল ‘জেগেছে বাংলাদেশ’। সত্যে তথ্যে ২৫, সত্যে তথ্যে ২৬ পেরিয়ে এল ২৭ বছর পূর্তির উৎসব।

প্রথম আলো আজকের দিনে, যখন চারদিকে ভুয়া খবরের ছড়াছড়ি, যখন দেশবাসী অনিশ্চয়তার ধোঁয়াশার মধ্যে দিগন্তে তাকিয়ে আছেন আলোকরেখার জন্য, তখন প্রথম আলো ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কী স্লোগান নিয়ে আসছে? জানা যাবে আর কয়েক ঘণ্টা পরই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনগুলোয় প্রথম আলোর জমজমাট আয়োজন